বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
দেশ যখন সন্ত্রাস নৈরাজ্যয় অতিষ্ঠ ও আতঙ্কিত দেশের সর্বমোহলের জনগণ ঠিক সেই মুহূর্তে সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণও জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে যৌথ বাহিনী কর্তৃক সন্ত্রাস নৈরাজ্যকারী চাঁদাবাজদের কঠোর হাতে দমন করার জন্য দেশজুড়ে একযোগে শুরু হয়েছে অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট ‘ আর তারই সূত্র ধরে এবং অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’ এর অংশ হিসেবে গত তিন দিনের ব্যবধানে খুলনা থেকে অর্ধশতাধিক চিহ্নিত সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজদের আটক করতে সক্ষম হয়েছে যৌথ বাহিনী তার মধ্য অন্যতম সন্ত্রাস মোংলা পৌর আওয়ামী লীগ নেতা সহ ১৪ জনকে মঙ্গলবার রাতভর নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করার তথ্য নিশ্চিত করেছে খুলনা মহানগর পুলিশ কমিশনার।
এ সময় তিনি আরো জানিয়েছেন এর আগে অভিযানের প্রথমদিনে নগরীর দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা এলাকা থেকে খুলনা সিটি কর্পোরেশন ১নং ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর শাহাদাৎ মিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওইদিন রাতে তাকে খালিশপুর থানায় দায়ের হওয়া ভাংচুর মামলায় তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে দেশব্যাপী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত হয় অপােরেশন ‘ডেভিল হান্ট’। সোনাডাঙ্গা থানার এস আই আব্দুল হাই বলেন, মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে এ থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে পুলিশ সাহায্য করে নৌবাহিনীর সদস্যরা। রাতে সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা সকলে মাদক কারবারি ও মাদক সেবনের সাথে জড়িত। এরপর রাত ১২ টার দিকে সোনাডাঙ্গা ১নং ফেস এলাকার খালাসি মাদ্রাসার ১নং রোডে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে মোংলা পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধাক্ষ্য নাসির হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে ভর্তি করা হয়। তিনি বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত আছেন। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থানায় এসে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবেন বলে তিনি আরও জানিয়েছেন। অপরদিকে দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মীর আতাহার আলী বলেন, অভিযানের প্রথমদিনে কেসিসি ১নং ওয়ার্ডের সাবেক শাহাদাত মিনাকে মহেশ্বরপাশা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ওই এলাকার জনৈক ইউসুফ সর্দারের ছেলে। তার নামে খানজাহান আলী ও খালিশপুর থানায় ভাংচুর ও মারামারির মামলা রয়েছে। ওইদিন রাতে তাকে খালিশপুর থানায় ভাংচুর মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়। মঙ্গলবার রাতে দৌলতপুর থানায় অভিযান পরিচালিত হয়েছে কিন্তু উল্লেখযোগ্য কেউ গ্রেপ্তার হয়নি বলে তিনি আরও জানিয়েছেন।
খানজাহান আলী থানার অফিসার ইনচার্জ কবির হোসেন বলেন, রাতে তার থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এদিন রাতে অভিযানের সময়ে রাজনৈতিক মামলায় নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে আজ আদালতে প্রেরণ করা হবে। এদিকে লবণচরা থানার অফিসার ইনচার্জ তৌহিদুজ্জামান বলেন, রাতে লবণচরা এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এদিন রাতে ৩১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক লাভলু খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ২০২২ সালে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কাঙ্গালীভোজের খাবার কেড়ে নেওয়া মামলার আসামি বলে এ প্রতিবেদককে আরও জানিয়েছে।
অভিযান সম্পর্কে জানতে চাইলে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) বলেন, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলবে। সন্ত্রাসী যতবড় হোক না কেন তারা আইনের উর্ধ্বে নয়। অভিযান চলমান থাকবে। পাশাপাশি দেশ জুড়ে যৌথ বাহিনীর অপারেশন ডেভিল হান্টকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশ তথা আর খুলনা জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মিগণ এ সময় খুলনা সুশীল সমাজের অন্যতম ব্যক্তিত্বমীর ফায়েজ উদ্দিন বলেন অতীত হাসিনা সরকার পতনের দিন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত সাড়া দেশের মানুষের জীবনে কতিপয় সন্ত্রাস চাঁদাবাজ কর্তৃক কিছু না কিছু ক্ষতি হয়েছে বড় আকারে তো হয়েছে সেগুলোর জনসম্মুখে উঠে এসেছে গণমাধ্যমের ফলে জনগণের সর্বক্ষেত্রে আতঙ্ক রয়েছে আর এই মুহূর্তে যৌথ বাহিনীর এই অপারেশন অভিযান যদি কোন পক্ষপাতিত্ব অবলম্বন না করে সঠিক ও নির্ভুলভাবে সন্ত্রাস দমনের লক্ষ্যে কাজ করে তাহলে দেশের মানুষের জীবনে স্বস্তি ফিরে পাবে।