মো: তুহিন আলম রেজুয়ান নবীগঞ্জ প্রতিনিধি:
নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নে দু’পক্ষের সংঘর্ষের সময় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। ওই মামলায় ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত শুক্রবার (২৯ মার্চ) ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই অনিক পাল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ০৫-০৬ জনকে আসামী করা হয়েছে। দু’পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়। সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়ে ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই অনিক পাল, এএসআই বিজু সিংহ, কনস্টেবল এহসান মাহবুব জুবায়ের, শরীফুল ইসলাম, সুমন মিয়া, গুরুত্বর আহত হয়। পুলিশের ওপর হামলা-মামলায় গত বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) গভীর রাতে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে মামলার বাদী এসআই অনিক পাল জানিয়েছেন। গ্রেফতারকৃত আসামীদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন- নবীগঞ্জ থানার মামলা নং: ২৪, ধারা: ১৪৩/ ১১৪/ ১৮৬/ ৩৩২/ ৩৩৩/ ৩৫৩/ ৩০৭/ ৩৪ পেনেল কোর্ড। নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়ন মাথুরাপুর গ্রামের মৃত সাইফ উল্লার পুত্র জিতু মিয়া (২৮), ছায়েদ মিয়ার পুত্র ঝুমন মিয়া (২২), মো: সামছু মিয়ার পুত্র আকিকুর রহমান (২২), মৃত মুহিব উল্লার পুত্র মো: মাহমুদ মিয়া (২৮), মৃত তছর উদ্দিনের পুত্র শরীফ উদ্দিন (২৩), মো: সমছু মিয়ার পুত্র মো: এমদাদুর রহমান (১৯), মো: লেচু মিয়ার পুত্র মো: ইব্রাহিম মিয়া (২৫), মৃত আব্দুল জলিলের পুত্র মো: লায়েক মিয়া (৩২) কে গ্রেফতার করা হয়। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ীর সাধারণ ডায়েরী মূলে নবীগঞ্জ থানাধীন ৪নং, দীঘলবাক ইউনিয়নের দীঘলবাক এলাকায় মাদক উদ্ধার ও গ্রেফতারী পরোয়ানা তামিল করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করি। এসময় হঠাৎ করে রাত অনুমান ১০.১৫ মিনিটের সময় মথুরাপুর বাজারে অবস্থানকালে সংবাদ পাই যে, মথুরাপুর সাকিনে জনৈক লেবু মিয়ার দোকানের সামনে কাঁচা রাস্তার উপর পূর্ববিরোধকে কেন্দ্র করে মঈন উদ্দিন ও লাল মিয়া গংদের মধ্যে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মারামারি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ সংবাদ পেয়ে আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে। রাত অনুমান ১০.৩০ মিনিটের সময় ঘটনাস্থল নবীগঞ্জ থানাধীন দীঘবাক ইউনিয়নের অন্তর্গত মথুরাপুর সাকিনস্থ জনৈক লেবু মিয়ার দোকানের সামনে কাঁচা রাস্তার উপর পৌঁছিয়া দেখি উভয় পক্ষের ২০/২১ জন লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দা, রামদা, লাঠি, ফিকল, টেটা, ইট-পাটকেল ইত্যাদি অস্ত্রাদি নিয়া এক পক্ষ অপর পক্ষের দিকে ইটের ঢিল ছুড়াছুড়ি করছে। আমি সঙ্গীয় অফিসার ফোর্সদের নিয়া উভয় পক্ষকে দাঙ্গায় লিপ্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করি। কিন্তু উভয় পক্ষের আসামীরা পুলিশের কথায় কর্ণপাত না করে এক পক্ষ অপর পক্ষের খুব কাছাকাছি অবস্থান নিয়ে মারামারি শুরু করে। সেখানে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দু’পক্ষ ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরিস্থিতে নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সেখানে যায়। এ সময় সংঘর্ষকারীরা পুলিশের ওপরও আক্রমণ করে। হঠাৎ করে বৃষ্টির মতো ইট নিক্ষেপ করে। হামলাকারীদের নিক্ষিপ্ত ইটের আঘাতে অভিযানে থাকা ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই অনিক পাল ও এএসআই বিজু সিংহ সহ ৫ পুলিশ সদস্য গুরুত্বর আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। নবীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত ওসি) গোলাম মুর্শিদ সরকার বলেন, পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়া সংক্রান্ত একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলায় উভয়পক্ষের ৮ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। জড়িত অন্য আসামীদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।