মোঃ আশরাফুল ইসলাম ,মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি.
মানিকগঞ্জে টাকা নিয়ে আসামি ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক উপপরিদর্শক (এসআই)সহ ১০ সদস্যকে আটকে রাখেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের তারাবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মানিকগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের এসআই রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল ওই গ্রামের কয়েকজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানের সময় আসামিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযানে অংশ নেওয়া সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে এবং থানায় খবর দেয়।
স্থানীয় ফজলুল হক বলেন, “বাজার থেকে এসে শুনি পুলিশ জুলহাস ও মজিদকে ধরেছে। কিছুক্ষণ পরই শুনি টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
অভিযুক্তদের মধ্যে এক গৃহবধূ আওলাদ হোসেনের স্ত্রী জানান, “আমার ছেলেকে মারধর করতে থাকে। আমি বাধা দিলে তারা আমাকে টাকা আনতে বলে। পরে আমি ৫ হাজার টাকা দিই।”
বিথী আক্তার নামের আরেক নারী অভিযোগ করেন, “তল্লাশির সময় ঘরে রাখা ৫০ হাজার টাকা ও আমার শাশুড়ির কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে তারা।”
অভিযান পরিচালনাকারী এসআই রফিকুল ইসলাম অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “গোপন তথ্যের ভিত্তিতে একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে একজনকে আটক করি। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও দুইটি বাড়ি তল্লাশি করি। কিছু না পেয়ে চলে আসি। কিন্তু গ্রামবাসী ভুল বুঝে আমাদের আটকে রাখে।”
এ বিষয়ে সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। বিষয়টি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।”
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মানিকগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আহসানুল কবির বুলবুল বলেন, “ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত আছি। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অভিযানে অংশ নেওয়া কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের এমন অভিযোগে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি এখন তদন্তাধীন, তবে স্থানীয়দের দাবি—ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।