বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো :
আজ মহান বিজয় দিবস।
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে লক্ষ লক্ষ শহীদের রক্ত ভেজা মাটি ও পূর্ব দিগন্তে রক্ত খচিত সূর্য উদয়ের মধ্য দিয়ে আজ ১৬ ডিসেম্বর শনিবার প্রাতে নগরীর গল্লামারীর বধ্যভূমির স্মৃতিসৌধে সকল শহীদ ও বীরাঙ্গনাদের উদ্দেশ্যে তাদের পাদদেশে পুষ্প স্তবক অর্পণ এর মধ্য দিয়ে আজ এই মহান বিজয় দিবসের শুভ সূচনা করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, সাথে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, খুলনা জেলা প্রশাসক, পুলিশের ডিআইজি এবং কেসিসি মেয়র ও খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ প্রশাসনিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।
পরে সকাল আটটায় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে জেলার বিভিন্ন স্কুল কলেজ মাদ্রাসা আনসার, ভিডিপি, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, ডিফেন্স,বিজিবি, সেনাবাহিনী ও আহত পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা ক্যাডেট, স্কাউট বাহিনী কর্তৃক শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদনার্থে কুচকাওয়াজ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন পায়রা ফেস্টুন ও বেলুন উড়িয়ে।
এ সময় মাঠে উপস্থিত সকল সংগঠনের সদস্যরা শহীদ ও উপস্থিত সম্মানীয় অতিথিবৃন্দদের স্যালুটের মাধ্যমে সম্মান প্রদর্শন করেন।
এ সময় উপস্থিত সকল সম্মানীয় অতিথিবৃন্দ ১৯৭১ এর সকল শহীদ, বীরাঙ্গনা ও আহত পঙ্গ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতার মাধ্যমে বলেন ৩০ লক্ষ শহীদ আর ৩ লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম হানির বিনিময়ে যে দেশ স্বাধীন হয়েছিলো।
এবং আজকের এই দিনে পাকিস্তানের পরা শক্তিকে পরাস্ত করে বিজয়ের পতাকা উত্তোলন করতে সক্ষম হয়েছিল বাঙালি জাতী।
আজ সেই মহান বিজয় দিবস প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ের মহানায়ক বাংলাদেশের অপরাজেও নেতা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানিদের পরাধীনতার শৃংখল থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করার লক্ষ্যে স্বাধীনতা কামি মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা করেছিল ২৫ শে মার্চ রেসকোর্স ময়দান থেকে। আর
২৬ মার্চ থেকে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী পাকিস্তান তথা স্বদেশী চিহ্নিত রাজাকারদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধ।আর এতে আত্ম বলিদান দিতে হয়েছে বাংলাদেশের ৩০ লাখ মানুষের। আর ৩ লক্ষ মা-বোনদের সম্ভ্রমহানি হয়েছে যার বিনিময়ে তারা আজ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিরোঙ্গনা। যার বিনিময়ে আমরা বাঙালিরা ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পেয়েছিলাম মুক্তিযুদ্ধের বিনিময়ে স্বাধীনতা বিজয় অর্জন। আর আজকের এই দিনের সারা বাংলার আকাশে বাতাসে উড়েছিল সবুজের বুকচিরে লাল সূর্য অঙ্কিত বিজয়ের কেতন।তাই আমরা আজ স্বাধীন সার্বভৌম দেশের নাগরিক বাংলাদেশী।
প্রধান বক্তা আরো বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে তারই একমাত্র যোগ্য উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অগ্রসর হচ্ছে বাংলাদেশ। তার প্রমাণ স্বরূপ বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়ন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় মনোবলের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ প্রকল্প পদ্মা সেতু। তাছাড়া দেশের অসংখ্য উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড চলমান।
তাছাড়া বাংলাদেশ এখন বিশ্বভূখন্ডে রোল মডেল মধ্যম আয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশ।
আজকের নতুন প্রজন্ম কোমলমতি শিক্ষার্থীদের তিনি এটাও বলেছেন যে আমাদের বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে লিখতে বা বুঝতে হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জীবনী ছাড়া কোন ইতিহাস পর্যালোচনা শুরু ও শেষ হওয়া সম্ভব না।
আজকের বিজয় দিবসের প্রধান বক্তার বক্তৃতা শেষে সর্বপ্রথম পুলিশ বাহিনী নৌ বাহিনী সেনা বাহিনী বিজিবি ও অন্যান্য প্রশাসনিক সংগঠন প্রধান অতিথিদের সম্মাননা কুচকাওয়াজ তপধ্বনি ও প্যারেডের মাধ্যমে সম্মান প্রদর্শন করেন। পরে খুলনার ৯৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন দেশাত্মবোধক রণকৌশল ও কুচকাওয়াজ প্রদর্শন এর মাধ্যমে অতিথিদের সম্মাননা জানায়।
পরে উপস্থিত সকল প্রশাসন কর্মকর্তা ও অতিথিবৃন্দ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণের সকল কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে তাদের হাতে পুরস্কার ক্রেস্ট প্রদানের মাধ্যমে প্রভাতী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।