বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
আজ খুলনা জেলার ১৪৩ তম জন্মদিন তবে দিবসটি উপলক্ষে দেশের চলমান তীব্র তাপদহে মানব ও প্রাণীকুলের ওপর প্রভাব পড়ার কারণে অন্যান্য বছরের ন্যায় তেমন উৎসব উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত না হলেও বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি ও আমরা খুলনা বাসীর পক্ষ থেকে পৃথক ভাগে আলোচনা সভার আয়োজন করে নব প্রজন্মের মধ্য সংক্ষিপ্তভাবে খুলনা জেলার ইতিহাস তুলে ধরে বক্তারা বলেন ৪ হাজার ৩শত ৯৪ দশমিক ৪৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ৩৫ লাখ ৪৫ হাজার জনগণের বসতি নিয়ে আমাদের এই দক্ষিণ বাংলার প্রাণ প্রিয় খুলনা জেলা হযরত পীর খাজা খানজাহান আলী (র,) স্মৃতি বিজড়িত ভৈরব -রুপসা নদের কোল ঘেঁষে বয়ে চলা বিধৌত খুলনার ইতিহাস ঐতিহ্য গৌরব মন্ডিত খুলনার নামকরণের উৎপত্তি হয়েছিল তদন্তণ ধনপতি সওদাগরের স্ত্রী খুলনার নামে নির্মিত খুলনেশ্বরী মন্দির থেকে খুলনা নামের উৎপত্তি হয়।
আর আজও আমরা সেই ১৪৬ বছরের পূর্বের ইতিহাসকে সাক্ষী রেখে খুলনাকে বুকে ধারণ করে নিয়ে চলছি আর সেই থেকে নামকরণ করে জন্ম হয়ে পদচারনায় ইতিহাসের নানান কাহিনী বুকে ধারণ করে পথ চলতে শুরু করে খুলনা।
তবে এরই মধ্যে দেশজুড়ে অনেক ঘটনা ঘটেছে ১৯৫২ মহান বাংলা ভাষার জন্য ভাষা আন্দোলনে অসংখ্য শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলা ভাষা পুনরুদ্ধার হয়েছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লক্ষ শহীদ ও তিন লক্ষ বিনঙ্গনার সম্ভ্রম হানির বিনিময়ে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিল।
তবে খুলনা এক সময় অবহেলিতভাবে পড়ে থাকলেও দেশের অন্যতম দেশপ্রেমী প্রাণপুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের একান্ত প্রচেষ্টার কারণে একের পর এক ধারাবাহিকতার সাথে খুলনার উন্নয়ন হয়েছে। অপরদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নিলেও যৌবনের অধিকাংশ সময় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ স্বপরিবারে অধিক সময় পার করেছেন খুলনা শহরে তাই খুলনা শহরে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার অসংখ্য স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। অপরদিকে ব্রিটিশের হাত ধরে গড়ে উঠেছে আইন আদালত, মহাকুমা, রেজিস্ট্রি অফিস, পৌরসভা, ডাকবাংলা , রেলস্টেশন, এখনো আছে বিদ্যমান লঞ্চঘাট বি আই ডব্লিউ টি এ একটু দূরেই অবস্থিত দেশের অন্যতম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন পাশাপাশি রয়েছে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরবাড়ি ফুলতলার দক্ষিণ ডিহিতে এবং রাজনীতির অন্যতম প্রাণপুরুষ রূপসা নদীর তীরে নগরীর লবণ চোড়ায় খানএ সবুরের বাড়ি এবং খানএ সবুরের নামে আজও একটি সড়ক খ্যাতো রয়েছে। তাছাড়া দেশ স্বাধীনের পূর্বের থেকেই খুলনা জুড়ে ছিল অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান খুলনা রুপসা নদীর কোল ঘেঁষে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছিল দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরি যেখানে হাজার হাজার শ্রমিকদের আনাগোনায় এবং কর্মমুখরতায় ছিল মুখরিত তবে আজ সেটা মাত্র শুধুই কালের সাক্ষী। অপরদিকে ছিল হার্ডবোর্ড মিল কটন মিল নিউজপ্রিন্ট সহ সরকারি বেসরকারি বেশ কিছু পাটকল খুলনার স্টিমার ঘাট থেকে চলত স্টিমার গাজীরকেট শহীদ বিলায়েত এবং অসংখ্য রূটের বড় বড় লঞ্চ আর এ সকল শিল্প গুলো রাঘব বোয়ালদের কালো ছোবলে এখন মাত্র শুধুই কালের সাক্ষী হয়ে বর্তমান নতুন প্রজন্মের কাছে স্মৃতি।
রূপসা নদী দিয়ে চলতো পাল তোলা নৌকা সুন্দরবন থেকে গোলপাতা গরান ও সুন্দরী কাঠ বোঝাই করে নিয়ে আসতো গহনা নৌকা আজকাল আর দেখা যায় না কোথাও চোখে পড়ে না সেই স্মৃতি, বাজে না কোন মিলের সাইরেন ফলে খুলনার অধিকাংশ শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে এখন ভঙ্গুর দশায়। তবে সকল স্মৃতি ও সব কিছু বন্ধ হলেও নতুন আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়েছে খুলনায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য বিনোদন কেন্দ্র যেমন গিলাতলা চিড়িয়াখানা শিশু পার্ক আধুনিক রেলস্টেশন আন্তজেলা বাস টার্মিনাল চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শেখ শহীদ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল বিশ্ববিদ্যালয় কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সহ আধুনিকতম অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন হয়েছে সড়ক মহাসড়ক এক সময়কার অন্ধকার খুলনা এখন আধুনিক বৈদ্যুতিক আলোয় ঝলমল চলমান রয়েছে শেখ হাসিনা ক্যান্সার হসপিটাল ডেন্টাল হসপিটাল সহ আরো অনেক উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান যেখানে খুলনা জেলার অসংখ্য শিক্ষিত বেকার যুবকদের হবে কর্মসংস্থান এর বন্দোবস্ত দূর হবে বেকারত্বের অভিশাপ আর এসব কিছুই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার একনিষ্ঠ অদম্য অবদান তাছাড়া আরো বেশ কিছু উন্নয়ন কর্মকাণ্ড রয়েছে চলমান এবং খুলনাকে সর্বোচ্চ উন্নয়নের শীর্ষের অবকাঠামর রূপ দান করতে সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে সেই প্রত্যাশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।