বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
মর্ত্য লোকের সকল ভক্ত হৃদয়ের প্রতীক্ষার আক্ষেপ পূরণ করতে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ২ অক্টোবর বুধবার অমাবস্যা তিথির
ব্রহ্মমুহুর্তে পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে দেবীপক্ষ শুরু হয়েছে। আর তখন চন্ডী পাঠ মহালয়ের মাধ্যমে সকল ভক্ত মন্ডলী মহামায়া দেবী দুর্গাকে মর্তোলোকে আহবান করেছেন।
এবং মহালয়ার মাত্র ৭ দিন পরে মা দেবী দুর্গা পরম করুনাময়ী ভক্তরক্ষাকারিণী অকালবোধিনী অসুর নাশিনী মহাপ্রলংকরী দুর্যোগ পরিত্রাণী মা ভক্তদের আহবানে পরমেশ্বর মহাদেবের কৈলাস ছেড়ে শরতের শুভক্ষণে শিউলি শিশিরসিক্ত দূর্বাঘাসে দুর্গতিনাশিনীর শ্রীচরণ রেখে মর্তলোকে আসছেন।
তাই মর্তের ভক্তরা ব্যাকুল হৃদয়ে অপেক্ষমান চাতকের মত অপেক্ষিত মায়ের অপেক্ষায় রয়েছে প্রতিটি মন্দিরে মাকে স্থাপন করবে ঢাক ঢোল কাসর বাজিয়ে উলুধ্বনি দিয়ে নানান পুষ্পরাসির গালিচা অর্পণ করে।
সাথে ধুনোচির ধুপের মৌ মৌ ঘ্রাণে মানব কূলের সকল অপশক্তি ভূত-প্রেত পিশাচ আত্মা দূরীভূত হবে মায়ের আগমনে।
তাই মহাসমারহে সজ্জিত হচ্ছে নগরীর ১৩৫টি দুর্গা পূজা মন্ডপ ব্যস্ত সময় পার করছে মৃৎশিল্পীরা।
তাদের নিপুন হাতের তুলির আঁচড়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে ফুটিয়ে তুলছে মাকে পূর্ণরূপে রূপদান করতে ।
সাথে প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে শুরু হয়েছে মায়ের আগমনী বার্তানিয়ে শারদীয় দুর্গা উৎসবের আমেজ।
তাই আগামী ৯ অক্টোবর মঙ্গলবার মহাষষ্ঠীপূজা।
পরে ওইদিন সন্ধ্যায় দেবীর বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যো দিয়ে শুরু হবে সনাতন ধর্ম অবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শ্রীশ্রী দুর্গাপূজা।
পাঁচ দিনব্যাপী পুজো অর্চনা শেষে ১৪ অক্টোবর রবিবার মহা দশমীর পূজা শেষে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে এই উৎসব ।
এ অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে নগরীর প্রতিটা পুজো মন্ডপে করা হচ্ছে অত্যাধুনিক আলোক সজ্জা এবং তৈরি হচ্ছে বৈচিত্র্যময় ঐতিহাসিক বিভিন্ন ডিজাইন এর আদলে মন্দির। পঞ্জিকা মতে মা এবার মর্তে আসছেন দোলায় এবং গমন করবেন ঘোটকে।
এবারের দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের ২৫ টি নির্দেশনা প্রদান করা হয় প্রতিটি মন্দির কমিটির দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের নিকট।
মহানগরীর ১৩৫টি পূজা মন্ডপ ছাড়া ও খুলনা জেলার নয়টি উপজেলা ও দুইটি পৌরসভায় ৯০৯ টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে ইতোম পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ পুলিশ কমিশনার জেলা প্রশাসক এর কাছে পূজা মন্ডপের তালিকা প্রদান করেছেন।
এ সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে হিন্দু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষদের বছরের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার ৫ দিনব্যাপী সহযোগিতায় প্রশাসনিক তৎপরতা এবং কঠোর নজরদারি রেখে কোনো অপশক্তি ও দুষ্কৃতকারীরা কোন প্রকারের নাশকতা না করতে পারে সেদিকে নজর রাখার আশ্বাস দিয়েছেন নব নিয়োজিত কেএমপি কমিশনার । নগরীর যে সকল উল্লেখযোগ্য মন্দিরগুলোতে মহাসামরহের সাথে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে তার মধ্যে রয়েছে আর্য্য ধর্মসভা, ওমানন্দ শিব মন্দির, কয়লাঘাট, রূপসা মহাশ্মশান কালী মন্দির,টুটপাড়া গাছতলা, বাগমারা, শিববাড়ি, ছোট বয়রা, পৈপাড়া, তালতলা, নগরীর অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শীতলা বাড়ি মাতা ঠাকুরানি মন্দির, দোলখোলা, সাহেবের কবর খানা, ঐতিহ্যবাহী ডেল্টা ঘাট, সোনাপট্টি, ভাঙ্গন, কয়লাঘাট কালীবাড়ি, দৌলতপুর, পাবলা, সেনাহাটি সহ প্রতিটি মন্দিরে থাকবে সিসি ক্যামেরায় আওতাভুক্ত দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে থাকবে প্রশাসনিক কঠোর নজরদারি ।
সাথে প্রতিটি পূজা মন্ডপের কমিটি কর্তৃক ভলেন্টিয়ারদেরও সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে।