বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
আজ সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের মানুষদের পরম পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব।
দেশজুড়ে চলমান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লাখ লাখ মানুষদের কথা বিবেচনায় রেখে প্রতিবছরের ন্যায় নগর জুড়ে শোভাযাত্রা র্যালি ও ধর্মীয় আলোচনা সভা মহাসমারহের সাথে পালন না করে নগরের বিভিন্ন মন্দিরে মন্দিরে অনারম্ভরভাবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব তিথির মহোৎসব আয়োজন করে অনুষ্ঠানের অর্থ বন্যা দুর্গতদের মাঝে বিতরণ করার কথা জানিয়েছেন খুলনা মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের কর্মকর্তাগণ। পঞ্জিকার তিথি নক্ষত্র অনুযায়ী ২৬ আগস্ট সোমবার দিবাগত মধ্যরাত পর্যন্ত ভক্তগণ সারাদিন নির্জলা উপবাস রেখে ভগবানের আবির্ভাব লগ্নে ইসকন ও বিভিন্ন মন্দির সহ অনেকের বাসা বাড়িতে শ্রীকৃষ্ণের অভিষেক পূজা অর্চনা শেষে মধ্যরাতে অর্চনের চরণামৃত ও প্রসাদ গ্রহণে অনুকল্প করবেন। পরদিন মঙ্গলবার যথারীতি সকালে
নন্দ উৎসব পালন হবে মন্দিরে মন্দিরে প্রসাদ বিতরণ করা হবে। সাথে দেশ তথা দেশের বন্যা কবলিত অসহায় মানুষদের এই দুর্যোগ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য পরমেশ্বর ভগবানের শ্রীচরণে প্রার্থনা করা হবে।
শাস্ত্রে কথিত রয়েছে যে শাস্ত্রীয় পূড়াণ মতে ত্রেতা যুগের মধ্যভাগে ভাদ্র মাসের শুক্লাপক্ষে অষ্টমী তিথিতে রোহিনী নক্ষত্রে গভীর রাতে দারকা নগরীর মাতুল কংসের কারাগারে অধর্মের বিনাশ আর ধর্ম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আবির্ভূত হন পরমেশ্বর।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী তিথির গুরুত্বপূর্ণ মাহাত্ম্য জানার লক্ষ্যে নাগরিক ভাবনার প্রতিবেদকের এক সাক্ষাৎকারে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীর মাহাত্ম্য পর্যালোচনা করেন খুলনা নগরীর গল্লামারিস্থ আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ ইসকনের অন্যতম সেবক তিতিক্ষা দাস ব্রহ্মচারী শ্রীমদ্ভগবত গীতার একটি শ্লোকের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা তুলে ধরে বলেন
যদা যদা হি ধর্মস্য
গ্লানির্ভবতি ভারত।
অভ্যুত্থানাম ধর্মস্য তদান্তানং
সৃজম্যহম।।
পরিত্রনায় সাধনাং
বিনাশায় চ দুষ্কৃতাম।
ধর্মসংস্থাপনার্থায়
সম্ভাবামি যুগে যুগে।।
অর্থাৎ পৃথিবীজুড়ে যখন অধর্মের উদ্ভব হয় ধার্মিক সাধু ব্যক্তিদের প্রতি অন্যায় অবিচার হয় এবং অনাচার ব্যভিচারে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। পৃথিবীর মানুষ অধর্মকে অবলম্বন করে অন্যায় ভাবে অন্যর অর্থ আত্মসাৎ ধনসম্পত্তি লুট পাপ ব্যাভিচারে ধরাধাম পরিপূর্ণ হয়ে যায় তখন ভগবান সাধুদের পরিত্রাণ করার লক্ষ্যে ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে পৃথিবীতে আবির্ভূত হন।আর এমন অবস্থায় যদি প্রত্যেক মানুষ পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চরণে সমর্পিত হয়ে নিজেদের সকল অন্যায় অপরাধ দোষ ভুল ত্রুটি সঞ্চিত সকল পাপকর্মের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করি তাহলে পরম করুনাময় ভগবান অবশ্যই আমাদের ভালো কাজের প্রেরণা দান করবে দুষ্টু আত্মার কুফল দমন করে শিষ্টের পালন এবং ধর্ম রক্ষার্থে আমাদের পাশে থেকে কৃপা করে সকল জীবকুলের মধ্য শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং পারস্পরিক আত্মার বন্ধনে মিলিত হওয়ার সুবুদ্ধি প্রদান করবেন। যাতে করে বিশ্বময় চলমান এই পরিস্থিতি থেকে আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি।