রংপুর প্রতিনিধিঃ
উজানে ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অনেক বসতবাড়িতে পানি উঠেছে। রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ওইসব অঞ্চল। পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো ঝুঁকিতে পড়েছে। এতে লালমনিরহাট জেলার ৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
রবিবার সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ১৭ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
নদী তীরবর্তী এলাকার বেশ কিছু রাস্তাঘাট ব্রিজ কালভার্ট ভেঙে গেছে পানির তোরে। উঠতি আমন ধান ও বিভিন্ন সবজি ক্ষেত ডুবে আছে বন্যার পানিতে। দীর্ঘ সময় ডুবে থাকলে এসব ফসলের মারাত্মক ক্ষতির শঙ্কা করছেন চাষিরা। একই সাথে বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে বেশ কিছু পুকুরের মাছ। মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সলেডি স্প্যার বাঁধসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো।
শনিবার রাতভর সলেডি স্প্যার বাঁধ ২-এর উপর দিয়ে অভার ফ্লো প্রবাহিত হয়। বাঁধ ভেসে যাওয়ার শঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে ভাটিতে থাকা শত শত পরিবার। স্থানীয়রা রাতে বালু ভর্তি বস্তা ফেলে রক্ষা করে।
তিস্তা চরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। দুই দিন ধরে চরম বিপদে আছেন তিস্তা পাড়ের মানুষ। গতরাতে তিস্তা পাড়ের মানুষ নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। লালমনিরহাটের আদিতমারি উপজেলার খুনিয়াগাছ এলাকায় তিস্তার পানি মানুষের ঘরবাড়িতে প্রবেশ করেছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিয়াউল হক জিয়া বলেন, অত্র ইউনিয়নের ছয়টি ওয়ার্ডে মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। পানিবন্দি মানুষের তালিকা করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জমা দিয়েছি।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনিল কুমার বলেন, রবিবার সকাল ৬টায় তিস্তা নদী ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ বেড়ে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার উপর প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তাপাড়ে বন্যা দেখা দিয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচ এম রকিব হায়দার বলেন, আকস্মিক বন্যায় জেলায় অন্তত ৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে দ্রুত ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হবে।