মোঃ রিপন রেজা স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জঃ
স্থানীয়ভাবে সংঘটিত চাঁদাবাজি,লুটপাট ও আইনশৃঙ্খলা লঙ্ঘনকারী অপরাধ প্রতিরোধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড.আসিফ নজরুল।সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলার হাজীগঞ্জ এলাকায় জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন-জুলাইয়ে আপনারা ঐক্যবদ্ধভাবে মহাপরাক্রমশালী ফ্যাসিস্ট শক্তিকে পরাজিত করেছিলেন। নিশ্চয়ই আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকলে স্থানীয় চাঁদাবাজদেরও প্রতিরোধ করতে পারবেন। আমাদের সরকারের দায়িত্বের পাশাপাশি আপনারাও রুখে দাঁড়াবেন-ইনশাআল্লাহ প্রশাসন আপনাদের পাশে থাকবে।তিনি বলেন-বাংলাদেশের মানুষ ৩৬ দিনে নয়,১৫ দিনেই ফ্যাসিবাদ সরকারকে উৎখাত করেছে।সেই সাহসে,সেই আত্মত্যাগে নারায়ণগঞ্জবাসীর ছিলো অসাধারণ ভূমিকা। শহীদের সংখ্যা ৫৬,আহত প্রায় তিন শতাধিক।৫ আগস্ট গণভবনের দিকে যে মহা অভিযাত্রা হয়েছিল,সেখানে নারায়ণগঞ্জবাসীর অংশগ্রহণ ছিলো ইতিহাস গঠক।জুলাই গণহত্যার বিচার প্রসঙ্গে ড.আসিফ নজরুল বলেন-এত বড় মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার অবশ্যই হবে।আমি আপনাদের জানাতে চাই, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালসহ অন্যান্য আদালতে মামলার কার্যক্রম পুরোদমে চলছে।এসপি সাহেবের সঙ্গে কথা হয়েছে-তিনি জানিয়েছেন,অনেক মামলার চার্জশিট প্রস্তুত।আমি অনুরোধ করেছি যেন ৫ আগস্টের পূর্বেই তা দাখিল করা যায়। প্রয়োজন হলে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার হবে।শহীদ পরিবার ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিয়েও জোরালো বক্তব্য দেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন-কেউ মামলা করতে চাচ্ছেন না-কারণ জানতে হবে। আবার কারও বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করে তাকে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।প্রশাসন এসব বিষয়ে সজাগ থাকবে বলে আমি আশা করি।তিনি আরো বলেন-জুলাইতে আমরা বিজয়ী হয়েছিলাম কারণ আমরা একটি পরিবারে পরিণত হয়েছিলাম-ক্ষোভ বেদনা ও আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে।ফ্যাসিস্টদের বাদ দিয়ে আমরা বৈষম্যহীন,শোষণমুক্ত,প্রকৃত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে চাই।ঐক্য থাকলে অবশ্যই আমরা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।জুলাই শহিদ স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন-শিল্প মন্ত্রণালয় ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার,পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান,জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান,নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক এএইচএম কামরুজ্জামান, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা,জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃআলমগীর হোসাইন সহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল,জুলাইযোদ্ধারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।সবশেষে শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।পরে বৃক্ষরোপন কর্মসূচির মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।