ঢাকাTuesday , 29 April 2025
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অভিযোগ
  4. অর্থনীতি
  5. আইন আদালত
  6. আটক
  7. আন্তর্জাতিক
  8. আবহাওয়া
  9. ইতিহাস
  10. কবিতা
  11. কুষ্টিয়া
  12. কৃষি
  13. খুন
  14. খেলাধুলা
  15. চাকুরী
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দাওয়াতে অবহেলার শাস্তি।

দেশ চ্যানেল
April 29, 2025 2:23 am
Link Copied!

লেখক: মুফতি খোন্দকার আমিনুল ইসলাম আবদুল্লাহ

ভূমিকা

ইসলাম শুধু নিজে নেক হওয়াকে যথেষ্ট মনে করে না, বরং অন্যকেও ভালোর দিকে আহ্বান করা এবং খারাপ কাজ থেকে ফিরানোকে অপরিহার্য দায়িত্ব মনে করে। একে ইসলামের ভাষায় বলে ‘আমর বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকার’। বর্তমান সময়ের সামাজিক অবক্ষয় ও নৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে এর গুরুত্ব আরো বেড়ে গেছে। তাই আমাদের জানা দরকার — দাওয়াতি দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে কী শাস্তি হতে পারে এবং তা কত বড় গুনাহ।

দাওয়াতের মাধ্যমে সওয়াবের অর্জন

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন:

> “যদি কেউ কোনো সৎকর্মের দিকে আহ্বান করে, তবে সে সেই কাজ করার সমপরিমাণ সওয়াব পাবে।”

(সহীহ মুসলিম)

এখান থেকে বোঝা যায়, নিজে কোনো কাজ করতে সক্ষম না হলেও, যদি কাউকে ভালো পথে আহ্বান করি এবং সে তা গ্রহণ করে, তাহলে তার আমলের সওয়াব আমরাও পাব। এটি আল্লাহর অশেষ রহমত। সামান্য পরামর্শের মাধ্যমে অগণিত সওয়াব অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে।

দাওয়াত দিলে গজব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নৌকার একটি সুন্দর উপমা দিয়ে বুঝিয়েছেন:

> “নৌকায় কিছু লোক ছিল। নিচের তলায় যারা ছিল, তারা পানি আনতে উপরের তলায় আসত, এতে উপরের লোকেরা কষ্ট পেত। তখন নিচের লোকেরা বলল, আমরা আমাদের অংশে গর্ত করব। যদি উপরের লোকেরা তাদের বাধা দেয়, সবাই বাঁচবে। আর বাধা না দিলে সবাই ডুবে মরবে।”

(সহীহ বুখারি)

এই উদাহরণ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, সমাজের অন্যায় ও অনাচার দেখেও যদি আমরা নীরব থাকি, তাহলে এর পরিণামে পুরো সমাজ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। তাই প্রতিটি মুমিনের দায়িত্ব হলো অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করা এবং সম্ভব হলে তা প্রতিরোধ করা।

নীরব থাকার ভয়াবহতা

কুরআনে ইহুদি জাতির একটি ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন:

> “যখন তারা উপদেশ অগ্রাহ্য করল, তখন আমি মুক্তি দিলাম তাদেরকে যারা নিষেধ করেছিল এবং যারা জুলুম করেছিল, তাদেরকে কঠিন শাস্তিতে নিপতিত করলাম।”

(সূরা আরাফ: ১৬৫)

ইহুদিরা শনিবারে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ফাঁকি দিয়ে মাছ ধরত। যারা নিষেধ করেছিল তারা বেঁচে গেল, আর যারা নীরব ছিল বা সহ্য করেছিল, তারা আল্লাহর গজবে ধ্বংস হলো। এ ঘটনা আমাদের শিক্ষা দেয়, অন্যায় দেখে চুপ থাকা কোনোভাবেই বৈধ নয়।

দাওয়াত না দেয়ার ক্ষতি

অনেক সময় মনে হতে পারে, “কথা বললে লাভ কী, কেউ শুনবে না।” কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে এটি অজুহাত নয়। কারণ:

১. আমাদের দায়িত্ব শুধু বলা: ফলাফল আল্লাহর হাতে। আমরাও যদি বলি না, তবে দায়িত্ব পালিত হবে না।

২. হয়তো কারো হৃদয়ে পরিবর্তন আসবে: আন্তরিকভাবে বলা কথা কখনও কখনও মানুষের মনে গভীর রেখাপাত করে। তাই দাওয়াত দেয়া কখনো বৃথা যায় না।

উপসংহার

ইসলামের দৃষ্টিতে দাওয়াত ও নসীহত শুধু একটি সুন্দর কাজ নয়, বরং এক অপরিহার্য ইবাদত। এই দায়িত্ব পালনে অবহেলা করলে দুনিয়া ও আখিরাতে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হতে পারি। আর যদি আন্তরিকভাবে আদেশ-নিষেধের দায়িত্ব পালন করি, তাহলে আল্লাহর রহমত ও গজব থেকে নিরাপদ থাকা যাবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে দায়িত্বশীল বানিয়ে আমর বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকারের দায়িত্ব পালনের তাওফিক দান করুন। আমীন।

উৎসসমূহ:

আল-কুরআন: সূরা আরাফ (১৬৪-১৬৫), সূরা মায়িদা (৭৮-৭৯), সূরা হূদ (১১৬)

সহীহ মুসলিম, সহীহ বুখারি

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
  • Design & Developed by: BD IT HOST