আব্দুল্লাহ আল মামুন পিন্টু , টাঙ্গাইল :
নাম আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে চাঁনু মিয়া। চাঁনু পাগলা নামে পরিচিত। তার বয়স (৫১)। চাঁনু মিয়া ভারসাম্যহীন একজন মানুষ। বাবা মায়ের পাঁচ বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সে সবার ছোট। ভোর হলে চাঁনু মিয়াকে আর পাওয়া যায় না তার বাড়িতে। নিজের ঘর তালা দিয়ে বের হন অজানা গন্তব্যে। যেদিকে মন চায় সেই দিকেই ছুটে বেড়ান তিনি। রাস্তায় ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন দেয়ালে আঁকাতে থাকেন মুক্তিযোদ্ধা ভিত্তিক নানা ধরণের ছবি। তার এ নিপুণ হাতে ছোঁয়ায় তুলে ধরেন মুক্তিযোদ্ধাদের অসাধারণ ছবি।
তার এ ছবি দেখে সবাই প্রশংসা করছেন। জেলা সদরের মো.শাহীন চৌধুরী বলেন, আমি ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি চাঁনু মিয়া কচুরিপানা ও কয়লা দিয়ে শহরের বিভিন্ন দেয়ালে ছবি আঁকতেন। তার ছবি আঁকা খুবই সুন্দর। তার এ ছবি আঁকা দেখে নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা উৎসাহিত হবেন। তাকে সরকারিভাবে সহযোগিতা করলে আরও ভালো ছবি আঁকতে পারবেন।
টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর বৈল্লা এলাকার ইকবাল হোসেন আলী জানান, আমি ছোট থেকেই চানুকে চিনি। সে বিভিন্ন দেয়ালে গাছের পাতা, কয়লা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক ছবি আঁকেন। তার এ ছবি আঁকা দেখে অনেক ভালো লাগে। এছাড়াও তিনি স্বাধীনতার ছবি ও বঙ্গবন্ধুর ছবি আঁকেন। তাকে যদি সরকারি ভাবে সহযোগিতা করা হয় তাহলে তিনি আরও ভালো চিত্রশিল্পী হতে পারবেন।
রিকশা চালক ইদ্রিস আলী বলেন, আমি শহরের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে রিকশা চালাই। তখন চাঁনু পাগলাকে বিভিন্ন দেয়ালে ছবি আঁকতে দেখি। যখন যাত্রী না থাকে আমি রিকশা চালানো বন্ধ করে তার ছবি আঁকা দেখি অনেক ভালো লাগে। চাঁনু দেয়ালে দেয়ালে ছবি আঁকেন। যে দেয়ালে ছবি আঁকেন অনেক সময় তাকে বাসার মালিকরা গালিগালাচ করেন। তারপরও চাঁনু মিয়া থেমে জাননি। তার প্রতিভা দেখে অনেকেই মুগ্ধ। তাকে সরকারি ভাবে সহযোগিতা করলে আরও অনেক দূর যেতে পারবে। এমন ছবি তিনি কিভাবে আঁকেন চাঁনু মিয়া ভারসাম্যহীন হওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সাংস্কৃতিক কর্মী জসিম উদ্দিন বলেন, চাঁনু মিয়া অনেক সুন্দর ছবি আঁকতে পারেন। সে একজন ভারসাম্যহীন মানুষ তারপরও একজন পেশাদার চিত্রশিল্পীর মতো ছবি এঁকে থাকেন। আমি নিজেও মুগ্ধ তার এতো সুন্দর প্রতিভা দেখে। সরকারিভাবে যদি তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। আমার মনে হয় সে আরও ভালো ছবি আঁকতে পারবেন। তিনি টাঙ্গাইলের সুনাম অর্জন করতে পারবেন।
টাঙ্গাইল জেলা কালচারাল অফিসার মো. এরশাদ হাসান বলেন, আমি নিজেও দেখেছি চাঁনু মিয়া ভালো ছবি আঁকেন কেউ যদি চাঁনু মিয়ার দায়িত্ব নিয়ে শিল্পকলা একাডেমি বা জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন। আমাদের যতটুকু সুযোগ আছে অবশ্যই চেষ্টা করবো তাকে সহযোগিতা করার।