আব্দুল্লাহ আল মামুন পিন্টু টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সরকারি রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। ছাত্রলীগ ঐ নেতার নাম জিহক খান রুদ্র। সে আজগানা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও সৈয়দপুর গ্রামের মৃত আজম খানের ছেলে। গত মঙ্গলবার রাতের আঁধারে সৈয়দপুর গ্রামের সহস্রাধিক জনসাধারণের চলাচলের একমাত্র এ রাস্তাটিতে বাঁশ দিয়ে আটকে দেন ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
স্থানীয়রা জানায় সরকারি এ রাস্তাটি দিয়ে প্রায় সহস্রাধিক লোকজনের চলাফেরা। এ রাস্তাটি স্থানীয় এমএসবি ব্রিকস্ নামের একটি ইটভটার গাড়ীও চলাফেরা করে। মুলত ইটভটার গাড়ি চলাচল নিয়েই এ রাস্তাটিতে বাঁশের বেড়া দেন ঐ ছাত্রলীগ নেতা।
স্থানীয়রা আরো জানায়, গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ঐ রাস্তাটি ব্যবহার করায় এমএসবি ব্রিকসের ইটভাটার মালিকের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিত ছাত্রলীগ নেতা রুদ্র। শেখ হাসিনার পতনের পর সারাদেশের দৃশ্যপট পাল্টে যায়। এবার ওই ভাটার মালিক টাকা দিতে অস্বীকার করায় রাস্তাটিতে বাঁশের বেড়া দেয়। এতে করে ঐ গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলে দুর্ভোগ নেমে আসে।
স্থানীয় বাসিন্দা মেহের আলী, আব্বাছ আলী আব্দুল আলীম ও আনোয়ার হোসেন সহ একাধিক ব্যক্তি বলেন,রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়ায় তাদের বাসা-বাড়িতে কাজের জন্য ইট বালু ও সিমেন্ট নিতে আনতে সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। একট্রাক মাটির প্রয়োজন হলেও নেওয়া যাচ্ছে না। অতি প্রয়োজন হলে সড়কের পাশে নামিয়ে ভ্যান দিয়ে আনতে হয়,তাতে খরচ দ্বিগুণ হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানায়, ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জিহক খান রুদ্র সরকারি খাস খতিয়ানে জায়গাটিতে দলীয় প্রভাব খাঁটিয়ে কয়েকটি দোকানপাট গড়ে তুলেন। যথারীতি ভাড়াও তোলেন তিনি। পাশাপাশি রাস্তা ব্যবহার করায় প্রতিবছর ইটভাটার মালিক নুর মোহাম্মদ এর নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিতেন। আওয়ামী লীগ সরকার পালিয়ে যাওয়ায় রাস্তাটি ব্যবহারের টাকা নিতে পারছে না। এজন্য রাতের আঁধারে একটি দোকানঘর নিজেই ভেঙে ইটভাটার মালিক নুর মোহাম্মদ ও তার ছেলে মোশারফকে দোষারোপ করে মামলা দেওয়ার পায়তারা করছে। তিনি বলেন ছাত্রলীগের ঐ নেতা ছাত্র আন্দোলন দমাতে অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছে। এছাড়া তার বাহিনী নিয়ে ছাত্রদের মিছিলে আঘাত করেছে তারপরও দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন ওই ছাত্রলীগ নেতা,তার খুঁটির জোর কোথায়।
এমএসবি ব্রিকস্ ইটভাটার মালিক নুর মোহাম্মদ জানান, দলীয় প্রভাবে রুদ্র রাস্তার জন্য ৩ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়েছে। সরকার এবার জায়গাটি খাস খতিয়ানের সাইনবোর্ড টাঙিয়েছে। এ কারণে টাকা দিতে অস্বীকার করায় রাতের আধারে মনির খান, নাজমু,লেবু খান, মোসলেম উদ্দিন ও নয়ন খানদের নিয়ে রুদ্র নিজের দোকান ভেঙে আমার উপর দোষারুপ করছে। এর প্রতিবাদে এলাবাসীদের নিয়ে ২২ ডিসেম্বর সকালে একটি মানববন্ধন করি।
অভিযুক্ত জিহক খান রুদ্র মুঠোফোনে বলেন, আমরা ২০০৯ সালে ৬৪ শতাংশ জায়গা ক্রয় করি। সম্প্রীতি ২৪ শতাংশ জায়গা সরকারের নামে রেকর্ড হয়। আমরা ওই রেকর্ড কারেকশনের মামলা দায়ের করি। সম্প্রীতি মির্জাপুর আমলী আদালতে ১৪৪ ধারা মামলা করি। আদালত উভয় পক্ষকে স্থিতিশীল থাকার আদেশ দেন। সেই আদেশকে উপেক্ষা করে ইটভাটার মালিক নুর মোহাম্মদ ভেকু দিয়ে কয়েকটি দোকান ভেঙে ফেলে। এ নিয়ে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করি।
এ বিষয়ে মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মাসুদুর রহমান জানান, বিষয়টি তিনি জানেন। ওই রাস্তাটিতে বাঁশের বেড়া তোলার জন্য স্থানীয় নায়েব আমিনুর রহমানকে পাঠিয়ে ছিলেন। বাঁশের বেড়া খুলে না দিলে আদালতকে তিনি অবহিত করবেন বলে তিনি জানান।