মোঃ আশরাফুল ইসলাম,মানিকগঞ্জ.
তীব্র দাবদাহে বিপর্যস্ত মানিকগঞ্জসহ গোটা দেশ; প্রচণ্ড গরমে-ঘামে হাঁপাচ্ছে মানুষ। ঘরে-বাইরে কোথাও নেই প্রশান্তি ।তাপমাত্রার পারদ ৪২ ডিগ্রিতে পৌঁছে বাতাসের আর্দ্রতার আধিক্যে ভ্যাপসা গরমে নাভিশ্বাস দশা। বহু জনপদে থমকে গেছে স্বাভাবিক জনজীবন। হাঁসফাঁস করছে প্রাণিকুলও।
একদিকে চলছে বৈশাখের তাপপ্রবাহ, তার সাথে যুক্ত হয়েছে লোডশেডিং। দুই-এ মিলে বেহাল দশা মানুষের। অস্বাভাবিক ও অসহনীয় গরম আর লোডশেডিংয়ে নাকাল হয়ে পড়েছে মানিকগঞ্জের সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তেমন কেউ গৃহ আবাসের বাইরে যাচ্ছেন না।নিদাঘের মধ্যাহ্ন সূর্য যেন প্রকৃতিতে ঢালছে তরল আগুন । প্রতিদিন বাড়ছে উষ্ণতা। তেজদীপ্ত সূর্যের অসহনীয় তাপে জনশূন্য হচ্ছে শহর-নগর-পল্লিপথ।তীব্র গরমে পুড়ছে জনপদ, মাঠ-ঘাট ও শষ্যের ক্ষেত। কোথাও স্বস্তির বাতাস নেই। তাপপ্রবাহ মাঝারি থেকে তীব্র, তীব্র থেকে আরও তীব্রতর হচ্ছে।গরমে পুড়ছে মানুষ, পুড়ছে ফল-ফসল, খেত-খামার, জীববৈচিত্র্য-প্রকৃতিরাজ্য। আম, লিচুর গুটি, কাঁঠালের মোছাসহ মৌসুমি ফলমূলের গুটি প্রচণ্ড রোদে শুকিয়ে ঝরে যাচ্ছে। নদী, খাল, পুকুর-দীঘিসহ পানির উৎসগুলো শুকিয়ে তলানিতে ঠেকেছে।চাপকলেও উঠছেনা পানি।
বৃষ্টিহীন কাট ফাটা রোদ আর গরমের দাপটে জনজীবন যখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা তখন মিলছে না বিদ্যুৎ;গত কয়েকদিনের প্রচণ্ড তাপদাহে যুক্ত হওয়া লোডশেডিংয়ে জনজীবন হয়ে ওঠেছে বিপর্যস্থ ও দুর্বিষহ । হুমকিতে রয়েছে শিশু স্বাস্থ্য। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক , শিক্ষার্থী ও উৎপাদনমুখী কল-কারখানার মালিকেরা।
ভোর বা সকাল, দুপুর কিংবা সন্ধ্যা অথবা রাত; বিদ্যুতের আসা-যাওয়া চলছে প্রতি ঘন্টায়। কোনো কোনো উপজেলায় আধাঘণ্টা পর পরও দিচ্ছে লোডশেডিং।ফলে মানিকগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প-কারখানা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, চিকিৎসা, ব্যাংকিং সেবা, শিক্ষা ও গৃহস্থালির কাজকর্ম ব্যাহতসহ বিদ্যুৎনির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্যে দেখা দিয়েছে চরম স্থবিরতা।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এপ্রিল উষ্ণতম মাস হওয়ায় এ মাসের বাকি দিনগুলো জুড়েই সারা দেশে থাকবে দাবদাহ। আর এ সময় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। আগে এপ্রিল-মে মাস পর্যন্ত তাপপ্রবাহ থাকলেও এখন তা বেড়ে জুন-জুলাই পর্যন্ত বিরাজ করে। গত ১০ বছরে দেশের গড় তাপমাত্রা বেড়েছে এক থেকে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় গড়ে বেড়েছে প্রায় ৩ ডিগ্রির মতো।জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই আবহাওয়ার এই বৈরী আচরণ।