মাসুদ মীর। বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাটের মোল্লাহাট থানাধীন কেন্দুয়া ব্রিজের কাছে গত ২৮ জানুয়ারী-২০২৪ তারিখ, আনুমানিক দুপুর ২ টার দিকে নাশুখালী বাজারের মাছ ব্যবসায়ীর ৮ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা অভিনব কায়দায় আত্মসাত এর ঘটনায় আত্মসাতকারিকে আটক ও টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন মোল্লাহাট থানা অফিসার ইনচার্জ আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে তার চৌকস টিম।
২ (জানুয়ারি) ২০২৪, শুক্রবার, সকাল ১১ টায়, মোল্লাহাট থানা অফিসার ইনচার্জ এস.এম. আশরাফুল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান,
আশিষ কুমার মন্ডল(৩৫), পিতা-কালীপদ মন্ডল, গ্রাম-মাদারতলী, থানা-মোল্লাহাট, জেলা-বাগেরহাট, থানায় উপস্থিত হইয়া ঘটনার উক্ত বিবরণী দেন যে সুজন বিশ্বাস (৩০), পিতা-মৃত সৈয়দ বিশ্বাস, গ্রাম-বড় গাওলা, থানা-মোল্লাহাট, জেলা-বাগেরহাট, তাকে তাহার পিকআপ গাড়ির ড্রাইভার এবং সে তাহার ব্যবসায়িক ও আর্থিক কাজে বাহক হিসাবে সার্বক্ষনিক সহায়তা করে। গত ইং ২৮ জানুয়ারী -২০২৪ তারিখ সকাল অনুমান ০৯.০০ টার সময় উল্লেখিত পিকআপের ড্রাইভার সুজন যশোরে এমএমসি মাছের কোম্পানিতে তাহার পাঠানো মাছ পিকআপ গাড়িতে সরবরাহ করে ফিরে আসার পথে ফকিরহাট পুবালী ব্যাংক থেকে এমএমসি কোম্পনির পাঠানো ৮,৩৫,০০০/- (আট লক্ষ পয়ত্রিশ হাজার টাকা ) উল্লেখিত ড্রাইভার তাহার স্বাক্ষরিত চেকের মাধ্যমে ব্যাংক হইতে টাকা উত্তোলন করিয়া তাহার ম্যানেজার রমেন, পিতা-মৃত সন্তোষ সানা, গ্রাম-সোনাদানা, থানা-পাইকগাছা, জেলা-খুলনা সহ তাহার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান নাশুখালী বাজারের উদ্দেশ্যে পিকআপ গাড়ি যোগে টাকা সহ রওনা হয়। পথিমধ্যে ফকিরহাট থানাধীন ফলতিতা বাজারে পৌছাইলে তাহার ম্যানেজার রমেন উক্ত টাকার মধ্য থেকে ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা নিয়া তাহার পাওনাদার আজিজুল, পিতা-নওয়াব আলী হাওলাদার, সাং-চিতলমারী, থানা-চিতলমারী, জেলা-বাগেরহাট দেওয়ার জন্য পিকআপ থেকে ফলতিতা বাজারে নেমে যায়। বাকি ৬,৩৫,০০০/- (ছয় লক্ষ পয়ত্রিশ হাজার টাকা ) নিয়ে উল্লেখিত ড্রাইভার সুজন বিশ্বাস (৩০) নাশুখালী বাজারে তাহার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কিন্তু সুজন বিশ্বাস আশীষ কুমার মন্ডলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পৌঁছাতে দেরি করার কারণে আশীষ কুমার সুজন বিশ্বাসের ফোনে কল দিলে রিসিভ না করায় কিছুটা চিন্তাযুক্ত হয়। তার কিছুক্ষণ পর এক অপরিচিত পথচারী তাহার (আশীষ কুমার মন্ডলের) মোবাইলে ফোন করে বলে যে, তাহার ড্রাইভার সুজন কেন্দুয়া জোড়া ব্রীজের কাছে অসুস্থ্য অবস্থায় পড়ে আছে, তাহার নিকট থেকে টাকা ছিনতাই হয়ে গেছে। তখন সে দ্রুত কেন্দুয়া জোড়া ব্রীজের কাছে আসে এবং দেখিতে পায় যে, উক্ত আসামী সুজন মহাসড়কের পাশে থামানো পিকআপের কেন্দুয়া জোড়া ব্রীজের কাছে রাস্তার উপর বসে আছে। সুজন বিশ্বাস আশীষ কুমার মন্ডলকে বলে আমার কাছ থেকে ৬ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা অজ্ঞাত দুই ব্যক্তি জোরপূর্বক আমার কাছ থেকে ছিনতাই করে নিয়ে গিয়েছে। সুজনের কথায় আশীষ কুমার সন্দেহ হইলে মোল্লাহাট থানার ফল তিতা বটতলার পেট্রোল পাম্পের সিসি ক্যামেরায় চেক করা হলে সুজন বিশ্বাস এর বিবরণ অনুযায়ী ঐরকম কোন মোটরসাইকেল দেখা যায়নি। তাছাড়া সুজন বিশ্বাসের স্বভাব চরিত্র ও ভালো না। এ জন্য মোল্লাহাট থানায় আশীষ কুমার মন্ডল সুজন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অভিযোগ করেন।
উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে টাকা ছিনতাইয়ের এর ঘটনায় মোল্লাহাট থানার অফিসার ইনচার্জ আশরাফুল আলমের নেতৃত্বে চৌকস পুলিশ টিমের অভিযানে সুজন বিশ্বাসকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সুজন বিশ্বাসের সহযোগিতায় তার
কাছ থেকে টাকা নিয়ে ছিনতাই করে ৬ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা, আসামি সুজন বিশ্বাসের কু-পরামর্শে ও পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক আসামী মোহাম্মাদুল্লাহ শেখ বাঁধন (১৮), পিতা-রুবেল ইসলাম বরকত, গ্রাম-গাওলা, থানা-মোল্লাহাট, জেলা-বাগেরহাট, ঢাকা থেকে আসিয়া ড্রাইভার সুজন বিশ্বাসের সাথে পরামর্শ করিয়া নাটক বানিয়ে টাকা নিয়ে মোহাম্মাদুল্লাহ বাঁধন আবার ঢাকায় চলে যায়।
ড্রাইভার সুজন বিশ্বাসকে গ্রেফতারের পর তাহার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আধুনিক প্রযুক্তি সহায়তায় মোল্লাহাট থানার একটি চৌকস পুলিশ টিম ডিএমপি তেজগাঁও, মহাখালী ও আশুলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করিয়া আসামি মোহাম্মদুল্লাহ বাঁধন শেখকে গ্রেফতার করেন এবং গ্রেপ্তারের সময় মোহাম্মদুল্লাহ যে বাসায় ভাড়া থাকিতো সে ভাড়াটিয়া বাসা থেকে বাদী আশীষ কুমার মন্ডলের আত্মসাতকৃত ৬ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকার মধ্যে থেকে ৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। অবশিষ্ট টাকা উদ্ধারের জন্য চেষ্টা অব্যাহত আছে। উক্ত আসামীদেরকে ২ ফেব্রুয়ারি ২৪ তারিখে, বাগেরহাট বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।
