বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
খুনের নগরীতে পরিণত হয়েছে খুলনা।
নগর জুড়ে একের পর এক হচ্ছে হত্যাকাণ্ড দীর্ঘ হচ্ছে লাশের মিছিল মাদকের সম্পৃক্ততা, সম্পত্তির লালসা ক্ষমতার প্রতিশোধ সবকিছু মিলে চলছে খুনের রাম রাজত্ব। অপরদিকে প্রশাসনের ভূমিকা একেবারেই নিশ্চুপ পুলিশের গাফিলতি আর অবহেলায় ঝরে যাচ্ছে অসংখ্য প্রাণ ৪ মাসের ব্যবধানে ১৪ খুনের রহস্য এখনো উদঘাটন করতে পারেনি প্রশাসন তারই রেশ কাটতে না কাটতে
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের খুলনা সফরের মাত্র ২৪ ঘণ্টার মাথায় দুই স্থানে সংঘটিত হয়েছে চারটি নৃশংস খুন। রহস্যজনকভাবে নানি ও দুই নাতিসহ মোট তিনজনকে লবণচরায় এবং পৃথক ঘটনায় করিমনগরে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে এক যুবককে।
পরপর দুটি হত্যাকাণ্ডে পুরো নগরীতে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।
লবণচরায় নানি-নাতি হত্যার ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায় ঘর রবিবার (১৬ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে লবণচরা থানাধীন মুক্তা কমিশনার কালভাটের দরবেশ গলি এলাকায় একটি ঘর থেকে পুলিশ উদ্ধার করে তিনজনের মরদেহ। নিহতরা—সাহিদুন্নেছা (৫৫), নাতি মোস্তাকিম (৯) ও নাতনি ফাতিহা আহম্মেদ (৮)। শিশু দুটির বাবা-মা চাকরির সুবাদে সকালে তাদের নানির কাছে রেখে কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে বের হন। সন্ধ্যায় ফিরে দরজা বন্ধ দেখে প্রতিবেশীদের সহায়তায় দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। ঘরের মধ্যে পাওয়া যায় নানির মরদেহ, আর পাশে মুরগির ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় দুই শিশুর নিথর দেহ।
লবণচরা থানার ওসি সানওয়ার হুসাইন মাসুম জানান, তিনজনের শরীরে আঘাতের স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে এবং মরদেহ শক্ত হয়ে গেছে, যা প্রায় তিন থেকে চার ঘন্টা পূর্বে হত্যার ইঙ্গিত দেয়। কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা তদন্তের আগে বলা যাচ্ছে না।
অপরদিকে একই দিনে মাত্র এক ঘণ্টা আগে, সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর করিমনগর এলাকায় দুর্বৃত্তরা গলা কেটে ও গুলি করে হত্যা করে আলাউদ্দিন মৃধা (৩৫)-কে। স্ত্রীসহ ঘরের বারান্দায় বসে থাকা অবস্থায় ৬–৭ জন হামলাকারী বাড়িতে ঢুকে প্রথমে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে—দুটি গুলি লাগে বুকে ও পেটে। পরে ধারালো ছুরি দিয়ে তার গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে খু্নিরা এলাকা ত্যাগ করে। সোনাডাঙ্গা থানার এসআই সুমন হাওলাদার জানান, নিহত আলাউদ্দিন মাদক কারবারে জড়িত ছিলেন এবং সম্প্রতি কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
খুলনা নগরের সর্বমহলের জনগণের অভিযোগ আইজিপি বাহারুল আলম খুলনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনার ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই চার খুন-এ ঘটনা নিয়ে জনমনে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। পুলিশের দাবি, দুটি ঘটনাই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে, তবে টানা হত্যাকাণ্ডে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সর্বত্র। খুনের ঘটনাস্থল দুটি থেকে আলাদা আলাদা আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশ ও সিআইডি। সিআইডির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এই সব ফোনের রহস্যর পেছনে কে বা কারা সম্পৃক্ত রয়েছে সে ব্যাপারে আমরা তৎপরতা চালিয়ে রহস্য উদঘাটন করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে অনুযায়ী খুনী সে যেইহোক আইনের হাত থেকে রক্ষা পাবে না।

