আব্দুল গাফ্ফার শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
বগুড়ার শেরপুরে যৌতুকের টাকা না পেয়ে মমতা খাতুন (৩০) নামের এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে তাঁরই পাষাণ্ড স্বামী ও পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় সোমবার (১৭জুন) ঈদের দিনগত রাত সাড়ে নয়টার দিকে নিহতের ভাই আব্দুল খালেক বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে ঘাতক স্বামী ও ননদকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলেন- উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের চেকবেওয়া গ্রামের ওসমান গণি (৩৩) ও তার বোন মমতা বেগম (২৮)।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আড়াই বছর আগে একই গ্রামের ওসমান গণির সঙ্গে মমতা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁদের সংসারে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে তার বয়স সাত মাস। সম্প্রতি ওসমান গনি তার শ্বশুরের কাছে যৌতুক হিসেবে একটি মোটরসাইকেল কেনার জন্য টাকার দাবি করে বসেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মমতা খাতুনের ওপর শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন চালাতে থাকেন স্বামী ও পরিবারের লোকজন। এরই ধারাবাহিকতায় ঈদের আগের রাত রবিবার রাতে দাবিকৃত যৌতুক নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে মমতা খাতুনের গলায় প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
মামলার বাদী আব্দুল খালেক অভিযোগ করে বলেন, ওসমান গনি পরিবারের অন্যদের সহযোগিতায় তার বোন মমতা খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। পরবর্তীতে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য নিজ শয়নকক্ষের তীরের সঙ্গে লাশটি ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। যৌতুকের টাকা না পেয়ে পাষাণ্ড স্বামী ও পরিবারের লোকজন তার বোনকে হত্যা করবে, এমনটি তিনি কল্পনাতেও আনেননি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জানতে চাইলে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম রেজা এ প্রসঙ্গে বলেন, ঘটনার খবর পেয়েই নিহতের লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত সম্পন্ন করা হয়। এরপর আইনী প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এদিকে মামলা দায়েরের পরপরই গ্রেপ্তার এড়াতে ওই দুইজন সোমবার রাতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের গ্রেপ্তার করে গতকাল দুপুরে বগুড়ায় আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয় বলে জানান তিনি।