লাখাই উপজেলা প্রতিনিধি
সারা দেশের ন্যায় লাখাই উপজেলাতেও এইচএসসি -আলিম ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। তবে ফলাফল প্রকাশের পর হতাশা নেমে এসেছে অত্র উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে।
জানা যায় লাখাই উপজেলা থেকে ৪ শত ৬৩জন পরিক্ষার্থী এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেন। এর মধ্যে পাশ করেছেন ১ শত ২৩জন, ফেল করেছে ৩ শত ৪০জন। এর মধ্যে উপজেলার গড় পাসের হার মাত্র ২৬.৫৭ শতাংশ, যা সারাদেশের গড় পাসের হারের (৫৮.৮৩%) অর্ধেকেরও কম এবং তাহা হবিগঞ্জ জেলার মধ্যে সর্বনিম্ন।
বিশেষ করে উপজেলার বেশ কয়েকটি কলেজে পাসের হার অত্যন্ত নাজুক। সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হলো—পুরো উপজেলায় কোনো শিক্ষার্থীই জিপিএ-৫ (A+) পায়নি।
লাখাই মুক্তিযোদ্ধা সরকারি ডিগ্রি কলেজ থেকে এবছর ৩শত ৭৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে মাত্র ১০২ জন। মনতৈল মডেল কলেজে ৩১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ২ জন, ভবানীপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজে ১৮ জনের মধ্যে পাস করেছে ১ জন। মোড়াকরি হাই স্কুল এন্ড কলেজে ২০ জনের মধ্যে পাস করেছে মাত্র ১ জন। একমাত্র ব্যতিক্রম জিরুন্ডা মানপুর তোফাইলিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, যেখানে ২৩ জনের মধ্যে ১৭ জন পাস করেছে।
এবিষয়ে জানতে লাখাই মুক্তিযোদ্ধা সরকারি ডিগ্রী কলেজ এর অধ্যক্ষ মোহাম্মদ হামজা মাহমুদ এর ব্যবাহৃত মুঠোফোনে কল দিলে রিসিভ না করাই বক্তব্য নেওয়া যায় নি।
মোড়াকরি হাইস্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নুরুল ইসলাম এর সাথে কথা হলে তিনি জানান “আমাদের প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালে কলেজ হিসেবে অনুমোদন পেলেও এখন পর্যন্ত কোনও প্রভাষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। স্কুলের শিক্ষক দিয়েই কলেজের ক্লাস পরিচালনা করছি। এছাড়া কোন সরকারি অনুদানও এখনো পাইনি।”
লাখাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, “নতুন কলেজ অনুমোদনের পর নানা জটিলতায় এখনো প্রভাষক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি।আমরা বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি।”
স্থানীয় শিক্ষক ও অভিভাবকরা মনে করছেন, উপজেলার শিক্ষা ব্যবস্থায় মানসম্পন্ন শিক্ষকের অভাব, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা, পরিবারগুলোর শিক্ষায় অনাগ্রহ এবং নিয়মিত পাঠদানের ঘাটতি—এসবই এই ভয়াবহ ফলাফলের মূল কারণ।
তাঁরা আরও বলেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আগামী বছরগুলোতে আরও ভয়াবহ ফলাফল দেখতে হতে পারে। বিশেষ করে শিক্ষক নিয়োগ, নিয়মিত ক্লাস ও সরকারি বরাদ্দ ছাড়া এই অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়।