পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি
পঞ্চগড়: জেলায় পৃথক উপজেলায় মাটিচাপা অবস্থায় টাবুল বর্মণ (৪৮) ও হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নুরুল ইসলাম (৪০) নামে দুই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহগুলো উদ্ধারের পর এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে।
শুক্রবার (০২ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টায় পঞ্চগড় সদর উপজেলার চালকাহাট ইউনিয়নের একটি আম বাগান থেকে টাবুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এদিকে জেলার বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের সাঁওতালপাড়া ঘাট থেকে নুরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, নিহত টাবুল বর্মণ পঞ্চগড় সদরের মাগুরা ইউনিয়নের লাখেরাজ ঘুমতি এলাকার হাগিরাম বর্মণের ছেলে। পেশায় তিনি একজন কৃষক।
অপরদিকে, নুরুল ইসলাম বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের মুসলিমপুর কাউয়া খাল এলাকায় মৃত ইয়াসিন আলীর ছেলে। পেশায় তিনি একজন ভ্যান চালক।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, টাবুল বর্মণের একই এলাকার (লাখেরাজ ঘুমতি) মন্টু রায়ের স্ত্রী ললিতা রানীর (৩৫) সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। এদিকে, গত ৩১ জানুয়ারি (বুধবার) বিকেলে টাবুল নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে আলসিয়াখানা বাজার গেলে নিখোঁজ হয়ে যান। পরে গভীর রাত হওয়ায় তিনি বাড়িতে না ফেরায় বৃহস্পতিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) টাবুলের ছোট ভাই গোবিন্দ চন্দ্র বর্মণ পঞ্চগড় সদর থানায় একটি জিডি করেন। এরমধ্যে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে পরকীয়ার বিষয়টি জানলে ললিতা রানী ও তার মেয়ে মনিকা এবং জামাই প্রভাত চন্দ্র রায়কে (২৬) জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়।
এদিকে, শুক্রবার (০২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ললিতার দেওয়া তথ্যমতে টাবুলের মরদেহ চালকাহাট ইউনিয়নের ডলোপাড়া গ্রামের একটি আমবাগানের খাল থেকে মাটি চাপা অবস্থায় উদ্ধার করে। তবে ললিতার আটকের পর তার স্বামী মন্টু রায় আত্মগোপনে চলে যান।
মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জতিশ চন্দ্র রায় বাংলানিউজকে বলেন, নিখোঁজের বিষয়টি জানার পর থানা পুলিশকে অবগত করা হয়। পরে পুলিশের পরামর্শে জিডি করা হলে থানা পুলিশের সহায়তায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, জেলার বোদা উপজেলায় মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের করতোয়া নদী হতে নিখোঁজের সাতদিন পর নুরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা গেছে, গত ২৭ জানুয়ারি ভ্যান নিয়ে বের হয়ে নিখোঁজ হন তিনি। নিখোঁজের দুদিন পরে দেবিগঞ্জ সড়কে পাশে অটোভ্যানটি পাওয়া গেলেও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে থানায় একটি জিডি করে পরিবার। এরমধ্যে স্থানীয়রা সাঁওতালপাড়া ঘাটে করতোয়া নদীতে একটি হাত-পা বাঁধা মরদেহ ভাসতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করলে তার পরিচয় শনাক্ত হয়।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় ও বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক মরদেহ উদ্ধারের বিষয়গুলো নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে, একইসঙ্গে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্তসহ গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।