বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
এবার খুলনা জেলায় ১৪৫৬ টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলা উপজেলা থানা মহানগর পূজা উদযাপন কমিটি। তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন আদলে মন্দির। এবং প্রতিটি মন্দিরে মৃৎশিল্পীরা ব্যস্ত সময় পার করছে প্রতিমা তৈরীর কাজে। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই শরতের শিশির শিক্ত প্রাতে ধরণী তলে মেঘ বিজড়িত আকাশে শিউলি ঝরা মায়াময় অনাবিল প্রভাতে প্রথম আলোয় করুণাময়ী মা আলোকবর্তিকা হাতে জগত জননী দেবী দুর্গার আরাধনার প্রথম পর্ব মহালয়ার মাধ্যমে মায়ের আগমনী বার্তায় মর্তলোকের প্রতিটি সনাতনীদের ঘরে ঘরে দেবী দুর্গার আরাধনায় ব্রত হয়ে বরণ ডালা সজ্জিত রেখে অপেক্ষার প্রহর গুনছে। সাথে প্রাচীন আমলের প্রথা অনুযায়ী মাঙ্গলিক বিষয় বিবেচনায় পরিবারের সকল সদস্যদের জন্য নতুন জামা কাপড় শাড়ি চুরি মেয়েদের সাজসজ্জা কেনার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছে পাশাপাশি ধনী-গরীব নির্বিশেষে দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে হরেক রকমের বাহারি খাবার প্রস্তুুত করবে অতিথি আপ্যায়নে শরতের দুর্গাপূজোর বিজয়া পর্বটাকে অতি গুরুত্ব দিয়ে থাকে সনাতনীরা।সাথে পাঁচ দিনের শারদীয় উৎসবের প্রথম পর্ব শুরু মহাষষ্ঠী পর্যায়ক্রমে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও মহা দশমীতে দর্পণ ও প্রতিমা বিসর্জনে মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে প্রতীক্ষার এক বছরের দেবী দুর্গার মর্ত্য লোকে পদার্পণের মহোৎসব। ত্রিতাপময় মর্তের সন্তানদের অশ্রু জলে ভাসিয়ে বিদায় নিয়ে দেবীকে যেতে হয় কৈলাসের শিবালয়।
তবে এবছর সনাতনী সম্প্রদায়ের সকল মানুষদের কাছে শারদীয় দূর্গা উৎসব খানিকটা বেদনা বিধ্বস্ত অপূরক মানুযিকতার মাঝেও যেন কালো মেঘের ফাকে সূর্য উঁকি দেওয়ার ন্যায় শুভ্রতার আশ্বস্ত নিয়ে পালন করতে যাচ্ছে শারদীয় দুর্গোৎসব।
কারণ গেল পাঁচ আগস্ট হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর সদ্য ঘটে যাওয়া সংখ্যালঘুদের ওপর নানাভাবে জুলুম অত্যাচার মন্দির ভাঙচুর সম্পত্তি দখল ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে হামলা সহ বিভিন্ন ভাবে দেশের এক শ্রেণি উশৃংখল পন্থী দ্বারা নির্যাতন-নিপীড়নের কারণে সনাতনী সম্প্রদায়ের মানুষদের ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত হানার কারণে এবার হিন্দুধর্ম সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে ঠিক সেই মুহূর্তে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব-রত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ মন্ডলী সনাতন সম্প্রদায়ের যাজকদের সাথে জাতীয় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা ও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তার লক্ষ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে থাকা বিভিন্ন জেলার ছাত্ররা অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে মন্দির পাহারা দিয়ে রক্ষা করেছে সনাতনী সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয় এবং এ দেশের ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষ সকল জাতির সম অধিকার এই আশ্বাস ব্যক্ত করে সকল ধর্মের মানুষরা তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান নিরাপত্তার সাথে পালন করবে সাথে থাকবে সরকারের সকল ধরনের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রশাসন বাহিনীর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কমিটি সহ দেশের রাজনৈতিক সংগঠনের দায়িত্ব রত কর্মীরা পালন করবে ভলেন্টিয়ারের কাজ। এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা সনাতনীদের আশ্বাস দিয়ে বলেছেন আপনারা যথারীতি ভাবে আপনাদের ধর্মীয় রীতি প্রথা অনুযায়ী সকল ধরনের পূজা অর্চনা এবং আগত শারদীয় দুর্গোৎসব মহা ধুমধাম ও জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপন করতে মোটেও কার্পণ্যতা করবেন না কারণ ধর্ম যার যার দেশ সবার এটা মাথায় রেখে দেশকে ভালোবেসে দেশের ভাবমূর্তি বহির্বিশ্বের কাছে অক্ষুন্ন রাখতে আপনাদের ধর্মীয় উৎসব আপনাদের কাজ আপনারা সম অধিকারে পালন করবেন। সেক্ষেত্রে সকল ধরনের সহযোগিতায় আমরা পাশে থাকব। এবং বিগত আমলের যে কোনো সরকারের তুলনায় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পক্ষ আপনাদের পাশে থেকে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত থেকে শুরু করে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করা হবে। এবং প্রত্যেকটা পূজা মণ্ডপে দর্শনার্থীরা সকাল বিকাল গভীর রাতে নির্দ্বিধায় স্বাচ্ছন্দে এবং অবাধে প্রতিমা দর্শন করতে পারে সে ব্যাপারে আমরা প্রশাসনিক সকল মহলকে সজাগ দৃষ্টি রেখে নিছিদ্র নিরাপত্তার বলয় সৃষ্টি করে দেশের সকল ধর্মের মানুষের সাথে সম্প্রীতির বন্ধনে এই শারদীয়া দূর্গা উৎসবের মাধ্যমে এক নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠুক এই প্রত্যাশা আমরা ব্যক্ত করে তিনি আরো বলেন যারা আপনাদের ক্ষতি করেছে এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে তারা এদেশেরই মানুষ তাদের আপনারাও চিনেন আমরাও চিনি।
সময় সাপেক্ষে সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হবে কেউ পার পেয়ে যেতে পারবে না। একই সাথে তিনি আরো বলেন শারদীয় দূর্গা উৎসব এর এক সপ্তাহ আগের থেকে যেকোনো ধরনের নাশকতাকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে দেশব্যাপী সকল পূজা মন্ডপে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাদা পোশাকে ছদ্মবেশে পাহারা দিবে। সাথে থাকবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্র সমন্বয়করা।
পাশাপাশি প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসককে পরিপূর্ণ দায়িত্বভার ন্যস্ত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক স্থানীয় প্রশাসন পুলিশ কমিশনার বিভাগীয় কমিশনারের র্যাব বিজিবি সেনাবাহিনী সকলের সমন্বয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে।