মাসুদ রানা বাশার, আমতলী প্রতিনিধি
বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার ২ লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র—উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ট্রমা সেন্টার আজ চরম অব্যবস্থাপনার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেখানে ২৬ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে, সেখানে বাস্তবে দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র ৩ জন ডাক্তার। চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে।
রোগীরা অভিযোগ করেন, হাসপাতালে আসার পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। কেউ কেউ চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। আর গুরুতর রোগীরা বাধ্য হয়ে প্রাইভেট ক্লিনিক বা বরিশালের দিকে রওনা হচ্ছেন।
চিকিৎসক সংকটের পাশাপাশি হাসপাতালের একমাত্র এক্স-রে মেশিনটিও দীর্ঘদিন ধরে অচল। , ফলে মেশিনটি নষ্ট হয়ে পড়ে থাকলেও তা মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেই।
এর চেয়েও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, হাসপাতালে কোনো প্যাথলজিক্যাল টেকনোলজিস্ট নেই, ফলে সাধারণ রক্ত, মূত্র বা অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্যও রোগীদের বেসরকারি ল্যাবে ছুটতে হয়। এতে খরচ যেমন বাড়ছে, তেমনি সময় নষ্ট হচ্ছে, যার ফলে রোগ নির্ণয়ে দেরি হচ্ছে।
এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার বলেন, “আমরা বারবার চিঠির মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়গুলো জানিয়েছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমরা সীমিত সম্পদ ও জনবল দিয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি, কিন্তু বাস্তবতা খুবই কঠিন।”
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, “এত বড় জনসংখ্যার একটি উপজেলার প্রধান হাসপাতাল যদি এভাবে ধুঁকে ধুঁকে চলে, তবে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?”
এলাকাবাসীর জোর দাবি—শিগগিরই পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক, এক্স-রে ও প্যাথলজিক্যাল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দিতে হবে এবং যন্ত্রপাতিগুলো মেরামত করে পূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে এই প্রতিষ্ঠানে আসা মানে রোগী না সারিয়ে ফেরত পাঠানো—এই চিত্রই ভবিষ্যতের নিয়মে পরিণত হবে।