মোঃ আতিকুর রহমান আজাদ মাদারীপুর প্রতিনিধি
মাদারীপুরের কালকিনিতে স্নানঘাটা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান ও ওয়াজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আজ সোমবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। ঐতিহ্যবাহী স্মানঘাটা ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা টি ১৯২৬ সালে আল্লামা ফয়েজ উদ্দিন রহঃ প্রতিষ্ঠা করেন। এই মাদ্রাসাটি বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলে পুরাতন মাদ্রাসার মধ্যে একটি, গত ১০০ বছরে এই মাদ্রাসায় দেশ বরেণ্য অনেক দ্বীনদার আলেম পড়াশুনা করেছেন এবং দেশ বরেণ্য অনেক দ্বীনদার আলেম বেরিয়েছেন। মাদ্রাসার একশত বছর পূর্ণ হওয়ায়, বিগত বছরের চেয়ে এবছর আরো বেশি জাকজমক পূর্ণ অনুষ্ঠান করার লক্ষে মাদ্রাসার গভর্নিং বডি, মাদ্রাসার শিক্ষাক মন্ডলি, প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তি বর্গ সহ মুঠোফোনে সাদ্রাসার সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান রুপম ও অ্যালামনাই কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমানের সাথে আলোচনার মাধ্যমে ২৫ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার-শতবর্ষ-পূর্তি অনুষ্ঠান এবং ২৬ডিসেম্বর শুক্রবার শতবর্ষ উপলক্ষে বাৎসরিক মাহফিলের আয়োজ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। অনুষ্ঠান বাস্তবায়নের লক্ষে ম্যাগাজিন প্রকাশ, ক্রেষ্ট, উত্তরীও, ওয়াজ মাহফিল ও অনুষ্ঠানের জন্য ষ্টেজ তৈরী ও ইসলামি সংগিত করার জন্য শিল্পি ও ওয়াজ মাহফিলের জন্য হুজুরকে বায়না প্রদান করা হয়। এ ছাড়া সকলের জন্য খাবারের ব্যাবস্থা করা হয়। এই দুই দিনের অনুষ্ঠান নিয়ে এলাকা বাসির মধ্যে ব্যাপক আনন্দ উদ্দিপনা দেখা যায়। ২৫ তারিখ রাত পোহালে সকালে অনুষ্ঠান। কিন্তু স্থানীয় শিক্ষক আলী আজগর তালুকদার, শিক্ষক আনোয়ার হোসেন, শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ ইউনুচ ঢালী, মাষ্টার আবু বকর, আবুল কালাম আজাদ সহ স্থানীয় অনেকের নাম দিয়ে অনুষ্ঠান বন্ধের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এ কারনে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় উক্ত অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করে প্রশাসন। অনুষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয়দের অর্থনৈতিক ক্ষতি ও সম্মানের হানি হয়েছে বলে মনে করেন আয়োজকরা। এ ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছ । স্থানীয় অনেকে বলেন, অভিযোগ পত্রে অনেকের নাম লেখা হলেও তাদের কোন স্বাক্ষর নাই এটা আবার কেমন অভিযোগ। স্মানঘাটা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন জানান, আমি আবেদনের ব্যাপারে কিছুই জানিনা, এলাকার সুনামধন্য প্রতীষ্ঠানের বিরুদ্ধে এটি একটি স্বরযন্ত্র আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। এ ব্যাপারে স্মানঘাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, এই আবেদন সংক্রান্তে আমি কিছুই জানিনা। অভিযোগকারী সুবচনী স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক আলী আজগর তালুকদার জানান, এ অনুষ্ঠান হলে এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কা ছিল তাই অমি অভিযোগ করেছি। প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মাওলানা এস এম শাহ আলম বলেন, প্রশাসনের নির্দেশনায় শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। এবং মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় শত’তম বার্ষিক ওয়াজ মাহফিলও হয়নি।
অ্যালামনাই কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান তালুকদার বলেন, আমার সাথে পদ নিয়ে কোন সমস্যা হয়নি, যে সময়ে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করেছেন সে সময়ে মাদ্রাসার প্রাক্তন অনেক শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন করতে পারবেন না। আমাদের দাবি ছিল আরো পরে অনুষ্ঠান করার আমাদের কথা না শুনে অনুষ্ঠান করার চেষ্ঠা করলে বিশৃঙ্খলা হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। মাদরাসার সহ-সভাপতি ইন্জিঃ নুরুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটিতে মজিবুর রহমান তালুকদারকে রাখা হয়নি বলে তিনি বিভিন্ন অজুহাতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কা লিখে মাদ্রাসার শতবর্ষ উদযাপনানুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফ উল আরেফীন জানান, মাদ্রাসার শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান বন্ধের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত আবেদন করায় উক্ত অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। তবে ওয়াজ মাহফিলের বিষয়ে আমরা কোন নির্দেশনা প্রদান করিনি।

