আব্দুল খালেক
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি,
রৌমারী উপজেলায় দুযোর্গ-ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কারের (কাবিখা/কাবিটা) চাল ও অর্থ বরাদ্দের কাজে নয়ছয়। উৎকোচ না দিলে বিল প্রদানে ব্যাপক অনিয়ম দুনর্ীতি অভিযোগ উঠেছে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেশকাতুর রহমানের বিরুদ্ধে। এনিয়ে প্রকল্প সভাপতিগণ সাংবাদিকদের এসব বিষয়ে অভিযোগে জানিয়েছেন। অন্যদিকে সাংবাদিকরা প্রকল্পের বিষয় তথ্য অধিকার আইনে তালিকাসহ বিভিন্ন তথ্য চাইলে। তিনি তথ্য না দিয়ে, সাংবাদিকদেরকে বিভিন্ন টালবাহানায় ঘুরাতে থাকেন। অপরদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খানের নিকট প্রকল্পের তালিকা চাইলে তিনিও দেই দিচ্ছি বলে পাশ কাটিয়ে যান।
বিভিন্ন সুত্রে খোজ নিয়ে জানা গেছে রৌমারী উপজেলায় সাধারণ ও বিশেষ বরাদ্দ টিআর, কাবিখা/কাবিটা ১ম, ২য় ও তৃতীয় পর্যায়ের শতশত রাস্তা, মসজিদ, মাদ্রাসা, মক্তব নারী উন্নয়ন ঘর নির্মানসহ নামে বেনামে নানাধরনের প্রকল্প তৈরী করে বরাদ্দকৃত রাস্তার কাজগুলি কর্মসৃজন কর্মসূচী প্রকল্পের (ইজিপিপি) শ্রমীক দিয়ে নয়ছয় কাজ করে এবং অনেক কাজ না করেও কাগজ কলমে শতভাগ দেখিয়ে প্রকল্প সভাপতির কাছে কৌশলে ৩০% উৎকোচ নিয়ে বিল প্রদান করা হয় বলে প্রকল্প সভাপতিদের বরাত দিয়ে এসব গোপন তথ্য জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক কয়েকজন প্রকল্প সভাপতির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে উৎকোচ না দিলে বিল পাশ হবে না।এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পশ্চিম ইজলামারী রাজ্জাকের বাড়ি হতে দক্ষিণ দিকে হাশেমের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুনঃনির্মান ৬.০০ মেট্রিক টন, কোমরভাঙ্গী আছর উদ্দিনের বাড়ির দক্ষিণ পার্শ্বে রাস্তা পুনঃনির্মান ৪.১৪৩৩ মেঃটঃ,উত্তর বাইটকামারী শহর আলীর বাড়ি হতে কছেরের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুনঃনির্মান ৪.২০০ মেঃটঃ, মির্জাপাড়া ফজলুর বাড়ির সামন হতে উত্তর দিকে হনুফার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুনঃনির্মান ৬.০০০ মেঃটঃ, ধনারচর পাকা রাস্তার মাথা হইতে লালকুড়া সঃপ্রাঃ বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তা পুনঃনির্মান ৪.১৪৩৩, উত্তর বাইটকামারী হাফিজিয়া ও নুরানী মাদ্রাসার ওয়াল নির্মান ৪.২০০ মেঃটঃ, টাপুরচর চান্দুল্লাহর বাড়ি হতে দক্ষিন দিকে বাছের আলীর বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুনঃনির্মান ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, কোমরভাঙ্গি নয়াপাড়া নাজিমের বাড়ি হতে পশ্চিম দিকে বেরী বাধ পর্যন্ত রাস্তা পুনঃনির্মান ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, কোমরভাঙ্গী টাংরাপাড়া হাবিবুর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি হতে উত্তরদিকে আমিরের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুনঃনির্মান ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, চরশৌলমারী রাস্তায় সোলার স্ট্রীট লাইট স্থাপন ৫ লাখ টাকা, দাতভাঙ্গা বাজারে এতিমখানা ঘর নির্মান ৫ লাখ টাকা, দাঁতভাঙ্গা কাচারির মাঠে মাটি ভরাট ৫ লাখ টাকা কাজে নয়ছয় দেখিয়ে বিল প্রদান। এছাড়া পিআইওর আলমারীতে কুক্ষিগত করে রাখা নাম না জানা অসংখ্য প্রকল্পের উন্নয়ন ও হিসাব যেন লাল ফিতায় বন্দি। এবিষয়ে চরকাজাইকাটা প্রকল্প ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মগলসহ নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক অনেক প্রকল্প সভাপতি বলেন, উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তার, অর্থ নেয়ার যে চাপ, কাজ করার আগে, বিল উত্তোলন করে তাকেই সব দিতে হয়। আর তাকে অর্থ না দিলে বিল নিতে মাসের পর মাস ঘুরেও পাওয়া যায় না। এখনো অনেকের বিল তুলতে পারেনি। উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান তারা, সহসভাপতি মাজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুল ইসলাম, সহসভাপতি শাহ্ আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কাছে অনেকদিন থেকে ঘোরাঘুরি করছি প্রকল্পের তালিকার জন্য। ফরম ’ক’ তথ্য প্রাপ্তির আবেদনপত্র দেয়া হয়েছে। তারপরেও তালিকা না দিয়ে অনিয়ম দুনর্ীতি ঢাকতে বিভিন্ন টালবাহানা করে যাচ্ছে। অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকটও প্রকল্পের তালিকা চেয়েও পাওয়া যাচ্ছে না।
দাঁতভাঙ্গা কাচারি মাঠে মাটি ভরাট বিষয়ে এলাকার মানুষের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, মাত্র ৪৯ কাকড়া গাড়ি মাটি ফেলেছে। প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য হাফেজ মোঃ শাহজাহান আলী বলেন, ভাই বোঝেনতো আমাকে ব্যবহার করে টাকা উত্তোলন করেন প্রকল্প সেক্রেটারি। রৌমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যন আব্দুর রাজ্জাককে সভাপতি করে মির্জাপাড়া ফজলুর বাড়ি হতে হুনুফার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত ৬ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এবিষয়ে চেয়ারম্যান আব্দুর বাজ্জাক অস্বীকার করেন। যার প্রকল্প নং ৪ কাবিখা। রৌমারী উপজেলায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ণে ব্যাপক অনিয়মের বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিশকাতুর রহমান এর নিটক জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরেজমিন তথ্য সঠিক হয়ে নিউজ দেন সমস্যা নেই।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খানকেও বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অনিয়ম দূর্নীতি কথা ও প্রকল্পের তালিকা গুলি চাওয়া হলে তিনিও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে যাচ্ছে।