তজুমদ্দিন প্রতিনিধি
ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার প্রাণকেন্দ্র অবস্থিত চাঁদপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যাক্ষ কামাল মাহমুদ এর বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে (ব্যাক ডেটে)গ্রন্থাগার ও তথ্যবিজ্ঞান প্রভাষক পদে একজন জালসনদধারী কে নিয়োগ ও এমপিও ভুক্তির চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।অভিযোগ কারি সুত্র জানায়,গত ৯ই মে ২০২১ তারিখে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান প্রভাষক পদের জন্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মাদ্রাসা কতৃপক্ষ।এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পূর্বে অধ্যক্ষ কামাল মাহমুদ একজন চাকরি প্রার্থীর সাথে ২৪ লক্ষ্য টাকা নিয়োগ চুক্তি করেন।নাম প্রকাশ না করা শর্তে ঐ প্রার্থী জানান,চুক্তি অনুযায়ি প্রথমে অধ্যক্ষ সাহেব পাঁচ লক্ষ্য টাকা নেন এবং সভাপতি কে তিন লক্ষ্য টাকা দেওয়ার জন্যে বলেন তার কথা অনুযায়ী সভাপতিকে তিন লক্ষ টাকা দেয়া হয় এবং তারই পরামর্শে পলাতক এমপি নূরনবী শাওনকে নয়লক্ষ টাকা দেওয়া হয়।তার কাছ থেকে মোট ১৭ লক্ষ টাকা নেওয়া হলেও ৫ ই আগস্ট প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর তাকে মাত্র চার লক্ষ টাকা ও ২ লক্ষ টাকার একটি চেক ফেরত দেওয়া হয় তবে একাউন্টে কোন টাকা না থাকায় টাকা উত্তোলন করা সম্ভব হয়নি আজও বলে ঐ চাকরি প্রত্যাশী জানান।বাকি টাকা তার কাছে চাওয়া হলে তিনি যাদেরকে টাকা দেওয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার জন্য বলেন। ২০২১ সালর ৩১ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্ছশিক্ষা বিভাগ হতে গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান প্রভাষক এবং গ্রন্থাগার তথ্য বিজ্ঞান সহকারী শিক্ষক পদ দুটি এনটিআরসি এর মাধ্যমে নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।সে আলোকে ২০২১ সালের ১৮ জুলাই কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ একটি অফিস আদেশের মাধ্যমে বিদ্যমান দুটি পদ বাতিল করে গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান সহকারী শিক্ষক এবং গ্রন্থগারও তথ্য ও বিজ্ঞান প্রভাষক নতুন দুটি পদ সৃষ্টি করে। এই নতুন পদগুলিতে নিয়োগের জন্য ১৭তম নিবন্ধন পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগের সিলেবাস প্রণয়ন ও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশনা দেওয়া হয়। ফলে নিয়োগ কার্যক্রমটি এনটিআরসিএ এর হাতে চলে যায়। নীতিমালার আলোকে উক্ত বিষয়ে ১৭ ও ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনে উত্তীর্ণ দের পঞ্চম ও ষষ্ঠ গনবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করে এনটিআরসিএ। পঞ্চম ও ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির পূর্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শুন্যপদের তালিকা চাওয়া হলেও উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গ্রন্থগার ও তথ্য বিজ্ঞান প্রভাষক পদটি শূন্য দেখানো হয়নি। অন্য একজন দরখাস্তকারী অভিযোগ করে বলেন, নিয়োগ প্রত্যাশী আরো একজন প্রার্থী তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক দেওয়ানের আত্মীয় হওয়ায় তৎকালীন মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি ফরিদ তালুকদার ও অধ্যক্ষ কামাল মাহমুদ এর মাধ্যমে হাসিনা সরকারের পালাতক এমপি নুরনবী শাওন মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে কিছুদিন চুপ থাকার পর আবার অবৈধ নিয়োগ কার্যক্রমটির সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন তজুমদ্দিন উপজেলা ওলামালীগ সভাপতি ও চাঁদপুর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কামাল মাহমুদ ।এব্যাপারে তার বক্তব্য নেওয়ার জন্যে তার ফোনে কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।২০১৫ সালের ৩০শে ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি পরিপত্রের মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব এনটিআরসিএ-কে দেওয়া হলেও ফ্যাসিস্ট সরকারের পালাতক সাবেক এমপি নুরনবী শাওনের ছত্রছায়ায় তৎকালিন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জনাব মাহিদুল ইসলামের সহযোগিতায় ২০১৬ সালে ব্যাকডেট দিয়ে মোঃ আনোয়ার উল্যাহ,প্রভাষক আরবি ইনডেক্স-N2117317,মোঃআবদুল করিম,সহকারী শিক্ষক,ইনডেক্স-N2117313,মোঃমানছুর,সহকারী শিক্ষক, ইনডেক্স-N2117749, (প্রয় ৫০ লক্ষ টাকা )নিয়োগ বানিজ্যের মাধ্যমে এমপিও ভুক্ত করেন।অধ্যক্ষ কামাল মাহমুদের আমলনামা এখানেই শেষ হয়নি।বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা)জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ (সর্ব শেষ ২৩ নভেম্বর ২০২০পর্যন্ত সংশোধিতা) অনুযায়ী মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ল্যাব অনুমোদন থাকার শর্তে একজন ল্যাব এসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দিতে পারবেন,কিন্তু মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের ল্যাব অনুমোদন না থাকার সত্ত্বেও তিনি মোঃআতিকুর রহমান,ইনডেক্স-M0045542 কে মাদ্রাসায় ল্যাব এসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দেন। এবং অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার কোটায় কম্পিউটার সম্পর্কে ধারণা হীন শারমিন আক্তার,ইনডেক্স-M0036527 কে নিয়োগ দেন।
৫ ই আগস্ট প্রেক্ষাপট পরিবর্তন এর পূর্বে তিনি অফিস সহকারী মোঃ ইউসুফকে ইবতেদাইর জুনিয়র মৌলবি পদে পদোন্নতি করার কার্যক্রম হাতে নেন যা শেষ হয় ৫ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে। বিষয়টি অফিস সহকারী ইউসুফ জানার পর প্রতিবাদ করেন এবং বিভিন্ন মহলের চাপের মুখে তার পূর্বের পদেই তাকে ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হন।
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের২০১৪ সালের আইন অনুযায়ী অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়েছে কিনা তা নিয়েও ব্যাপক প্রশ্ন ছিল। তার নিয়োগ পরীক্ষার দিন মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ ছিল পুলিশ ছাত্রলীগ ও যুবলীগ বেষ্টিত। নির্দিষ্ট তিনজন প্রার্থী ছাড়া কাউকে নিয়োগ বোর্ডে ঢুকতে দেয়া হয়নি।

