হারুন শেখ স্টাফ রিপোর্টার বাগেরহাট জেলা।
জুলাই বিপ্লবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরে বাগেরহাটের রামপালে মৎস্য ঘের দখলবাজরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। একের পর এক মৎস্য ঘের দখল হলেও ভুক্তভোগীরা অভিযোগে করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। এ এলাকার প্রধান অর্থকারী খাত মৎস্য চাষ হওয়ায় কতিপয় সন্ত্রাসী ঘের দখলবাজেরা সাধারণ মানুষদের জিম্মি করে দখলের মহোৎসব চালাচ্ছে।
বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগের পরে অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার বাঁশতলী ইউনিয়নের সর্বত্র কথিত রাজনৈতিক দলের নেতার মুখোশ পরে এরা ঘের দখল, বাড়ী দখল, রাস্তাঘাট দখল, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজিসহ নানান অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে। এরা কোন আইনকানুন মানা তো দূরে থাক নিজেরাই আইন করে নিয়েছে, ‘সব তারা খাবে’। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে এরা এতোটাই বেপরোয়া যে এদের থামানোর কেউ নেই।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বাঁশতলী গ্রামের মৃত রুস্তুম সরদারের ছেলে সরদার শরিফুল ইসলাম মুক্ত, গিলাতলা গ্রামের মৃত মতলেব শেখের ছেলে শেখ ইস্রাফিল, একই গ্রামের মৃত শিকদার হাকিমের ছেলে ও আবুল কালাম ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক শিকদার ফিরোজ, মৃত সরোয়ার তালুকদারের ছেলে তালুকদার মনিরুল, বাঁশতলীর মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে শেখ তুহিন, মৃত রুস্তুম মল্লিকের ছেলে মল্লিক সোহেল, মৃত সাজউদ্দিনের ছেলে সরদার ফিরোজসহ অজ্ঞাত ৪০/৫০ জন একটি দখলদারি কমিটি করে জলাভূমি, খাল- নালা দখল করছে। এদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী শেখ আল মামুন জানান, আমার বৈধ ৩ টি ঘের তারা দখল করে নিয়েছে। মিছিল করে করে তারা বাগদা চিংড়ীর পোনা ছাড়ছে। তিনি বলেন, বাঁশতলীর বনিবান্দা ঘের, নড়খালকুল ঘের, আইরোখোলা ঘের দখল করেছে। মালামাল মাছ লুট ও বাসা ভাংচুর করে ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি করেছে। তাদের সাথে কথা বললে তারা মারপিট করে। খুন করার হুমকি দেয়। পুরো বাঁশতলী গ্রামের সকল মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। থানা পুলিশের স্মরনাপন্ন হলেও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। এভাবে মুক্ত নলবুনিয়ার ঘের, বাঁশতলীর প্রায় প্রতি ঘেরই তার দখলে রেখেছে।
এসব নিয়ে এ প্রতিবেদক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোষ্ট দিলে ব্যানার নিয়ে মিছিল করে ঘের দস্যুরা।
এতসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে মুক্ত সরদার ও শিকদার ফিরোজের কাছে মৎস্য ঘের দখলের বিষয়ে ফোনে কথা হলে তারা জানান আমরাও জমির মালিকদের কাছে হারির টাকা দিয়ে জমি রেখেছি। মামুন ও জমি রেখেছে। এখানে ঘের দখল করা হয়নি। তারা সকলে মৎস্যঘের দখলের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে রামপাল থানার ওসি মো. সেলিম রেজার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাঁশতলী এলাকায় ঘের দখল সংক্রান্ত একাধিক লিখিত অভিযোগের কপি পেয়েছি। অভিযুক্তদের ডেকে বিষয়গুলোর মিমাংশা করা হবে। তবে জোরপূর্বক যে সব দখলবাজেরা এখনো ঘের দখলে রেখেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।