বিপ্লব সাহা খুলনা ব্যুরো:
আজ মহানবমী আজকের এই দিনটি দুর্গোউৎসবের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। শাস্ত্রের বর্ণনা অনুসারে দেবী দুর্গাকে মহা শক্তিরূপে পূজা করা হয়,যিনি দানব নিধনে বিশ্বরক্ষার প্রতীক। সনাতন ধর্মের উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় গ্রন্থ আদি পুরানে উল্লেখ রয়েছে মহা নবমী শব্দটি এসেছে ”মহা” অর্থাৎ মহান, এবং ”নবমী” অর্থাৎ নবম, থেকে। অর্থাৎ নবমীর দিনেই দেবী দুর্গা এবং মহিষাসুরের মধ্য ভয়ংকর যুদ্ধের চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে।
তাই হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মহানবমী বিহিত পূজা। আজ দেবী দুর্গার বিদায়ের সুরে ভারাক্রান্ত হয়ে উঠবে প্রতিটি মণ্ডপের পরিবেশ। দশমীতে কৈলাশে (স্বামীর বাড়ি) ফিরে যাবেন দেবী দুর্গা। দুর্গাপূজার অন্তিম দিন বলা যায় মহানবমীর দিনটিকে। মহানবমীর দিনে দেবী দুর্গাকে প্রাণভরে দেখে নেওয়ার সময়। নবমীর সন্ধ্যায় দেবীদুর্গার ‘মহাআরতি’ করা হয়ে থাকে। এদিন বলিদান ও নবমী হোমের রীতি রয়েছে। আজ ১০৮টি নীলপদ্মের পূজার রীতি রয়েছে দেবীদুর্গাকে নিবেদন কল্পে । পূজা শেষে যথারীতি উপস্থিত ভক্তদের মাঝে অঞ্জলি নিবেদন ও প্রসাদ বিতরণ হয়েছে।
এই পূজা হয় অষ্টমী তিথির শেষ ২৪ মিনিট ও নবমীর সূচনার প্রথম ২৪ মিনিটজুড়ে। মূলত দেবী চামুন্ডার পূজা হয় এই সময়ে। ১০৮টি মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে ও ১০৮টি পদ্মফুল দেবীর চরণে নিবেদন করা হয়। আর ঠিক এই কারণে পূজার মন্ত্রেও সেই বিশেষত্ব উল্লেখ করা হয়েছে।
মহানবরাত্রিতে দেবীদুর্গার আরাধনার অনেক গুরুত্ব রয়েছে। এজন্য নবমী নিশিকে সবাই ধরে রাখতে আকুতি জানায়। বাজতে থাকে একটাই সুর ‘ওরে নবমী-নিশি, না হইও রে অবসান’।
জানা যায়, মহানবমীতে ১০৮টি বেল পাতা, আম কাঠ, ঘি দিয়ে এই যজ্ঞ অনুষ্ঠিত হবে। এদিন প্রার্থনার সময় ভক্তকুল অশ্রুসিক্ত হয়ে দেবী দুর্গার কাছে কান্না করতে থাকেন।
আগামীকাল বিজয়া দশমীতে সকালে দর্পণ বিসর্জন ও সন্ধ্যায় প্রতিমার ললাটে সিঁদুর দানের মাধ্যমে সিঁদুর খেলায় মেতে উঠবে রমণীগণ অবশেষে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবীদুর্গাকে বিদায় জানাবেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) বিজয়া দশমী। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটবে ৫ দিনের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। দশমীতে কোনো পর্ব না থাকলেও সকালে তর্পণে দুর্গার মহাস্নান হবে, ষোড়শ উপচারে পূজা করা হবে।
খুলনা পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্যমতে, এ বছর সারাদেশে ৩৩ হাজার ৩৫৫টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা হয়েছে। এর মধ্যে খুলনাতেই ৯৮২টি পূজা মণ্ডপে শান্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ।
বিজয়া দশমীতে সকালে দর্পণ বিসর্জনের পর থেকে দেশব্যাপী প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু হবে। প্রত্যেকে নিজ নিজ জেলায় দেবী বিসর্জন করবেন। এছাড়া খুলনা নগরীর অধিকাংশ মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন হবে জেলখানা ঘাট অর্থাৎ ভৈরব নদীতে।