আব্দুল গাফফার শেরপুর( বগুড়া) প্রতিনিধি
বগুড়ার শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলে সশস্ত্র হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না সংগঠটির স্থানীয় সমন্বয়করা। এমনকি এই মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথাও অস্বীকার করেছেন তাঁরা। রোববার (০৩নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলন ডেকে এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় উপদেষ্টা ইয়াসিন আলী হিমেল, সমন্বয়ক জাহিদ সরকার, তানভির তুষার, রাশেদ সাদাত, মুজাহিদ পারভেজ, আনোয়ার হোসেন, আরাফাত রহমান মিলন, সাদিকুর রহমান অয়ন, রায়হান, বুলবুল আহমেদ, নাজমুল আলম, শাহরিয়ার মামুন বক্তব্য রাখেন। তাঁরা বলেন, চলতি বছরের ১৩জুলাই থেকে এই উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সক্রিয় আন্দোলন শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৭জুলাই সকালে হাজার হাজার ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে একটি বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিল শেষে শহরের ধুনট মোড় এলাকায় ঢাকা-বগুড়া মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। এ সময় পুলিশ লাঠিপেটা, টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও গুলি ছুঁড়ে। এতে সাধারণ মানুষসহ অন্তত অর্ধশত আন্দোলনকারী ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। এই ঘটনায় শেরপুর থানায় ১৭জন আন্দোলনকারীর নাম উল্লেখ করে এবং আরও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে পুলিশ একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় ৭জন আন্দোলনকারী গ্রেপ্তার হয়ে ২১দিন কারাগারে ছিলেন। এরইমধ্যে গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে সরকারের নির্বাহী আদেশে সেই মামলা প্রত্যাহার হয়ে গেছে। কিন্তু ওই ঘটনায় শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের খন্দকারটোলা গ্রামের রিফাত সরকার নামের এক যুবক ২নভেম্বর শেরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। সেইসঙ্গে তিনি নিজেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক দাবি করছেন। ফলে তাঁকে নিয়ে এবং এই মামলাটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্পৃক্ততা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়করা দাবি করে বলেন, রিফাত আমাদের ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। ১৭ জুলাই তিনিও পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছিলেন। কিন্তু এই মামলার বিষয়ে আমাদের সঙ্গে তিনি আলোচনা করেননি। তাই এর সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। এছাড়া এই মামলায় কিছু নিরপরাধ ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। এমনকি ওই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া পাঁচজনের মধ্যে একজন আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহনকারী এক ছাত্রের বাবাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যে কারও আইনের আশ্রয় নেওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু একটি ঐতিহাসিক ঘটনায় উদ্দেশ্যমূলক মামলা করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করা উদ্বেগজনক। এমন পরিস্থিতিতে এই মামলার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার না করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে চাইলে মামলার বাদি রিফাত সরকারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।