মোঃসাদ্দাম হোসেন ইকবাল,
ঝিকরগাছা উপজেলা প্রতিনিধী।
আছে দৃষ্টিনন্দন সুরম্য আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন বহুতল ভবন, খেলার মাঠ, ঘাট বাধানো পুকুর, চারিদিকে সবুজের সমারোহ, ফলজ বনজ গাছে পাখির কলতান, কি নেই এখানে? কিন্তু যাদের জন্য এত আয়োজন তারাই নেই। সমাজ সেবা অধিদপ্তর কতৃক পরিচালিত ঝিকরগাছা সরকারি শিশু পরিবার (বালক) প্রতিষ্ঠানে ভৌত অবকাঠামো বাদে শুধু নেই আর নেই। ১৮ জন কর্মকর্তা আর কর্মচারীর মধ্যে ১৩ জন নেই, ১৬৫ জন নিবাসীর মধ্যে ১২৫ জন নেই, সংরক্ষিত ১০ জন বৃদ্ধের মধ্যে ১ জনও নেই। আর এভাবেই খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে সরকারি এতিমখানা বা শিশু পরিবার।
সরজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, কিছু বাচ্চা মাঠে ফুটবল খেলছে। কেউবা পুকুরের পানিতে সাঁতার কাটছে। রান্নাঘরে তাদের জন্য রান্না হচ্ছে গরম ভাত আর মুরগির ডিমের তরকারি। খোঁজ নিয়ে জানা গেলো এই শিশু পরিবারে ১৬৫ জন এতিম শিশু থাকতে পারবে। কিন্তু বর্তমানে আছে ৪০ জনের মত। খাবার ও আনুষাঙ্গিক খরচের জন্য নিবাসীদের মাথাপিছু সরকারি মাসিক খোরাকি বাবদ বরাদ্দ আছে ৪০০০ টাকা। দুপুরে সপ্তাহে দুইদিন মাছ, দুইদিন ডিম এবং দুইদিন মুরগির মাংস খাবার হিসেবে দেওয়া হয়। সকালে আর রাতে ভাত আর সব্জি, ডাল ইত্যাদি। স্বাস্থ্য সেবার জন্য আছে হাসপাতালে বিশেষ সুবিধা আর পড়াশোনা করানোর জন্য আছেন শিক্ষক। অবসরে বৃত্তিমূলক শিক্ষা দেওয়ার জন্য একটি কম্পিউটার ল্যাবও আছে ঝিকরগাছা সরকারি শিশু পরিবারে।
উপ তত্ত্বাবধায়ক মোঃ আব্দুল কাদের বলেন, জনবল সংকটের কারণে সব কাজ সুন্দর ভাবে সম্পাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। এখানে ৫জন অফিস সহায়ক, ২জন বাবুর্চি এবং একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী থাকার কথা। কিন্তু সবগুলো পদ দীর্ঘদিন ধরে খালি। এছাড়া অফিস স্টাফ থাকার কথা ১০ জন। কিন্তু আছে মাত্র ৫ জন। একজন নিরাপত্তা প্রহরী প্রয়োজন। কিন্তু সুযোগ নেই। নিবাসীর সংখ্যা এত কম কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ চেষ্টার পরেও এতিম শিশু পাওয়া যাচ্ছে না। বেশির ভাগ গ্রামে এতিমখানা ও হেফজ খনা গড়ে ওঠায় এতিম শিশুরা বেশীরভাগই সেখানে ভর্তি হচ্ছে। এছাড়াও জনবল সংকটের কারণে আমরাও খুব বেশি সার্ভিস দিতে পারছি না। তাছাড়া সরকারি ভাবে প্রচার প্রচারণা চালালে সামনে হয়তো শিশুর সংখ্যা বাড়বে।
সমাজ সেবা অধিদপ্তর, যশোরের উপ-পরিচালক অসিত কুমার সাহা বলেন, জনবল সংকট কাটানোর জন্য কর্মকর্তা কর্মচারীর চাহিদা এবং সেখানকার নিবাসীদের খোরাকি ভাতা বাড়ানোর জন্য আমরা উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে লিখিত ভাবে অবহিত করেছি। এছাড়া শিশু পরিবারে নিবাসীর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের প্রচার প্রচারণা চালাতে এবং সহযোগিতা করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।