বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
পৌষের শীতে বৃষ্টির দেখা ঠান্ডায় জবুথবু অসহায় ছিন্নমূল মানুষ।
গেল মাসখানেক জুড়ে সারা দেশের সাথে খুলনা জেলার সকল অঞ্চলেই হার কাঁপানো তেমন শীত না পড়লেও হিমশীতল বাতাসের মোটামুটি শীতের প্রভাবে কাতর হয়েছে জনজীবন সহ জীববৈচিত্র ও প্রাণীকুল।এতে চরম অসহায় ছিন্নমূল খোলা আকাশের নিচে থাকা মানুষেরা অতি কষ্টে কাটাচ্ছে জীবন। তার মধ্য আবার আবহাওয়াবিদদের আগাম পূর্বাভাসে গতকাল গভীর রাত থেকে শুরু হয়েছে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। সকাল থেকে মেঘাবৃত আকাশ রোদ ওঠেনি।
ফলে নিম্ন শ্রেণীর দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষদের কর্মস্তম্বিত হয়ে পড়েছে। এতে অধিক শীতের দাপট ও বৃষ্টির প্রভাবে ঘর থেকে বেরোতে পারছে না অনেকেই। সাথে কৃষকের চলতি মৌসুমের বোরো ধানসহ সকল ধরনের রবি শস্যর ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
আর পৌষের শীতের ভিতরে বৃষ্টি আরো দুই থেকে তিন দিন থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়ার এই পূর্বাভাসে খুলনা বিভাগের কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের নিয়ে পড়েছে চরম দুশ্চিন্তার কবলে।
এদিকে দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞ ব্যক্তিরা গতকাল ২০ ডিসেম্বর শুক্রবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে পৌষের এই তীব্র শীতের দাপটের মধ্য ভয়াবহ দুঃসংবাদ দিয়ে জানিয়েছেন বিরাজমান আবহাওয়ার এই প্রতিকূলতা উপমহাদেশীয় ও উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এবং মৌসুমের লঘুচাপ টি দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
যা তারই প্রভাবে আজ শনিবার খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি ও মাঝারি ধরণের বৃষ্টি হচ্ছে আর এই বৃষ্টি বজ্রবৃষ্টিতে পরিণত হতে পারে এছাড়া দেশের অন্যত্র স্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশ ও আবহাওয়া প্রধাণত শুষ্ক থাকতে পারে। পাশাপাশি দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও সন্ধ্যার পরথেকে নিম্নগামী হয়ে শীতের তীব্রতা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে কৃষি অধিদপ্তরের একজন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেছেন এখন বর্তমান মাঠ থেকে পাকা আমন ধান ঘরে তোলার উপযুক্ত সময় এরিমধ্যে বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের ভাষ্য গেল দুই তিন বছর পর এবার তো চাহিদার থেকে ওর তুলনামূলক লক্ষ্য মাত্রার অধিক আমন ধান ফলন দিয়েছে যাতে দক্ষিণ অঞ্চলের কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে তবে অধিকাংশ ধান এখনো মাঠে রয়েছে তবে এই মুহূর্তে যদি আবহাওয়া প্রবণতা ও বৃষ্টি দীর্ঘ সময় ধরে হয় তাহলে পাকা আমন ধানের বেশ ক্ষতি হবে। পাশাপাশি শীতের শাক সবজিরও ক্ষতির আশঙ্কা পরিলক্ষিত হচ্ছে
ফলে কৃষকদের পরিশ্রমের ফসলের ক্ষেত্রে গুনতে হবে বড় ধরনের লুকসান।
আর এর প্রভাব বর্তাবে বাজারের ক্রেতা সাধারণের ওপর।
এমনিতে সকল ধরনের শাকসবজি অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম আকাশছোঁয়া। তারপর যদি আবার লাগাতার বৃষ্টির কারণে ফসল বিনষ্ট হয় সে ক্ষেত্রে দাম আরো অধিক বাড়বে তার কোন বিকল্প নাই।
অপরদিকে খুলনার বিভাগীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞকর্তা আমিরুল আজাদের সঙ্গে আজকের আবহাওয়া বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আবাহার এ ধরনের প্রতিকূল পরিস্তুিতি হবে তা আগের থেকেই আমরা পূর্বাভাস দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন পৌষ মাঘ মাসে অতি শীতের মধ্য বৃষ্টি হলে সাধারণ খেটে খাওয়া দিনমজুর ও ছিন্নমূল খোলা আকাশের নিচে থাকা অসহায় মানুষ সহ কৃষকদের বড় ধরনের ধাক্কা সামলাতে হয়।
পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের অভিমত ছিপ মৌসুমের এই সময়ে বৃষ্টি হলে বয়স্ক ও নবজাতক শিশুদের স্বাস্থ্যগত ক্ষেত্রেও অসাবধানতার কারণে ভয়ানক ক্ষতিকর পরিস্থিতি হয়ে ঠান্ডায় আক্রান্ত রোগ যেমন নিমুনিয়া জ্বর কাশি আমাশা এ সকল রোগ শীত মৌসুমে এধরণের সময় গুলোতেই বেশি পরিলক্ষিত হয়।
ফলে এদের প্রতি পরিবারের পক্ষ থেকে যত্নবান হতে হবে।
তিনি আরো বলেন আজকের দিন অতিবাহিত হলে আগামী দিন সকাল থেকে বলা যেতে পারে বৃষ্টি কয়দিন যাবৎ স্থায়িত্ব হতে পারে এবং শীতে তীব্রতা কতটা বাড়তে পারে।
তবে তিনি এও বলেন চলতি বছর জানুয়ারী ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি পর্যন্ত কয়েক ধাপে শীতের প্রকোপ জেঁকে বসার সম্ভাবনার সংকেত পাচ্ছে আবহাওয়াবিদরা।