মোঃ আশরাফুল ইসলাম ,মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি.
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক এস.এম. রাজু হোসেন এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সানজিদা আক্তার-কে জড়িয়ে “অনৈতিক সম্পর্ক” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা দুজন।
তারা জানান, সংবাদে উল্লেখিত বিষয়গুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্যই একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে এই বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করছে।
সানজিদা বলেন, আমার প্রথম স্বামী (শামীম হোসেন)১২ বছর যাবত ড্রাগ এডিক্টেড ছিল। সে টাকা পয়সার জন্য আমাকে প্রতিনিয়ত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। সে ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি করতো। কিন্তু কোন কোম্পানিতে ২-১ বছরের বেশি চাকরি করতে পারতনা। কোম্পানির টাকা পয়সা সব তার নেশার পেছনে খরচ করত। যখন কোম্পানি টাকা পয়সার জন্য চাপ দিত তখন সে আমাকে দিয়ে বিভিন্ন এনজিও এবং ব্যাংক থেকে লোন তুলে সেগুলো দিয়ে তার কোম্পানির টাকা পরিশোধ করত। যখন কোনো চাকরি ঠিক মতো করতে পারছিলো না, তখন আমি আমার নানার ওষুধের দোকানে তাকে বসাই এবং পাঁচ লক্ষ টাকার ওষুধ তুলে দেই। কিন্তু মাত্র ১০ মাসের মধ্যে দোকানের সম্পুর্ন মুলধন গায়েব। তারপর সে আবার চাকরিতে যোগ দেয়। এখন সে যে কোম্পানিতে চাকরিরত আছে এ কোম্পানিতেও আমি ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছি। তারপরও দুই এক মাসের ব্যবধানে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা ঋন হয়ে যায়। এসব নিয়ে অশান্তি করে আমি তাকে ডিভোর্স দেই। তার কোম্পানি বেতন বন্ধ করে দিলে আমাকে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। আমি বলি আমার সাথে তোমার ডিভোর্স হয়েসে। আমি কেন তোমাকে টাকা দেবো? তখন সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে বলেন, আমার ভাই ( আফজাল হোসেন) তোমার চাকরি খাওয়ার ব্যবস্থা করছে। বাঁচতে চাইলে আমাকে টাকা দাও। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে সে বলে আমি তোকে সারা দেশে ভাইরাল করে দেব। যার কারনে তুই সুইসাইড করতে বাধ্য হবি। এ কারনে আমার প্রাক্তন স্বামী ও তার ভাই মিলে আমার স্বামী রাজুর রাজনৈতিক সামাজিক ও ব্যক্তিগত সুনাম নষ্ট করতে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য সরবরাহ করে। যা পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়।
সানজিদা আরো বলেন, আমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করি। প্রথম স্বামীকে তালাক দেওয়ার পর স্বেচ্ছায় সজ্ঞানে ইসলামী শরীয়া মোতাবেক শিবালয় উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক এসএম রাজু হোসেনকে বিয়ে করে সংসার করছি। নিয়মিত স্কুল করছি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ‘বিবাহিত স্কুল শিক্ষিকার সাথে শ্রমিক দল নেতার অনৈতিক কান্ড’ শীর্ষক” সংবাদ প্রচারিত হয়। যা সংবাদটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়া ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
নিজের বক্তব্যের প্রমাণ হিসেবে তিনি তালাকনামার কপি, নিকাহনামা এবং থানায় করা সাধারণ ডায়েরির (জিডি) কপি প্রদর্শন করেছেন।
অন্যদিকে, শ্রমিকদল নেতা এস.এম. রাজু হোসেন বলেন,“আমি শরিয়া ও রাষ্ট্রীয় আইনের বিধান মেনে সানজিদাকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেছি। আমার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত ইমেজ নষ্ট করার জন্য প্রতিপক্ষ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।”
রাজু হোসেন আরও বলেন, “আমার প্রথম পরিবারের ভরণপোষণ, সন্তানদের দায়িত্ব এবং সামাজিক মর্যাদা সবকিছু ঠিকভাবে বজায় রাখছি। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও অসত্য তথ্য প্রচার করে রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেয় করার চেষ্টা চলছে।”
রাজু হোসেন ও সানজিদা আক্তার সংবাদমাধ্যম ও সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, “যে কেউ আমাদের বিষয়ে সত্য জানতে চাইলে সরাসরি এসে তথ্য-প্রমাণ দেখতে পারেন। আমরা আইন ও নীতির বাইরে কোনো কাজ করিনি।”
তারা মিথ্যা সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকে সত্যতা যাচাই করে সংশোধনী প্রকাশের অনুরোধও জানিয়েছেন।