বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
এ বছর শাস্ত্র বিধি অনুযায়ী পঞ্জিকা মতে অষ্টমী ও নবমী পূজা একই দিনে তিন ঘণ্টার ব্যবধানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে নগরীর বিভিন্ন মন্দিরে সকাল ছটা থেকে দশটা অবধি ভক্তরা মুখরিত রয়েছেন মা দেবী দুর্গা দুর্গতিনাশিনীর শ্রী চরণের পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার উদ্দেশ্যে। যথারীতিভাবে প্রথম পর্বের খুলনা নগরীরর ভৈরব নদীর কল ঘেঁষে গড়ে ওঠা রুপসা উপজেলার রাজাপুর গ্রামে শত বছরের প্রাচীন ভারত সেবাশ্রম কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
যা অতি প্রাচীন আমল থেকেই রামকৃষ্ণ মিশনে অষ্টমী পূজার দিন কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তবে এ বছর তিথি অনুযায়ী একই দিনে অষ্টমী অনবমী পূজো অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে প্রাত লগ্নে ভক্ত মন্ডলী শুদ্ধাচার মনে দেবী মহামায়ার পূজা নিবেদন করতে মন্দিরে মন্দিরে এসে হাজির হয়েছে। এবং ভক্তদের সমস্বরে উচ্চারিত হতে শোনা গেছে ওম যাদেবী সর্বভূতেষু মাত্রিরূপেণ সংস্থিতা নমস্তেশ্যৈ নমস্তেশ্যৈ নমস্তেশ্যৈ নমো নমঃ।
পুরোহিত ও ভক্ত কন্ঠে দেবীর এই মন্ত্র সমস্বরে মুখরিত সকাল থেকেই নগরীর প্রতিটি পূজা মন্ডপ।
আজ ১১ অক্টোবর শুক্রবার প্রথম পর্বে প্রাতে ৫ টা ৫৯ মিনিটে কল্পারম্ভও বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে মহা অষ্টমী পূজা শুরু হয়েছে তবে এবছর পঞ্জিকা মতে একই দিনে একই তিথিতে অষ্টমী ও নবমী তিন ঘন্টার ব্যবধানে পূজার পুষ্পাঞ্জলি মা দেবী দুর্গার শ্রীচরণের নিবেদন করেছে ভক্ত মন্ডলী।
আজকের দিনের প্রথম পর্ব অষ্টমীর শাস্ত্রমতে মা দেবীদুর্গার সম্মুখে কুমারী পূজার প্রথা পালিত হচ্ছে ।
তাছাড়া শাস্ত্রের রিতি অনুযায়ী সকালে কুমারী পূজা, অঞ্জলি প্রদান এবং এবার সকালেই সন্ধিপূজার মধ্য দিয়ে দেবীর অষ্টমী পূজার বিধান সমার্পণ করা হয়েছে । সনাতন শাস্ত্রে নারীকে শক্তি আর সামৃদ্ধির প্রতীকও বিবেচনা করা হয়। একইসঙ্গে নারীর চিরন্তন শুদ্ধতার প্রতীক মা ভগবতীর বেশপ্রকাশ।
তাছাড়া মহা অষ্টমী পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে ১৬ টি উপকরণ দিয়ে এরপর অগ্নি জল বস্ত্র পুষ্প ও বাতাস এই পাঁচ উপকরণে দেওয়া হয় কুমারী মায়ের পূজা।
অর্ঘ্য প্রদানের পর দেবীর গলায় পড়ানো হয়েছে পুষ্প মাল্য। কুমারী পূজা শেষে ভক্তরা মহাঅষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন করেছেন। এবং পরবর্তী ক্ষনে নবমী পূজার অঞ্জলি দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রয়েছে মন্দির প্রাঙ্গণে।
এ সময় মন্দিরে আগত ভক্তদের নিকট তিন ঘন্টার ব্যবধানে অষ্টমী মহানবমী পূজার বিধান ও তাদের মনের আর্তি এবং দেবীর প্রতি মনস্কামনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ভক্তরা তাদের মনের সংকল্প ব্যক্ত করে বলেন বিশ্বব্যাপী যে অশান্তির অগ্নির দাবানলে দগ্ধিত হচ্ছে তার থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছি। এবং আমাদের সমাজে যে সকল মানুষের মাঝে আসুরিক মনোবৃত্তি রয়েছে তাদের শ্রদ্ধাচার মানসিকতা দানের জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে।
মা প্রতিবছর স্বর্গ ছেড়ে মর্ত্যলোকে আমাদের মাঝে আসেন প্রতিটা মানুষের মনের শান্তি সমৃদ্ধি ও শুবুদ্ধি উদয় অভাব অনটন দুঃখ দুর্দশা নিবারন করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে।
আজ মহা অষ্টমী ও নবমী তিথিতে নগরীর ১৩৫টি মন্ডপে অষ্টমী, নবমী পূজার অঞ্জলি প্রদান করেছেন মায়ের ভক্তরা।
আগামীকাল১২ অক্টোবর শনিবার যথারীতি ভাবে দশমী পূজা অনুষ্ঠিত হবে।