বিপ্লব সাহা,খুলনা ব্যুরো :
গত জুলাইয়ের মাঝামাঝি দিক থেকে এডিস মশা বাহিত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা শহরের বেশ কিছু হাসপাতালে পরিলক্ষিত হলেও তুলনামূলক ছিল খুবই কম। তবে হঠাৎ করে সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে এসে খুলনা নগরের অলিতে গলিতে প্রায় প্রতিটি ঘরে সন্ধান মিলছে ডেঙ্গু রোগীর। ডেঙ্গু বিষয়ক এক জরুরি আলোচনা সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন গত মাসের মাঝামাঝি দিক থেকে এ মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত হঠাৎ করে ডেঙ্গু রোগীর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা মৃত্যুতেও পিছিয়ে নাই।
সাথে খুলনায়ও দেশের অন্যান্য বিভাগের তুলনায় বেশ চোখ রাঙ্গাচ্ছে ডেঙ্গু।
মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে উদ্বেগ জনক হারে সারাদেশের সাথে খুলনায়ও অতীতের সকল রেকর্ডের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ক্রমন্বয় মহামারী রূপ ধারণ করে শহর ছেড়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের ঘরে ঘরে ডেঙ্গু রোগীর ছড়াছড়ি।
এতে উদ্বেগ কুৎকণ্ঠারমধ্য সাধারন জনগণের পাশাপাশি চিকিৎসকরা।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক সূত্রে জানা গেছে আজকের দিন পর্যন্ত খুলনা বিভাগে ১২২ ছাড়িয়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ।
এবং মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।
এরমধ্য ১ জন যশোর এবং অপর একজন কেশবপুরের সবুরুন্নেছা যার মৃত্যু হয়েছে গত ১অক্টোবর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়।
এবং হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছে ৭৩ জন খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ১৭ জন ও বিভিন্ন হাসপাতালে প্রায় ৫৩ জন ভর্তি রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল গুলো থেকে ডেঙ্গু ফোকালরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এদিকে খুলনা শহরের সরকারি বেসরকারি বেশ কিছু হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে গত এক সপ্তাহের তুলনায় হাসপাতাল গুলোতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় তিনগুণ।
যার কারণে হাসপাতালগুলোতে বেড তো দূরের কথা সাধারণত ফ্লোরেও জায়গা মিলছে না জেলার আশপাশ প্রত্যন্ত অঞ্চলে থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের।
এক্ষেত্রে আরো একজন দায়িত্ব রত চিকিৎসক জানিয়েছেন ডেঙ্গু চিকিৎসা ও পরীক্ষার জন্য প্রতিটি জেলা উপজেলা থানা পর্যায়ে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে সরকার আলাদাভাবে ডেঙ্গু ওয়ার্ড খোলার নির্দেশনা দিয়েছে এবং সেটি কার্যকর করাও হয়েছে।
তবে গত এক সপ্তাহ পূর্বেও খুলনায় এত পরিমানে ডেঙ্গু রোগী আমাদের নজরে পড়েনি।
হঠাৎ করে খুলনায় এত পরিমাণে ডেঙ্গু রোগী বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন এদের মধ্যে অধিকাংশ রোগী ঢাকার বিভিন্ন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে কর্মরত অবস্থায় অসুস্থ হওয়ার কারণে বাড়িতে এসে চিকিৎসা নিতে গেলে তাদের শরীরে ডেঙ্গুর ভাইরাস পাওয়া যায়।
এভাবেই বহিরাগতদের কারণে খুলনায় হুহু করে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
এদিকে আবার দেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ডেঙ্গুর বিষয়ে অশনি সংকেত দিয়ে বলেছে এখন থেকে সতর্ক না হলে আগামী নভেম্বর মাস নাগাত এর ভয়াবহতা আরো তীব্র রূপ ধারণ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকরা ডেঙ্গু রোগীদের হতাশ না হয়ে যথাযথ চিকিৎসার পাশাপাশি তরল জাতীয় খাবার ডাবের পানি খাবার স্যালাইন স্যুপ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিলে সহজেই ডেঙ্গু রোগী সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভব বলে তানারা পরামর্শ দিয়েছেন ।
চিকিৎসকরা আরো বলেন সাধারণ মানুষদের মধ্যে অসুস্থ হয়ে ডেঙ্গুর সিমটম মনে হলে আশেপাশের যেকোনো স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা করে ডেঙ্গু ভাইরাস এর প্রমাণ মিললে হাসপাতালে ভর্তি না করে রোগীর স্বজনরা একটু সেবাশশ্রূষা করলে এবং নিজেদের আবাসস্থলের চারিদিকে পয় পরিষ্কার রেখে এডিস মশা উৎপত্তি রোধ করতে পারলে এ রোগকে পরিত্রাণ এবং প্রতিরোধ করা সম্ভব।