জিয়াউল হক দূর্গাপুর উপজেলা প্রতিনিধি, নেএকোনা।
নেত্রকোনার মদনে ধর্ষণে ১২ বছর বয়সী এক মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে একটি চক্র শালিসের আয়োজন করেছে।
শালিস থেকে ভুক্তভোগী মেয়েটিকে তুলে নিয়ে গেছে অভিযুক্ত মাহিন ও তার স্বজনরা। এ নিয়ে এলাকায় চলছে নানান আলোচনা সমালোচনা।
উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের জাওলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত মাহিন মিয়া(১৬), জাওলা গ্রামের আরজু মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে নবম শ্রেনির ছাত্র। এ খবর লিখা পর্যন্ত ভুক্তভোগী মেয়েটির কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগী স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মেয়েটির বাবা গত দুই বছর আগে বিদুৎপৃষ্ট হয়ে মারা যায়। জীবিকার তাগিদে মেয়েটির মা চট্টগ্রামে পোশাক শ্রমিকের কাজ করে। মেয়েটি গ্রামের বাড়িতে বৃদ্ধ দাদির সাথে বসবাস করছে। এদিকে পাশের বাড়ির মাহিন মিয়া মেয়েটিকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক বার ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে নানান সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে শনিবার গ্রামে শালিসের আয়োজন করা হয়। দুই পরিবারের লোকজনের সম্মতিতে ভুক্তভোগী মেয়েটির সাথে অভিযুক্ত মাহিনের বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। শালিসের পরপরই অভিযুক্ত মাহিন তার লোকজন নিয়ে মেয়েটিকে ঘর থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। এর পর থেকে অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীর সন্ধান মিলছে না। বর্তমানে মেয়েটির পরিবার হতাশায় পড়েছেন।
মেয়েটির দাদি জানান, ‘মাহিন প্রায় সময়েই আমাদের ঘরে যাওয়া-আসা করতো। পরে জানতে পারি আমার নাতি অন্তঃসত্ত্বা মাহিন তার সাথে জোর করে এসব করছে বলে আমাদের জানায়। বিষয়টি মাহিনের পরিবারকে জানালে তারা বিয়ে করাবে বলে জানায়। শুক্রবার রাতে বাড়িতে দরবার (শালিস) করার পর আমার নাতিকে মাহিন কোথায় নিয়ে গেছে। এখন শুনতাছি মাহিন আমার নাতির পেটের বাচ্চাটা নষ্ট করবে। কিন্তু বিয়ে করবে না।’
তিনি আরো জানান, ‘আমরা খুবই গরীব মানুষ। থানায় কিভাবে অভিযোগ করবো তাও বুঝতেছি না। আমি এই ঘটনার সঠিক বিচার চাই।’
অভিযুক্ত মাহিনের বাবা আরজু মিয়া জানান, ‘আমরা দুই পরিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তাদের বিয়ে দিব। কিন্তু ছেলে মেয়ে দুই জনেই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। আমরা খোঁজাখুজি করছি।’
সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন রুবেল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা গ্রামে বৈঠক করেছি। পরে শুনেছি মেয়েটিকে মাহিন জোড়পূর্বক তুলে নিয়ে গেছে। বৈঠকে ছেলের পরিবার খুবই খারাপ আচরণ করেছে। এ ঘটনার বিচার হওয়া দরকার।’
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, ‘এ ঘটনায় কোন লিখিত অভিযোগ থানায় আসেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানোগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।