বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানাধীন গুটুদিয়া ১৩ নং ইউনিয়নের নবনির্মিত জেলখানার কোলঘেঁষে বয়ে চলা প্রাচীন আমলের খাল দখল করে গিলে খাওয়ার অভিযোগ খুলনার কতিপয় প্রভাবশালী আবাসন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে।
এ সকল আবাসন ব্যবসায়ীরা সরকারি খাল দখল সহ অসংখ্য মানুষদের তিন পুরুষের বসতভিটা জবরদখলও সুকৌশলে গিলে খাওয়ার অভিযোগ উঠলেও এদের দাপটে মুখে কুলুপ এঁটেছে সরকারী ঊর্ধ্বতন কর্তারা।
এমন অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে খুলনার আবাসন ব্যবসায়ী বিসমিল্লাহ এগ্রো ফার্ম এন্ড ফিসারিজ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
আর এই অভিযোগ সত্যতার প্রমাণের লক্ষ্যে সরজমিনে অভিযান চালিয়ে এলাকার মানুষের তথ্য মোতাবেক বিসমিল্লাহ গ্রুপের বিরুদ্ধে উদঘটন হয়েছে অজানা অনেক কাহিনী।
উল্লেখ্য খুলনা নবনির্মিত জেলখানার কোলঘেসে বয়ে চলা বহুদিনের পুরাতন দীর্ঘ খালটির আশপাশ দিয়ে গড়ে উঠেছে অসংখ্য আবাসন প্রকল্প ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে বহু পুরাতন খালটি দিয়ে পানি নিষ্কাশন এর ব্যবস্থা।
এবং বেদখল হয়েগেছেখাল আর এই খালটি দখলদারদের হাত থেকে পুনরুদ্ধারের প্রশাসনের উদাসীনতায় নাই কোনো পদক্ষেপ।
উল্লেখ্য ১৩ নং গুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের অভিযোগ বিসমিল্লাহ প্রপার্টিজ এর লোকজন স্থানীয় মানুষদের হুমকি ধামকি দিয়ে খালটির প্রায় দেড় থেকে দুই একর জমি দখল করে গড়ে তুলেছে প্লট বিক্রয়ের সুবিধার্থে রাস্তা।
ফলে ইউনিয়নটিতে বর্ষা মৌসুমে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের বাধা হওয়ার কারণে জনসাধারণের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে।
এ বিষয়ে ১৩ নং গুটুদিয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইজ্জত আলী মোড়ল এলাকার ভুক্তভোগীদের হয়ে বলেন নামধারী এই প্রোপার্টিজ এর মালিক সরকারি খাল দখল করে রাস্তা রাস্তা বানিয়ে বৃষ্টির মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে কৃষকদের ফসলের ক্ষতির পাশাপাশি ঘের ব্যবসায়ীদের ও মৎস্য চাষের বিঘ্ন ঘটিয়ে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতি করছে। তাছাড়া তিনি উপজেলা থেকে প্রকল্প দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন কাবিখা প্রকল্পের কাজও তারা তাদের ক্ষমতার দাপটে বন্ধ করে দিয়েছে।
এদিকে ১৩ নং গুটুদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ তুহিন ইসলাম ও উল্লেখিত আবাসন প্রকল্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন এলাকার যতগুলো প্লট ব্যবসায়ীরা আছে তারা ইউনিয়নের প্রতিটি খাল দখল করে রাস্তা তৈরি করে সুবিধা মতন প্লট ব্যবসা করছে।
তাদের অর্থের অভাব নাই তারা খাল দখল না করে পার্শ্ববর্তী অনেক জমি আছে সে সকল জমি ক্রয় করে রাস্তা তৈরি করলে এলাকার মানুষের ক্ষতি হতো না।
এবং বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ফসলের মাঠ তলিয়ে কৃষকদের ক্ষতি হতো না।
তাছাড়া ইউনিয়নের ৪০ দিনের কাবিখা কর্মসূচির অংশ হিসেবে দিনমজুররা ইউনিয়নের খাল উদ্ধার করতে গেলে তাদের গেট আটকে কাজ করতে বাধা সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ করেছে শ্রমিকরা।
এ সময় শ্রমিকরা আরো বলেন প্রকল্পের দুই গেট বন্ধ রাখার কারণে আমরা কাজ করতে পারি নাই তাই আমরা ফিরে যাচ্ছি।
এদিকে বিষয়টি উভয় পক্ষের সাথে আলাপের মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দিয়ে খুলনা ডুমুরিয়া নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান বলেন বিষয়টি আমি আমলে নিয়েছি এবং যথাসম্ভব আইনের মধ্য দিয়ে এই জটিলতার নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হবে যাতে করে কারো কোন ক্ষতি না হয় সেদিকে নজর রেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে তিনি এড়িয়ে যান।
তবে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান এর ব্যাপারে বিসমিল্লাহ প্রপার্টিজ গ্রুপের কর্তৃপক্ষের সাথে তাদের মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তানারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি ফলে তাদের কোন মতামত জানা যায়নি।
তবে এ বিষয়ে খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসীর আরেফিন স্পষ্ট বলেছেন সরকারী যে কোনো জলাশয় বা খাল দখল করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আমি শক্তভাবে বলতে চাই সরকারি জলাশয় বা খাল কোনো ভূমি দস্যু এসে দখল করুক তার প্রশ্রয়ে কোনো ভাবে দেওয়া হবে না আর এটার ব্যাপারে অতি দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে যে কয়টি খাল বেদখল হয়েছে তা পুনরুদ্ধার করার কথা আশ্বাস দিয়েছেন ১৩ নং গুটুদিয়া ইউনিয়ন বাসীদের।