আবুজর গিফারী, বেড়া(পাবনা)প্রতিনিধিঃ
বেড়া পৌরসভার দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মাসুদা সুলতানা দ্বায়িত্ব গ্রহনের পর প্রথমবারে মতো ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, মঙ্গলবার সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় সভায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পৌর ভবনের প্রশাসনিক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মোরশেদুল ইসলাম, বেড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি, সাদিয়া সুলতানা, বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ফাতেমা তুজ জান্নাত, বেড়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মিজানুর রহমান, পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির -২ বেড়া জোনাল ডিজিএম, বেড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ আব্দুল হান্নান, অর্থ সম্পাদক ওয়াহিদুজ্জামান প্রমুখ। মতবিনিময় সভায় পৌর প্রশাসক অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে ভেঙে পড়া নাগরিক সেবা প্রদানের অঙ্গীকার করে পৌরবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন। এ সময় বক্তাগন পৌর রাজস্ব আদায়ে কর পরিশোধে অনাগ্রহের জন্য বিদায়ী বরখাস্ত মেয়র, সাবেক ডিপুটি স্পীকার পুত্র আসিফ শামস রঞ্জনের অতিরিক্ত পৌর কর আরোপকে দায়ী করেন। বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মোঃ মোরশেদুল ইসলাম বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম পৌর প্রশাসককে জানান, পৌর মেয়র কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে অস্বাভিক কর বাড়িয়ে জনগনের বুকের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছেন। সে কারণে গত তিন বছর ধরে পৌর কর দিচ্ছেন না পৌরবাসী। বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন তার থানার বাৎসরিক কর ছিলো একলক্ষ টাকার মধ্যে বরখাস্ত মেয়র তা বাড়িয়ে এক লাফে চার লক্ষ টাকা ধার্য্য করেছে। ফলে বাধ্য হয়ে পৌর কর পরিশোধ করেননি বেড়া থানা। এভাবে নির্বাহী কর্মকর্তাও তার ক্ষোভের কথা জানিয়ে পৌর প্রশাসককে যুক্তিযুক্ত কর ধার্য্য কল্পে নাগরিকদের সমন্বয়ে একটি মতবিনিময় সভার আয়েজনের ওপর গুরুত্ব দেন। দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তার এক প্রশ্নের জবাবে বেড়া প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, বরখাস্ত মেয়র বেড়া পৌর নাগরিকদের জিম্মি করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে। তিনি পৌর নাগরিকদের ওপর এমন অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছিলেন যে কারণে ব্যাপক ক্ষোভ কাজ করেছিলো পৌর নাগরিকদের মধ্যে। ফলশ্রুতিতে সরকার পতনের ক্ষোভ এসে পড়েছিল এ দৃষ্টিনন্দন পৌর ভবনের ওপর।
বেড়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি আব্দুল হান্নান পৌর ভবনের হামলা লুটপাটের বর্ণনা ও ক্ষতির পরিমাণ জানতে চাইলে বেড়া পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বেড়া পৌরসভা আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৬ কোটি টাকার মতো যা জড়িপ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য ছাত্র জনতার অভ্যুথানের পর বেড়া পৌর মেয়র ডিপুটি স্পীকার পুত্র আসিফ শামস রঞ্জন পালিয়ে রক্ষা পেলেও রক্ষা পায়নি দেশের মধ্যে দৃস্টি নন্দন স্থাপনা বেড়া পৌর ভবন। উশৃংখল জনতা ঐ দিন ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে পৌর ভবনে দরজা জানালা আসবাবপত্র ভাংচুর চেয়ার টেবিল কম্পিউটার ও যাবতীয় নথিপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। জনরোষ থেকে বাঁচতে মেয়র আত্মগোপনে চলে গেলে নাগরিক সেবা বন্ধ হয়ে যায়। অন্তবর্তী সরকার দ্রুত নাগরিক সেবা নিশ্চিত কল্পে দেশের সকল পৌরসভা মেয়র পদ থেকে তাঁদেরকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দেন। বেড়া পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে পাবনা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) মাসুদা সুলতানা পৌর প্রশাসকের দ্বায়িত্ব নিয়ে পৌর সেবা নিশ্চিতের কঠিন দ্বায়িত্ব নিয়ে পৌরবাসীর সহযোগিতা চেয়েছেন।