বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
ভোজ্য তেলের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের জটিলতায় দিশেহারা হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ, এক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পদক্ষেপে কোন ইতিবাচক সারা পরিলক্ষিত হচ্ছে না।
মাত্র হাতে গোনা কয়দিন আগে বোতল জাত সয়াবিন তেলের দাম লিটার প্রতি ৮ টাকা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আর তাতে করে সকল শ্রেণীর ভোক্তাদের কাঁধে চেপেছে বাড়তি জোয়াল, ফলে সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রার কষাঘাতে দিশেহারা, তারপর আবার মাত্র কয়েকদিন পরে আসছে মুসলমানদের অন্যতম সিয়াম সাধনার টানা এক মাসের রমজান আর এই রমজান মাস আসলে শুধু তেলই নয় সকল পণ্যের উপরে যেন ভৌতিকভাবে চেপে বসে মূল্য বৃদ্ধির তপ্তখঢ়া সবকিছু মিলে টানপরণের মধ্যে কোনরকম জীবন কাটাতে হচ্ছে। এ অবস্থার মধ্যে সাধারন মানুষের অভিযোগ সাবেক শোষিত সরকার পালিয়ে গেলে ও বাজার পর্যায়ে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মধ্য ঘাপটি মেরে রয়েছে তাদেরই প্রেতাত্মারা। অথচ দেশের প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পরে বলেছিল সাধারণ মানুষের জনজীবন সচল রাখতে সকল ধরনের নিত্য পণ্যের উপর আমরা কড়া নজরদারি রাখবো। অথচ সে সব কথা এখন যেন রূপকথার গল্পের শামিল হয়েছে। যার কারনে এই দুর্বিষহ অবস্থার মধ্য সাধারন মানুষের সমালোচনায় মুখর হয়ে আঙ্গুল তুলছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দিকে আবার ঠিক সেই মুহূর্তে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সরকার কোন উপায়ন্ত না পেয়ে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত সয়াবিন তেল মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে তেল আমদানি, উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট অনেকাংশে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। উল্লেখযোগ্য ভাবে একই সঙ্গে পাম, সানফ্লাওয়ার, ক্যানোলা তেলে ভ্যাট ও অগ্রিম কর কমানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পরিশোধিত ও অপরিশোধিত সয়াবিন তেল, পরিশোধিত ও অপরিশোধিত পাম তেল, অপরিশোধিত সানফ্লাওয়ার তেল, অপরিশোধিত ক্যানোলা তেলের ওপর আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশের অতিরিক্ত ভ্যাট থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলে স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতি থাকবে। এ ছাড়া অপরিশোধিত সানফ্লাওয়ার ও ক্যানোলা তেল এবং পরিশোধিত সানফ্লাওয়ার ও ক্যানোলা তেলের আমদানি পর্যায়ে অগ্রিম কর অব্যাহতি–সুবিধা পাবেন আমদানিকারকেরা। ভ্যাট কমানোর সিদ্ধান্তটি কার্যকর হবে। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
এর আগে ৯ ডিসেম্বর সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৮ টাকা বেড়েছিল। এর ফলে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল এখন বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকায়। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৪৯ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫৭ টাকা। খোলা পাম তেলের লিটারও ১৪৯ টাকা থেকে বেড়ে ১৫৭ টাকা হয়েছে। এ ছাড়া বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম এখন ৮৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৮১৮ টাকস
সয়াবিন তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে রাইস ব্র্যান অয়েল বা ধানের কুঁড়ার তেল রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে শুল্কারোপের প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। সংস্থাটি এ জন্য অপরিশোধিত ও পরিশোধিত—উভয় ধরনের কুঁড়ার তেল রপ্তানির ওপর ২৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) আরোপের সুপারিশ করেলেও ভোক্তাদের অভিযোগ বাজার পর্যায়ে ভৌতিক সিন্ডিকেট প্রেতাত্মারা সরব থেকে কারসাজি করছে।