আব্দুল গাফফার
শেরপুর বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ার শেরপুরে আদিবাসী পল্লীতে সিংদের সঙ্গে গ্রামবাসীর মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিবাদমান জমিতে আমন ধানের চারা রোপনকে কেন্দ্র করে সোমবার (২৮আগস্ট) সকাল আটটার দিকে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আম্বইল গোড়তা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এদিকে ঘটনার পর থেকে উভয়পক্ষই মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ায় চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ফলে যে কোনো সময় তাদের মধ্যে বড় ধরণের ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে বলেও শঙ্কা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। তবে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ এড়াতে আদিবাসী পল্লীতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আম্বইল মৌজায় শতবিঘা জমির মালিকানা নিয়ে আদিবাসী পল্লীর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সিং সম্প্রদায়ের লোকজনের সঙ্গে আম্বইল গ্রামবাসীর বিরোধ চলে আসছে। এমনকি ওইসব জমি নিয়ে একাধিক মামলাও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। কিন্তু বিবাদমান জমির মধ্যে পাঁচ বিঘা জমিতে আমন ধানের চারা রোপণের উদ্যোগ নেন। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকালে আজগর আলী, মজিবর মাস্টার ও নুর ইসলাম ও তার লোকজন নিয়ে ওইসব জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে যান। এই খবর পেয়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সিং সম্প্রদায়ের লোকজন এসে চারা রোপণে বাধা দেন। এনিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে তৈরী হয় চরম উত্তেজনা। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এসময় উভপক্ষের লোকজনের হাতে লাঠিসোঠা, তীর-ধনুকসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র দেখা যায়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা, শেরপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু কুমার সাহা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সুষ্ঠু সমাধানের আশ্বাস দিয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করেন। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে সংঘর্ষ এড়াতে গ্রামটিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে সূত্রটি জানান। আদিবাসী ইউনিয়নের নেতা শ্রী-কান্ত মাহাতো অভিযোগ করে বলেন, আম্বইল মৌজায় শত বিঘা সরকারি খাস সম্পত্তি রয়েছে। যা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সিং সম্প্রদায়ের লোকজন ভোগদখল ও চাষাবাদ করে আসছেন। কিন্তু স্থানীয় গ্রামের কিছু লোকজন জোরপূর্বক চাষাবাদ করতে গেলে আমরা বাধা দিয়েছি। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন তিনি। এদিকে গ্রামবাসীর পক্ষে সুজন মিয়া ও আজগর আলী বলেন, আমাদের ক্রয়কৃত জমিতে আমন চাষাবাদ করতে গেলে তারা বাধা দেন। অথচ উপজেলা প্রশাসনের সমঝোতা বৈঠকে সব বিরোধ নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। সেই অনুযায়ী সোমবার ওই জমিতে ধানের চারা লাগাতে যান। কিন্তু কতিপয় আদিবাসী নামধারী সন্ত্রাসীরা এসে বাধার সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ করেন। ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে চাইলে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবু কুমার সাহা সাংবাদিকদের বলেন, আদিবাসী পল্লী হিসেবে পরিচিত আম্বইল গ্রামে বিবাদমান জমি নিয়ে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে-এমন খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যাই। সেইসঙ্গে উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদের শান্ত করি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এরপরও সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।