টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল বাজারের আলীম কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত ডাচ-বাংলা ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা তালাবদ্ধ করে গ্রাহকের প্রায় ২০ কোটি টাকা নিয়ে উদ্যোক্তা হানিফ সরকার উধাও হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি টাঙ্গাইল পৌরসভার ১০ নং ওয়ার্ড কাজিপুর গ্রামের মৃত হযরত মিয়ার ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল বাজার আলীম কমপ্লেক্সে অবস্থিত ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের কার্যালয় তালাবদ্ধ দেখা গেছে। সেখানে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা ভিড় করেছেন। তারা অন্য শাখায় অনলাইনে নিজের হিসাব নম্বরে টাকা দেখতে না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সুনাম থাকায় বিশ্বস্ত হিসেবে অনেকেই এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটে টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করেছিলেন। তাদেরকে শাখা থেকে জমা রশিদও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ব্যাংকের উদ্যোক্তা প্রতারক মোঃ হানিফ সরকার হাজার হাজার গ্রাহকদের ওই টাকা মূল শাখায় জমা না দিয়ে অন্তত ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে শাখাটি তালাবদ্ধ করে প্রতারক হানিফ সরকার পালিয়ে যান। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রতারক উদ্যোক্তার নামে সাধারণ ডায়েরি ও আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
পাথরাইল ইউনিয়ন সহ অনেক গ্রামের শত শত গ্রাহক টাকা জমা রাখে উক্ত ব্যাংকে। হঠাৎ শুনি ব্যাংকের লোকেরা টাকা নিয়ে পালিয়েছে। এখানে এসে ব্যাংক তালাবদ্ধ দেখছি। ভূক্তভোগী এক নারী গ্রাহক বলেন স্বামী বিদেশে, কষ্ট করে পাঠানো জমানো টাকা রাখতাম। ব্যাংকে টাকা রাখা নিরাপদ মনে করে সব টাকা জমা করেছিলাম। আমি এখন কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। আমার টাকা ফেরত চাই।টাকা না পেলে আমার মৃত্যু ছাড়া কোন উপায় নাই।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও ভূক্তভোগীরা জানান ডিপোজিট ও চলতি হিসেব মিলে প্রায় ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছে প্রতারক হানিফ সরকার। এমন প্রতারণা মেনে নেওয়া যায় না। আমারসহ সব গ্রাহকের টাকা উদ্ধারে যথাযথ ব্যবস্থা চাই।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল ডাচ-বাংলা ব্যাংক শাখার ব্যবস্থাপক জানান, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের কার্যক্রম প্রধান অফিস নিয়ন্ত্রণ করে। ইতোমধ্যে প্রধান অফিস ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়েছে। আইনগত পদক্ষেপ চলমান আছে বলে শুনেছি।
প্রশাসন এ ঘটনার খবর পেয়ে ছায়া তদন্তে নেমেছে। প্রতারক চক্রটি বেশ বড় অংকের টাকা নিয়ে পালিয়েছে।
তদন্তকালে জানা যায়,প্রতারক হানিফ সরকার তার নিজ গ্রাম সহ আশে পাশের প্রায় সব গ্রামের লোকদের কাছ থেকে নতুন করে ৬০০/টাকা করে জমা নেন।যাহার বিপরীতে গ্রাহককে ২০০০/টাকা ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও তা ফেরত না দিয়ে আত্বসাত্ব করেছে।সে টাকার পরিমান কত হবে তা মাঠ পর্যায়ে তদন্ত চলছে।ভুক্তভোগীরা জানান তাদের আমানত টাকা ফেরত পেতে সংবাদ সম্মেলন সহ আইনের আশ্রয় নিবেন।প্রশাসনের দৃষ্টিআকর্ষন করে বলেন,হাজার হাজার গ্রাহকের টাকা নিয়ে উধাও হওয়া প্রতারক হানিফ সরকারকে আইনের আওতায় এনে গ্রেফতার করে গ্রাহকের সমস্ত টাকা ফেরতের দাবী জানান।