মোঃজাকির হোসেন নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুরে চালের টিন কেটে চুরির হিড়িক পড়েছে। মাত্র দুই মাসেই প্রায় ১০ টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে নগদ টাকা ও মালামাল সহ ন্যুনতম অর্ধ কোটি টাকার চুরি হয়েছে। এসব ঘটনার কোনটিরই হদিস করতে পারেনি পুলিশ। ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং চলমান ঈদ বাজার নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন।
সম্প্রতি পর পর দুই দিন একই এলাকায় দুইটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ সোমবার (২৫ মার্চ) দিবাগত রাতে শহরের নতুন বাবুপাড়া সাদ্দাম মোড় এলাকায় সেন্ট জেরোজা স্কুল সংলগ্ন একটি তৈরী পোশাকের শো-রুমে চুরি সংঘটিত হয়। এলাকার মূল সড়কের সাথে অবস্থিত ‘রাফাস্ কালেকশন’ নামের এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রাত আনুমানিক ৩ টার দিকে চোরেরা চালের টিন কেটে সিলিং খুলে ঢোকে। পরে নগদ ২২ হাজার হাজার টাকা ও ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা টাকা মূল্যের ৭০ টি থ্রি পিস চুরি করে নিয়ে গেছে।
এর আগের দিন রবিবার (২৪ মার্চ) দিবাগত রাতে একই ওয়ার্ডে নতুন বাবুপাড়া কলিম মোড় এলাকায় শহীদ জহুরুল হক সড়কে ‘বারী এন্ড ব্রাদার্স’ নামে একটি সার ও কীটনাশকের পাইকারী দোকানেও একইভাবে চুরি হয়েছে। এই দোকান থেকে প্রায় ১ লাখ টাকার বিভিন্ন কোম্পানির দামী কীটনাশক যেমন ইনতেফার তারেত, জাহিম ও হপারশর্ট চুরি হয়েছে। এই দোকানে ছয় মাস আগেও এরকম চুরি হয়েছে।
টিন কেটে চুরির সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটে স্বপ্ন সুপার সপে। এই ঘটনায় প্রায় ১৭ লাখ টাকার নগদ অর্থ ও মালামাল চুরি হয়। গত ১৪ মার্চ দিবাগত রাতে শহরের প্রধান রাস্তা বঙ্গবন্ধু সড়কে বাঙ্গালীপুর এলাকায় এই চুরি সংঘটিত হয়। এখানেও চালের টিন কেটে সিলিং খুলে ঢুকে চোরেরা। দিন রাত ব্যস্ততম ওই এলাকায় এমন ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এরও আগে শহরের প্রাণ কেন্দ্র শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কে জামে মসজিদের সামনে জমজম ফার্মেসীতেও একই কায়দায় প্রায় ৭ লাখ টাকার মালামাল ও নগদ অর্থ চুরি করা হয়েছে। এই দোকানে চালের টিনের সাথে লোহার এঙ্গেল দিয়ে নেট তৈরী করা ছিল। টিন ও সেই নেট কেটে সিলিং খুলে রশি দিয়ে ঝুলে ঝুলে নেমে এই চুরি করা হয়। বেশ দুর্ধর্ষ এই চুরি ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। কিন্তু তারপরও কোন রহস্য উন্মোচন হয়নি এই ঘটনার।
তাছাড়াও শহরের শহীদ তুলশীরাম সড়ক ও শেরে বাংলা সড়কেও একাধিক দোকানে একই কায়দায় চুরির ঘটনা ঘটায় চোরেরা। এসব কোন ঘটনারই কোন সুরাহা করতে পারেনি পুলিশ প্রশাসন। পূর্বের ঘটনাগুলোর কুল কিনারা না হওয়ায় চুরির সাথে সংশ্লিষ্টরা একের পর এক ঘটিয়ে চলেছে নতুন নতুন চুরি। শহরে পুলিশের টহল নিয়মিত ও সঠিকভাবে না হওয়ার কারণেই এমন চুরি হরহামেশা হচ্ছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা ও সচেতন মহল।
এবিষয়ে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহা আলম বলেন, গত দুই দিনে এসব চুরির বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে। আগের চুরির ঘটনাগুলোর বিষয়ে তিনি বলেন, তথ্য উপাত্ত অনুযায়ী অনুসন্ধানী তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ মিললেই জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। আর পুলিশী টহল নিয়মিত চলছে।