মিলন হোসেন, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি-
বগুড়ায় আইএফআইসি ব্যাংকের সিন্দুক ভেঙে ২৯ লাখ টাকা চুরির ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১৯ জুন থেকে একটানা পাঁচ দিন বগুড়ার সোনাতলা, শিবগঞ্জ, আদমদীঘি ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় চুরি যাওয়া ১০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি টাকা উদ্ধার এবং এই ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ২৫ জুন দুপুর ১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন বগুড়া পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বগুড়া সদর উপজেলার বড় টেংরা এলাকার জাহিদুল ইসলাম, সোনাতলা উপজেলার দক্ষিণ আটকরিয়া এলাকার মো. পাভেল, আদমদীঘি উপজেলার তালশন কুন্ডুপাড়া এলাকার বিপ্লব সরকার মিথুন ওরফে মিঠু এবং গাইবান্ধার ফুলছড়ির সিংড়িয়া এলাকার বিমল রাজভর।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে পাভেল এবং পরে পাভেলের দেওয়া তথ্য বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এদের মধ্যে পাভেলের বিরুদ্ধে দুটি এবং জাহিদুলের বিরুদ্ধে একটি চুরির মামলা আদালতে বিচারাধীন।
সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, ‘ব্যাংকে চুরির ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী জাহিদুল ইসলাম। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী ১২ জুন রাতে মাটিডালী ব্রিজের কাছে রাকিবসহ (ছদ্মনাম) বাকি আসামিরা একত্রিত হয়। এ সময় জাহিদুলের নির্দেশে বিমল এবং রাকিব আইএফআইসি ব্যাংকের পেছনে দিয়ে গিয়ে বিল্ডিংটির আশপাশে পর্যবেক্ষণ করে এবং অপর অভিযুক্তদের ক্লিয়ারেন্স দেয়। পরে জাহিদুল একটি টায়ার লিভারসহ ব্যাংকের বিল্ডিংয়ের পেছনে অবস্থান নেয়। এতে যুক্ত হন মিথুন ও পাভেল। এরপর জাহিদুল প্রথমে ব্যাংকের বিল্ডিংয়ে ওঠে এবং পরে বিমলও তার সঙ্গে প্রবেশ করে।
এ সময় বাকি আসামিরা বিল্ডিংয়ের আশপাশে সতর্ক অবস্থানে থাকে। এরপর জাহিদুল ও বিমল নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে মুখে মাস্ক ও মাথা পলিথিন দিয়ে ঢেকে ফেলে। পরে তারা দুজন ব্যাংকের ভেতরে সিন্দুক ভেঙে ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৬১৮ টাকা চুরি করে। এ সময় চুরির টাকা তারা ব্যাংকের ময়লা রাখা বস্তায় নিয়ে বের হয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
ব্যাংকে চুরির আগে গত এক মাসে জাহিদুল একাধিকবার আসে । উপশাখায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল নিশ্চিত হয়ে চুরির পরিকল্পনা করে। গ্রেপ্তারের পর পাভেলের কাছ থেকে ১ লাখ ১ হাজার ৭৭০ টাকা, বিমলের কাছ থেকে ২ লাখ ৯৩ হাজার ২২০ টাকা, মিথুনের কাছ থেকে ১ লাখ ৯১ হাজার ২৫০ টাকা এবং জাহিদুলের কাছ থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা এবং চুরির টাকা দিয়ে কেনা লাখ টাকা দামের একটি পুরনো মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ড আবেদন জানানো হবে। এ ঘটনায় জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
উক্ত প্রেস ব্রিফিং এ জেলা পুলিশের পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ ও মোতাহার হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শরাফত ইসলাম, সদর থানার অফিসার ইন্সপেক্টর সাইহান ওলিউল্লাহ, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শাহীনুজ্জামানসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।