বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
খুলনা সরকারী হাসপাতালগুলোতে নার্স ও দালাল সিন্ডিকেট মিলে চিকিৎসার নামে গড়ে তুলেছে যতসব দুর্নীতির আখড়া।
আর এসব সঙ্ঘবদ্ধ দালাল চক্রের খপ্পরে প্রতারিত হচ্ছে রোগীর স্বজনরা।
এক কথায় এখানে চিকিৎসা নিতে এসে সুবিধার থেকে অসুবিধাই অনেক বেশি। নার্সদের দুর্ব্যবহার ডাক্তারদের বাহাদুরি সবমিলে তেলেসমাতি চলছে খুলনা ২৫০ শয্যা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
তবে দীর্ঘদিন যাবৎ এই হাসপাতাল টি নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখালেখি হলে তার সূত্র ধরে প্রশাসনিক কিছু তৎপরতা সাথে অভিযান চালিয়ে দালাল চক্রের কিছু সদস্যদের আটক করলেও কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না এদের অসহায় রোগীদের ঠকিয়ে অসৎ পথে অর্থ উপার্জনের দৌরাত্ম্য।
রাত পোহালে দেখা যায় নার্স এবং ইন্টার্নি ডাক্তারদের সাথে সম্পৃক্ততায় অপ্রয়োজনীয় যতসব রোগ নির্ণয় পরীক্ষার তালিকা।
আর এ তালিকায় ভুক্তভোগী অসহায় মানুষদের জীবন বাঁচানোর তাগিদে অনেক কিছু না বুঝেই নার্সদের দাপটে রোগীর মল-মূত্র রক্ত প্রস্রাব এমনকি বড় বড় পরীক্ষার জন্য বহিরাগত বিভিন্ন ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে রোগীদের।
আর এ সকল ক্ষেত্রে অসংখ্য রোগীদের অভিযোগসূত্রে জানা গেছে নার্সরা এবং দালাল চক্র সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে বহিরাগত শহরের অনেক নামি বেনামী ল্যাব ডায়গনস্টিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগসূত্র রেখে তাদেরে পাঠানো প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত কামিয়ে নিচ্ছে অবৈধ পথে মোটা অংকের টাকা।
আর এ সকল রোগ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা নিরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করতে প্রতিনিয়ত হাজির হয় বহিরাগত বিভিন্ন ডায়াগনস্টিকের কর্মীরা।
আর এরা বহিরাগত হওয়া সত্ত্বেও এদের কাছে রোগ নির্ণয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে না দিয়ে ও কোন উপায় নাই তার মূল কারণ হচ্ছে হাসপাতালের নার্সরা বলে আমাদের হাসপাতালের ল্যাবে ভালো মেশিন নাই তাই আপনারা বাহিরের ডায়াগনস্টিক থেকে টেস্ট না করলে আপনাদের সঠিক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে না।
এক্ষেত্রে রোগীরা বাধ্য হয়ে নার্সদের কথামতো বাহির থেকে সকল পরীক্ষা করাতে বাধ্য হচ্ছে।
পাশাপাশি বহিরাগত ওষুধের দোকানদারদের বিরুদ্ধে রয়েছে নানান অভিযোগ।
আর এ সকল অভিযোগ করেছে খুলনার পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা অসংখ্য রোগীর স্বজনেরা।
তারাও অভিযোগ করে বলেছে আমরা রোগীদের নিয়ে নিতান্তই সমস্যায় না পড়লে এসমস্ত জায়গাতে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য আসতাম না কারণ এখানে দালালদের দৌরাত্ব অনেক বেশি আর এ দালালদের সাথে এখানকার নার্সদের রয়েছে নিবিড় সুসম্পর্ক আর এই সম্পর্কের কারণে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হতে হচ্ছে দায় ঠ্যাকা নিরুপায় অসহায় চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ মানুষেরা। কারণ একটি দুই টাকা দামের ট্যাবলেট থেকে শুরু করে দামি ইনজেকশন ছাড়া ও রোগীর ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় অনেক ওষুধ দিয়ে সুবিধাভুক্ত ফার্মেসীর নাম উল্লেখ করে দিয়ে বলে সেখান থেকে এ ওষুধগুলো আনতে হবে আর তাদের নামধারী দোকান থেকে না আনলে নার্সরা খিপ্ত হয়ে ফেরৎ পাঠিয়ে বলে ওই দোকান থেকেই ওষুধ আনেন।
আবার অনেক রোগীর সাথে থাকা স্বজনরা অভিযোগ করে বলেছেন ডাক্তার যে পরিমাণে ওষুধ লেখে তার বাইরেও নার্সরা ইচ্ছামতন ওষুধ লিখে রোগীদের দিয়ে আনিয়ে সেগুলো রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার না করে সুকৌশলে পিছন দরজা থেকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগের সত্যতা রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে উদঘটন হলে এ বিষয়টি ডিউটিরত এক নার্স এর কাছে জানতে চাইলে সে বিষয়টি থুরায় কেয়ার না করে দাপটের সাথে উড়িয়ে দিয়ে বলে এখানে ওসব হয় না আপনারা যা শুনেছেন সব বানোয়াট মিথ্যা ভিত্তিহীন কথা অথচ কিছুক্ষণ পরেই এমন একটি ঘটনা ঘটেছে তার পাশের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে।
তবে এ বিষয়ে হাসপাতালটির পরিচালকের সাথে তার মুঠোফোনে উল্লেখিত ঘটনার বিষয়গুলি জানতে চাইলে সে বিষয়টি আচ করতে পেরে কৌশলগতভাবে মোবাইলের সংযোগটি কেটে দেয় ফলে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সমাধানের কোনো সুরাহ জানা যায়নি।
এদিকে বেশ কিছু ডিউটি রত ডাক্তারদের বিরুদ্ধে রোগীদের সাথে ক্ষিপ্ত ব্যবহারের কথা অনেকেই অভিযোগ করে বলেছেন এখানকার অল্প বয়সী ডাক্তারদের ব্যবহার তেমন উল্লেখযোগ্য ভালো না তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে অনেক ধমকি শুনতে হয়।
এক্ষেত্রে সকল বিষয় বিবেচনা করে সাধারণ মানুষদের অভিযোগ একটি সরকারি হাসপাতালে এসে সাধারণ রোগীরা যদি সুচিকিৎসা না পেয়ে উপরন্ত দালাল ও নার্সদের সিন্ডিকেট খপ্পরে চিকিৎসার নামে প্রতারিত হয়ে সর্বস্ব খুয়াতে হয় তাহলে আমরা সাধারণ মানুষেরা কোথায় গিয়ে সুচিকিৎসা পাবো।
এবং যাতে করে অচিরেই এ ধরনের সিন্ডিকেট দালাল চক্রের খপ্পর থেকে সাধারণ মানুষরা মুক্তি পেয়ে সুন্দর পরিবেশের চিকিৎসা পায় সেক্ষেত্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সহ ঊর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জোর তাগিদ করছে সাধারণ মানুষেরা।