মাসুদ মীর। বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে এনায়েতিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আঃ ছালামের বিরুদ্ধে অনিয়ম জ্বাল-জ্বালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ সহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির প্রতিবাদে জেলা প্রশাসক বরাবর মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ফজলুল আলম লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে ,সুপার মাওলানা আঃ সালাম ১৯৯৪ সালে এনায়েতিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার পদে যোগদান করেন। তৎকালীন সংসদ সদস্য জামায়েত নেতা মুফতি আব্দুস সাত্তার মাদ্রাসার সভাপতি ছিলেন।
কোনো প্রকার নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে তাদের দলীয় লোক আঃ সালামকে সুপার পদে নিয়োগ প্রদান করেন সভাপতি।
যোগদানের পর থেকে সুপার বিভিন্ন দুর্নীতি অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন । সরকার ২০১৫ সালের নভেম্বর মাস থেকে ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যাবেনা, মর্মে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন। সরকারি প্রজ্ঞাপন উপেক্ষা করে সুপার মাওলানা আঃ সালাম কমিটির মাধ্যমে জাল জালিয়াতি করে ২০১৯ সালে মোঃ ওমর ফারুক সহকারী শিক্ষক (কৃষি), রিনা রাণী সহকারী শিক্ষক সামাজিক (বিজ্ঞান) ও রেক্সোনা বেগম সহকারী শিক্ষক (আইসিটি) কে নিয়োগ প্রদান করেছেন।
অফিসিয়াল কাগজপত্রে ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে তাদের নিয়োগ পত্র দেখান। তৎকালীন সরকারী আইনে নিয়োগের পরের মাসে শিক্ষক তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইজ) দপ্তরে নিয়োগকৃত শিক্ষকদের নামের তালিকা জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও সুপার আঃ সালাম ২০১৬-২০১৯ সালেও তাদের তথ্য ও নাম ব্যানবেইজে না পাঠিয়ে ২০২০ সালে শিক্ষক তথ্য ও ব্যান্ডবেইজে ওই শিক্ষকদের নাম অন্তর্ভুক্ত করান।
তৎকালীন নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের স্বাক্ষর জ্বাল করে এমনকি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষর জ্বাল ,রেজুলেশন খাতা,সিএস রেজাল্ট সীট ঘষা-মাজা করে অবৈধভাবে তাদেরকে নিয়োগ প্রদান করেন।
মাদ্রাসাটিতে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। ১ম থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত ৩০ – ৩৫ জন ছাত্র-ছাত্রী আছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০২৪ সালে অনুষ্ঠিতব্য দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের দাখিল নির্বাচনী পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ রয়েছে যে , নির্বাচনী পরীক্ষা ছাড়া কোন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের ফরম পূরণ করতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে সুপার নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফল তৈরি করে বিভিন্ন অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। হাজিরা খাতায় ভুয়া শিক্ষার্থী দেখিয়ে উপবৃত্তি ও টিউশন ফি তুলে আত্মসাৎ করছেন। ম্যানেজিং কমিটি গঠনের পূর্বে অভিভাবক ভোটার তালিকা তৈরি করতে কমপক্ষে ২০০ শিক্ষার্থীর অভিভাবক থাকার বিধান থাকলেও ভুয়া শিক্ষার্থীদের নাম দেখিয়ে ভোটার তালিকার মাধ্যমে তিনি বর্তমান ২০২৩ সালে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেছেন।
সুপার আঃ সালাম মাদ্রাসার শূন্য পদে সহ- সুপার , নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া, কাম পরিছন্নতা কর্মী নিয়োগ প্রদানের জন্য আবেদনকারী প্রার্থীদের মধ্যে সভাপতি ও সুপারের মনোনীত ও নিয়োগ পরীক্ষায় ১ম বানিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর্থিক ভাবে মোট অংঙ্কের লেনদেন করার অভিযোগ রয়েছে।
এমনকি আর্থিক লেনদেনকৃত পরীক্ষার্থীদের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম স্থান পাইয়ে দেওয়ার জন্য নিয়োগ বোর্ডের ডিজির প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরির চেষ্টা করছেন ।
সুপার আঃ সালাম তার মাদ্রাসার সহ-সুপারের শূন্য পদে প্রার্থী আঃ আউয়াল মাতুব্বরের কাছ থেকে ৭ লক্ষ ও ২জন কর্মচারী প্রার্থীর কাছ থেকে ১২ লক্ষ টাকা আর্থিক লেনদেন করেছেন বলে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও এলাকার জনসাধারণের পক্ষ থেকে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সাংবাদিকদের
বরাবর লিখিত অভিযোগ পত্রে জানা গেছে।