বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
আওয়ামী লীগ দুঃশাসনের প্রধান হাসিনা সরকার পতনের পর বেরিয়ে আসছে খুলনা নগরের সরকারি উন্নয়নমূলক কাজে দায়িত্ব রত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানসহ নগর ভবনের ঊর্ধ্বতনকর্তাদের অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ। ফলে খুলনা নগরজুড়ে ড্রেন নর্দমা রাস্তা খানাখন্দরে পরিণত অবস্থায় পড়ে থাকার কারণে যানবাহন চলাচলে চরম ভোগান্তিতে। অপরদিকে ড্রেন নর্দমার কাজ ধীরগতির কর্মকাণ্ডে নগরবাসীর জীবন হয়ে পড়েছে অতিষ্ঠ। যার খ্যাসারত দিতে হচ্ছে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ৩১টি ওয়ার্ডের বসবাসরত ১৫ লক্ষ জনবসতির। সেই সাথে দীর্ঘদিন ধরে খুলনার অধিকাংশ সড়ক মেরামতের কাজ কোথাও অর্ধ সমাপ্ত কোথাও আংশিক অবস্থায় ফেলে রাখার কারণে নগরবাসী রাস্তা চলাচলের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ।
ফলে ভুক্তভোগী নগরবাসীদের অভিযোগ অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে থমকে রয়েছে খুলনা নগরের অধিকাংশ সড়ক ও ড্রেন মেরামতের কাজ। প্রতিটি কাজের জন্য নগর ভবনের ঊর্ধ্বতন কর্তারা একনেকে বাজেট পাস করে কোন কাজ দৃশ্যমান হওয়ার আগেই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ঠিকাদার ব্যক্তিদের নিকট থেকে নগর ভবনের কর্তারা নিজেদের সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে অগ্রিম বিল পাস করে দিতে কোন তঞ্চকতা করেনা।
এক্ষেত্রে রয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বড় ধরনের আর্থিক সুবিধা এতে নগরজুড়ে জনদুর্ভোগে জনজীবন অতিষ্ঠ হলেও যায় আসে না উভয় পক্ষের কর্তাদের। চলমান প্রকল্পের বিল পাশ হওয়ার পর তদারকিতে চলতে থাকে চরম গাফিলতি। আর তারই প্রেক্ষিতে দীর্ঘ এক বছর তিন মাসে ও সম্পন্ন হয়নি খুলনা নগরের সাত রাস্তার মোড় থেকে ইসলামপুর মসজিদ পর্যন্ত মাত্র ৬৭৩ মিটার রাস্তা ও ড্রেন মেরামতের কাজ। অথচ সংকীর্ণ এই সড়কটি ২৭ নাম্বার ওয়ার্ডের বসবাসরত জনগণের অন্যতম প্রবেশ মুখ।
আর এখানকার সড়কও ড্রেন মেরামতের নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নানান অজুহাতে ধীর গতিতে কাজ করার ফলে পথচারী সহ সকল ধরনের যান চলাচলের ক্ষেত্র সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।
একই সাথে দু’পাশের ড্রেনের ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন করে তিন ফিট উঁচু করার ফলে সড়কটি নিচু হয়ে খানাখন্দর পানিতে তলিয়ে নমুনা হারিয়ে ফেলেছে যার কারনে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই সড়কটি ব্যবহৃত হয় এলাকার জনগণের বাসা বাড়ির ও অফিস আদালত স্কুল কলেজ চলাচলের ক্ষেত্রে। একই সাথে ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বেশ কিছু ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান খাবার হোটেল থেকে শুরু করে মুদি দোকান মিষ্টির দোকান ফার্নিচার সহ ছোটখাটো বিভিন্ন ধরনের দোকানীদের। আর উল্লেখিত ৬৭৩ মিটার সড়কের দুই পাশ দিয়ে রয়েছে প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ টি বিভিন্ন আইটেমের দোকান।
আর এখানকার সকল দোকানীদের অভিযোগ প্রায় দেড় বছর ধরে খুলনা নগর ভবনের উদ্যোগে ড্রেন ও সড়ক মেরামতের কারণে আমরা ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। তারা প্রথমে ড্রেন মেরামত করার জন্য দোকানের সামনের প্রায় ৪ ফিট ফুটপাত খনন করে ড্রেনের জমে থাকা যত পঁচা কাঁদা ময়লা আবর্জনা স্তুুপ সাথে মেরামতের কাজে ব্যবহৃত মেশিন বাশ তক্তা ইট বালু খোয়া রাস্তার ওপর রাখার কারণে আমাদের ব্যবসায়িক দিক থেকে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। পাশাপাশি রাস্তার বেহাল দসার কারণে আশেপাশের বসত বাড়ির মানুষেরা প্রয়োজনীয় কেনাকাটার জন্য এখানে না এসে একটু দূর হলেও পার্শ্ববর্তী মহল্লায় গিয়ে কেনাকাটা করছে ফলে আমরা ব্যবসায়ীরা হচ্ছি ব্যবসায়িক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত। অপরদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ দোলখোলা থেকে শহরের অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার একমাত্র সুবিধাজনক যোগাযোগের পথ সাত রাস্তার মোড় থেকে।
তবে বিগত প্রায় দেড় বছর যাবত ড্রেন ও সড়ক মেরামতের নামে রাস্তা ড্রেন খুচে খানাখনদরে পরিণত করে রাস্তার বেহাল দশা করে রাখার কারণে বৃষ্টি না হলেও ড্রেনে জমে থাকা পানি রাস্তায় নেমে এসে জলবদ্ধতা সৃষ্টি করছে এখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে মশা মাছির উৎপত্তি হচ্ছে ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকার বসবাসরত মানুষ। অবস্থা বেগতিক হওয়ার কারণে ঘর থেকে বের হতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে বিগত দিনের ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে অবগত করলেও তিনি এ বিষয়ে তেমন তৎপরতা বা তদারকিতে এগিয়ে আসেননি। এলাকার বসবাসরত জনগণের অভিযোগ নগর ভবনের মেয়র ও এলাকার কাউন্সিলর ক্ষমতায় থাকতেও যখন সঠিক সময় কাজ শেষ হয়নি । আর এখন তো তারা তাদের দায়িত্বের স্থানে কেউ নাই পাশাপাশি প্রকল্পের দায়িত্বরত ঠিকাদারগণ দেশের পরিস্থিতির অজুহাত দেখিয়ে কাজের লাগাম টেনে ধরে লাপাত্তা হয়েছে তাহলে এই ভোগান্তি কতদিন ধরে ভুগতে হবে বা অসমাপ্ত কাজ কত দিনে এভাবে পড়ে থাকবে তার কোন নিশ্চয়তা খুঁজে পাচ্ছি না।