পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ে মানহানি করতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে আনিসুর রহমান প্রধান (৫৫) নামে এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে। এনিয়ে অভিযোগকারীর মানহানি হওয়ায় জড়িতের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছেন বিবৃতি প্রদানকারী রাজিউল ইসলাম প্রধান। একই সাথে তথ্যগুলো উদ্দেশ্যমূলক এবং স্বার্থ চরিতার্থের জন্য প্রচার করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। অভিযুক্ত আনিসুর রহমান প্রধান সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের মৃত খামির উদ্দীন প্রধানের ছেলে। তিনি পঞ্চগড় পৌরসভার ইসলামবাগ এলাকায় বর্তমানে বসবাস করছেন।
এক বিবৃতিতে রাজিউল করিম প্রধান আরো জানান, গত ২০ জানুয়ারী হাইকোর্টের একটি মামলা রায়কে ভিত্তি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেম ফেসবুকে কিছু তথ্য ছড়ান আমার বৈমাত্রিক ছোট ভাই আনিসুর রহমান প্রধান। উল্লেখিত বিবরণে আমাকে ভূমিদস্যু, অর্থলোভী ও সন্ত্রাসী হিসেবে হেয় করা হয়। অথচ মামলা রায়ের সাথে এমন কোন কারণ খুঁজে পাননি তিনি। যেহেতু মামলায় মূল বাদী আমার ছোট মা মোছা. আলতাফুন নেছা পারিবারিক সম্পর্ক অক্ষুন্ন রাখতে মামলার ব্যাপারে মিমাংসার সম্পূর্ণ কথাবার্তা ঠিক করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা তেমন কোন তদবির করেননি রাজিউল। উচ্চ আদালতে মামলার রায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় বিচারের জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেন রাজিউল। আদালতে রায়ের স্থগিত আদেশ কামনা করেন তিনি। পরে আদালত স্থগিত আদেশ প্রদান করেন। মামলাটি মূলত জমি সংক্রান্ত ও পারিবারিক। চাকলাহাট ইউনিয়নের বগুলাডাঙ্গীর মৌজার ৪৬৮নং খতিয়ানভুক্ত ১৩টি দাগে বিনিময় সূত্রে মোট ২০ একর ৫০ শতক জমির মালিক রাজিউল ইসলাম ও আনিসুর রহমান প্রধানের পিতা মরহুম পিতা খামির উদ্দীন প্রধান। তাঁর জীবদ্দশায় বর্তমান হতে ৫০ বছর পূর্বে তিনি আমাকে জমি দখল ছেড়ে দেন একটি আনরেজিস্ট্রার হেবাবিল এওয়াজের মাধ্যমে। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালে তিনি যাওয়ার সময় একটি হেবাবিল এওয়াজ দলিল রেজিস্ট্রি করে দেন। গত ২০০৯ সালে ছোট মা তার বড় ছেলে আনিছুর রহমান প্রধানের মাধ্যমে পঞ্চগড় জজ কোর্টে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। যাতে বিষয় ছিল জমি তাদের দখলে ছিল কিন্তু আমি জমি হতে ছোট মাকে ভাড়াটিয়া লোকজন দিয়ে উৎচ্ছেদ করি। যাহা সম্পূর্ণ বানোয়াট, মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন বটে। কারণ আমার বাবা জীবিত অবস্থায় ৩৫ বছর যাবৎ ওই জমি আমি ভোগদখল করে আসছি। যেখানে আমার বাড়ি, ঘর ও স্থানীয় হোল্ডিং নাম্বার সবকিছু বিদ্যমান। অথচ আমার ছোট মা আমার বাড়িটিকে তার ঠিকানা হিসাবে পরিচিত করেছে যা মিথ্যা। তার পরিচয় আমার বাবার বাড়ি বীরপাড়া গ্রামে। অথচ আমার গ্রাম বৈরাগী পাড়া হিসেবে পরিচিত। আমি কোনোদিন জানতেও পারিনি যে, তাদের নামে ওই সব জমির কোন দলিল আছে। থাকলেও আমাকে জানায়নি বা ৩৫ বছর ধরে কোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ৩৫ বছর পর মামলা করলে ওই মামলাকে আদালত তামাদি ঘোষণা না করে যোগসাজশে তার পক্ষে রায় প্রদান করেন। যার প্রেক্ষিতে আমি রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করি। অথচ আদালত ন্যায় বিচার না করে নি¤œ আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে রায় প্রদান করেন। বর্তমানে আমি সুপ্রিম কোর্টে ন্যায় বিচারের জন্য আপিল মামলা দায়ের করে হাইকোর্টের রায়ের স্থগিত আদেশের অনুমতি পাই। বিরোধীয় জমি বর্তমানে সরকারের ৮নং রেজিষ্ট্রার ভূক্ত রয়েছে এবং গত ৫০ বছর যাবত আমার দখলে রয়েছে। আমার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি ১৯৬৯ সালে আমার পিতা আনরেজিস্ট্রার হেবাবিল এওয়াজ যার মাধ্যমে খারিজ খতিয়ান আমাদের দুই ভাইয়ের নামে দুইটি ছিল। যা দীর্ঘ ৩৫ বছর যাবৎ খাজনা পরিশোধ করেছি। আমার পিতা মারা যাওয়ার সময় একটি হেবাবিল এওয়াজ দলিল আমাদের দুই ভায়ের নামে রেজিস্ট্রিকৃত আছে। ১৯৭২ সালে সরকারি ভূমি সংরক্ষণ আইনে আমার নামে একটি রিটার্ন জমা দেওয়া আছে। অথচ প্রতিপক্ষ দলিল থাকা সত্ত্বেও জমির কোনো রিটার্ন দাখিল করেনি। বর্তমানে ৫০ বছর যাবৎ জমি ভোগদখল করে আসছি। অথচ প্রতিপক্ষের শুধুমাত্র কাগজে দলিল ছাড়া আর কোনো শর্তই নেই। আনিস প্রধান আমার বিরুদ্ধে যে তথ্য প্রকাশ করেছে তা উদ্দেশ্যমূলক এবং স্বার্থ চরিতার্থই বটে। আমি এর বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করছি।