বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ উন্নয়নের দূরদর্শিতার অদম্য অগ্রযাত্রার নিদর্শন হিসেবে দক্ষিণ বাংলার মানুষদের জন্য আজ ১ জুন শনিবার আরেকটি স্বপ্ন পূরণের দ্বার উন্মোচন হলো মোংলা বেনাপোল রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের মাধ্যমে সকাল ১১ টায় বেতনা এক্সপ্রেস টি ফুলতলা হয়ে মোংলার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠার ৭৩ বছর পর রেল যোগাযোগে যুক্ত হলো দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর সমুদ্রবন্দর মোংলা। এর আগে ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভার্চুয়ালি এই রেলপথ উদ্বোধন করেন। তার কিছুদিন পূর্বে ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানো হয়। স্থায়ী জনবল নিয়োগ সহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ প্রস্তুতি সম্পন্ন করে যাত্রী নিয়ে ট্রেন চালু করা হয়েছে বলে জানান খুলনা মংলা বন্দর রেললাইন প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী আহমেদ হোসেন মাসুম। ইতোমধ্য জানা গেছে খুলনা থেকে যশোর হয়ে বেনাপোল পর্যন্ত চলাচল করে বেতনা এক্সপ্রেস নামে লোকাল ট্রেনটি বেনাপোল থেকে ফেরার পথে খুলনার ফুলতলা জংশন থেকে মোংলার দিকে যাত্রা করবে। তখন ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত ট্রেনটি মোংলা কমিউটার নাম ধারণ করে চলবে। এবং নতুন এইরুটে মংলা কমিউটার নামে একটি ট্রেনই আপাতত চলাচল করবে। সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার ট্রেনটি বন্ধ থাকবে। তাছাড়া খুলনা থেকে ভোর সোয়া ছটায় ছেড়ে বেনাপোল পৌঁছাবে সকাল সাড়ে আটটায় এরপর বেনাপোল থেকে ছেড়ে ফুলতলা হয়ে মংলা পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে। এবং ফুলতলা থেকে যাওয়ার পথে মংলা কমিউটার মোহাম্মদনগর কাটাখালি ও চুলকাটি বাজার রেলস্টেশনে যাত্রা বিরতি দেবে।পুনরায় মংলা থেকে দুপুর একটায় ট্রেনটি ছেড়ে বেনাপোল পৌঁছাবে সাড়ে চারটায় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায় খুলনা মংলার রেলপথ প্রকল্পটি নেওয়া হয় ২০১০ সালে। এটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায় । প্রকল্পটি তিনটি ভাগে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।এরমধ্য প্যাকেজ ১ রেল লাইন নির্মাণ প্যাকেজ ২ রুপসা নদীর ওপর রেল সেতু ও প্যাকেজ ৩ টেলিযোগাযোগ ও সিগন্যালিং সিস্টেম। এসব প্রকল্পের আওতায় মূল্যায়ন সহ রেলওয়ে ট্রাকের দৈর্ঘ্য ৮৬. ৮৭ কিলোমিটার। তার মধ্য ৬৪. ৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ। আর রুপসা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে ৫.১৩ কিলোমিটার রেল সেতু। সর্বপ্রথম জমি অধিগ্রহণ রেল লাইনে রেল সেতু নির্মাণসহ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। যা ২০১৫ সালে সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ২০২১ সালে আবারো সময় ও ব্যয় দুটি বাড়ানো হয়। তখন ব্যয় দাড়ায় ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। উল্লেখ্য দেশের বৃহত্তম দ্বিতীয় সুন্দরবন মংলা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫০ সালের এক ডিসেম্বর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত মংলা, খুলনা শহর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণে পশুর নদী ও মঙ্গলা নদীর সংযোগস্থলে অবস্থিত সংশ্লিষ্টরা বলেছেন এই পথে ট্রেন চলাচল শুরু হলে এ অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা মংলা বন্দর দিয়ে দ্রুত সময় ও কম খরচে মালামাল নিতে পারবেন গতিশীল হবে মংলা সঙ্গে যাতায়াত সুবিধা।