রুপম চাকমা বাঘাইছড়ি উপজেলা প্রতিনিধি
পাহাড়ে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশ ও বেতের তৈরি বিভিন্ন পন্য সামগ্রী,বাজারে প্লাষ্টিক, মেলামাইন ও স্টিলের তৈরি পণ্যের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে ওই পণ্য, ফলে এসব পেশার সাথে জড়িত মানুষগুলোকে আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়ে দিন অতিবাহিত করতে হচ্ছে, নিজ পেশার সাথে টিকতে না পেরে চট্রগ্রাম ও ঢাকায় ভিন্ন পেশায় চলে গেছে বাঘাইছড়ি উপজেলার পাঁচ শতাধিক।
শিল্পের কারিগর, পুঁজি স্বল্পতা, বাঁশ ও বেতের উৎপাদন হ্রাস, আর্থিক অসচ্ছতা, উপকরণের অভাবেই আজ বিলুপ্তির পথে।ঐতিহ্যবাহী বাঁশ বেত শিল্প, সারা দেশের মত একসময় ব্যাপক প্রচলন ছিল বাঁশের তৈরি কুলা,ঝুড়ি,হাঁস মুরগির খাঁচা, বেতের চেয়ার, ধামা,চালুনি, হাতপাখা, কিন্তু বাজারে প্লাষ্টিক, মেলামাই ও স্টিলের তৈরি বিভিন্ন সামগ্রীর চাগিদা বেড়ে যাওয়ায় বাঁশ ও মাটির তৈরি জিনিষগুলো প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে।উপজেলার রুপাকারি,মগবান, বঙ্গলতলি, সাজেকসহ আরও কয়েকটি এলাকর বংশপরস্পরায় বাঁশ ও বেত শিল্পের সঙ্গে জড়িত ছিল প্রায় ২০০শতাধিক পাহাড়ি পরিবার। কিন্তু বতমানে বেশিরভাগই পরিবারের সদস্যরাই পেশা বদল করে জীবিকা নিবাহ করছেন।নিত্য নতুন প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী তৈরি করে থাকেন যা উপজেলার বিভিন্ন হাচ-বাজারে এবং গ্রামগঞ্জে কাঁধে করে ফেরি করে বিক্রি করে থাখে, এমনকি তৈরি এসব কুটির শিল্প সামগ্রী বেশ কয়েকটি দেশে যাচ্ছে। সাজেক ইউনিয়নের বামে বাইবাছড়া গ্রামের কিনাচান চাকমা জানান, এক সময় তাদের কাছে দশ-বারো করে বাঁশ ও বেত শিল্পের কারিগর ছিল। তধনকার দিনে একজন কারিগরের বেতন ছিল প্রতিদিন দুই শত থেতে আড়াইশত টাকা। এখনকার দিনে সে কারিগরের বেতন দিতে হয় চার’শ থেকে পাঁচ শত টাকা। তাও সিজনের সময় পাওয়া যায় না, তারা আরো জানান, কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাঁশ ও বেতের তৈরি জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। আগে একটি বাঁশের দাম ছিল পাচঁ থেকে ১০ টাকা, সেখানে এখন প্রতিটি বাঁশ কিনতে বিশ থেকে ৩০ টাকায়, আর নির্বিচারে বন জঙ্গল উজার হওয়ার ফলে বেত গাছ খুব একটা চোখে পড়ে না। তাই এ শিল্পের সাথে জড়িত পরিবারগুলো আর্থিক অনাটনের মধ্যে দিন অতিবাহিত করতে হচ্ছে বলে অনেকেই মন্তব্য করেন।
বাঘাইছড়ি উপজেলার হাগলাছড়া এলাকার জীবন ময় চাকমা জানান কয়েকবছর হলো পৈত্রিক পেশা ছেড়ে দিয়ে এখন দিন মজুরি করে চলতেছি। তিনি বলেন বেত শিল্পে টাকা বিনিয়োগ করে খুব একটা লাভ হতো না। এখন একটি আম ও কলা বাগান কাজ করি,দিনবাদে চার-পাঁচ’শ রোজগার হয়। পরিবার নিয়ে খেয়ে পড়ে চলছি। তবে যে দিন কাজ না থাকে সে দিন অনেক কষ্ট হয়। তবে আগের চেয়ে অনেক ভালো আছি বলে তিনি জানান।