আব্দুল গাফ্ফার শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
বগুড়ার শেরপুরে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে তেলের কনটেইনার বিস্ফোরণে চার শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো তিন শ্রমিক। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক সংলগ্ন উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ছোনকা নামক স্থানে অবস্থিত মজুমদার প্রোডাক্টস্ লিমিটেডে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর পৌরশহরের অফিসার্স কলোনি এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে মো. ইমরান হোসেন (৩২), একই এলাকার সোলায়মান আলীর ছেলে মোহাম্মদ আবু সাঈদ (৩৮), আব্দুস সালামের ছেলে মো. মনির হোসেন (২৮) ও রুবেল আহমেদ (৩১)। এছাড়া এই ঘটনায় আহতরা জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন থাকায় তাৎক্ষণিক তাদের নাম পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।
মজুমদার প্রোডাক্টস্ লিমিটেডের মানব সম্পদ কর্মকর্তা রঞ্জন চক্রবর্তী জানান, ঘটনার সময় তাদের কোম্পানির ঠিকাদারের সাতজন শ্রমিক রাইচ ব্র্যান তেল উৎপাদনের কনটেইনার মেরামতের কাজ করছিলেন। এসময় হঠাৎ কনটেইনারটিতে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ওইসব শ্রমিকরা গুরুতর আহত হয়। পরে কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাৎক্ষনিক তাদেরকে বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। বগুড়ার উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. লালন মিয়া ঘটনার সতত্য স্বীকার করে বলেন, বিস্ফোরণে গুরুতর আহতদের মধ্যে চারজনকে বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিহতদের লাশ হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। আর বাকি আহতরা শহরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে শুনেছেন তিনি।
শেরপুর ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার বখতিয়ার উদ্দিন জানান, মজমুদার কোম্পানিতে আগুন লেগেছে-এমন সংবাদ পেয়ে দ্রুত সেখানে যাই। কিন্তু তাঁরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন কোম্পানির লোকজন। তাই তাদের তেমন কোনো কাজ করতে হয়নি। তবে ওই ঘটনায় হতাহতের উদ্ধার ও হাসপাতালে পাঠানোর কাজে সহযোহিতা করেন। এছাড়া কনটেইনার বিস্ফোরণের কারণ জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, উচ্চ তাপমাত্রার কারণে কনটেইনারটিতে বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে। জানতে চাইলে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম রেজা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার খবর পেয়েই সেখানে যাই। পাশাপাশি হতাহতের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক চারজনকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল মর্গেই ময়না তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।