বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
কারফিউ শিথিল হলেও জনমনে ফেরেনি স্বস্তি আতঙ্কের মধ্য দিন পার করছে খুলনার মানুষ।
উল্লেখ্য খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশ জুড়ে চলমান কারফিউর অংশ হিসেবে খুলনায় ভোর ৬ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত শিথিল এর নির্দেশনা দিলেও স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন নৃশংস জঘন্যতম হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ ঘটনার রেস দেশ জুড়ে নাশকতা এবং অসংখ্য মেধাবী ছাত্রদের মৃত্যুর আর্তনাদ আর লাশের গন্ধে হতভম্ব দেশের সকল অভিভাবকদের মন অবলোকন নির্বাকচিত্তে সীমাহীন দুর্ভাবনায়। ফলে থমথমে ভাব এখনো বিরাজমান থাকায় খুলনার জনগণ রয়েছে আতঙ্কে
স্বস্তি ফেরেনি সাধারণ মানুষের মাঝে। অপরদিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাথ ডিসিপ্লিনের ১৯ তম ব্যাচের ছাত্র মুগ্ধ বৈষম্য বিরোধী কোটা সংস্কার ছাত্র আন্দোলনে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ায় মুগ্ধর বাবা-মার সন্তান হারানো করুণ আর্তনাদে নিস্তব্ধ হতভম্ব পরিবেশ। মেধাবী ছাত্র খুলনার সম্পদ মুগ্ধর বিয়োগ বেদনায় খুলনার সকল শ্রেণীর মানুষের মাঝে বিরাজ করছে শোকের মাতম।মৃত্যু মুগ্ধর বাবা-মা সন্তান হারানো ব্যথিত বেদনায় নির্মম নিষ্ঠুরতা কে প্রশ্ন করে বলছে কি ছিল আমার মুগ্ধর অপরাধ আমাদের মুগ্ধ তো সন্ত্রাস না জঙ্গি না আমার সন্তান তো দেশের কোন স্থাপনা ধ্বংস করার জন্য সেখানে যায়নি সে গিয়েছিল নৈতিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সামিল হতে। আর সেজন্যই কি তাকে এমন নির্মমভাবে জীবন দিতে হবে এমন একটি উদিত সূর্য নিভৃতে চলে যাবে। এই আর্তনাদ করুন কাতরতার সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য কি কোন ভাষা আছে জাতির কাছে। শুধু মুগ্ধই নয় এমন শত মুগ্ধ মুহূর্তের মধ্যে হারিয়ে গেছে পিচাশ মানুষদের ক্ষমতার লালসায়। ঠিকই এক সময় সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে রাষ্ট্রের স্থাপনার ধ্বংসের ক্ষত শুকিয়ে পুনরায় স্বাভাবিকভাবে চলবে কার্যক্রম। শান্ত হয়ে যাবে দেশ চলবে তার নিজ গতিতে। আবারো বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে, স্কুল খুলবে, কলেজ খুলবে ছাত্রদের আনাগোনায় মুখরিত হয়ে উঠবে ক্যাম্পাস। কিন্তু হায়নাদের রোষানলে হারিয়ে যাওয়া শত মুগ্ধ ফিরে আসবে না বাংলার আকাশে বাতাসে। ছাত্রদের রক্ত মাড়িয়ে দেশের পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক সড়ক মহাসড়কে চলছে যানবাহন। ঘর থেকে বেরিয়েছে জনগণ। এদিকে কারফিউ শিথিল এর দীর্ঘ ১০ থেকে ১২ ঘন্টা সময়ের মধ্য দোকানপাট মার্কেট শপিংমল ব্যবসা-বাণিজ্য সাথে সরকারি বেসরকারি অফিস আদালত সচল থাকলেও কেমন যেন হাহাকার আর অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পরিবেশ। শহরের প্রধান প্রধান এলাকা পিকচার প্যালেস মোড়, ডাকবাংলা মোড়, বড় বাজার, সাত রাস্তার মোড়, শিববাড়ি ও নিউমার্কেটের আশপাশ দিয়ে জনসমাগম লক্ষ্য করা গেলেও নজরে পড়েনি মার্কেট শপিংমল গুলোতে বেচাকেনার ভিড়। দোকানিরাও অলস সময়ের মধ্য গল্প গুজব ও দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা করে সময় পার করছে। তবে অনাকাঙ্খিত এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যতা নাই সবকিছুতেই যেন ছন্দপতন ঘটেছে।
সাথে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসন কর্তৃক ধরপাকর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে উঠতি বয়সী যুবকদের মাঝে। ফলে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মাঝে দেশের স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্ররা।
তবে দেশের চলমান পরিবেশ পরিস্থিতির ওপর সাধারণ মানুষদের আস্থার জায়গাটা একেবারেই ক্ষীন হয়ে পড়েছে। কারণ আজ সরকারি ছুটির দিন নগরের মিস্ত্রিপাড়া কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা গিয়েছে অন্য অন্য ছুটির দিনে বাজারটিতে ক্রেতা সমগম যেমন উপচে পড়া থাকে সেক্ষেত্রে আজকের চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন হাতেগোনা মুষ্টেমিও কয়েকজন ক্রেতা প্রয়োজনীয় বাজার সদাই করে অতি নিকটতম দু-একজন বন্ধুবান্ধব একত্রিত এক জায়গায় দাঁড়িয়ে বর্তমান দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ফুসফাস আলোচনার মাধ্যমে কিছু চেপে থাকা ক্ষোভ দুঃখ প্রকাশ করছে।
এমনই একজন স্কুল শিক্ষক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি বলেন কার দায় কার ওপর বর্তাবে কে জানে কার কপালে কি আছে জানিনা তবে দেশের এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় কে বা কাদের লালসার শিকার হয়ে নিরীহ ছাত্রদের এভাবে অকালে জীবন দিতে হবে এটা আসলে স্বাধীন দেশের স্বাধীন জাতি হিসেবে কাম্য নয়। তিনি আরো বলেন সব থেকে বড় কষ্টের জায়গায় কোনটি জানেন সেটি হচ্ছে একজন পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ। যাইহোক আমরা সাধারণ মানুষ চাকরি করে খাই এর থেকে বেশি কিছু বলতে গেলে অন্য কিছু দোষ আমাদের ঘাড়ে এসেই পড়বে তবে এ সকল ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে সঠিক দোষীদের উপযুক্ত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে পারলে তবেই জাতি কলঙ্ক মুক্ত হবে।