মোঃ রিপন রেজা স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জঃ
নারায়ণগঞ্জ শহরের ডন চেম্বার এলাকার মেডিস্টার জেনারেল হাসপাতাল এন্ড রেনেসাল্যাবে ভুল চিকিৎসায় এক নারীর মৃত্যু ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।মঙ্গলবার রাত প্রায় আনুমানিক ১১ টার দিকে ডন চেম্বার এলাকায় অবস্থিত ওই হাসপাতালে মরিয়ম আক্তার(৪৮) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়।মরিয়ম জামালপুরের আমির বেপারীর মেয়ে।মরিয়ম ফতুল্লা জেলা পরিষদ কার্যালয়ের পার্শ্ববর্তী সুগন্ধা মসজিদ এলাকায় ছেলের সঙ্গে বসবাস করতেন।মৃত্যুর ঘটনার খবর পেয়ে মেডিস্টার হসপিটালে দ্রুত ছুটে যান সদর থানার পুলিশ।মধ্যরাত থেকে বেসরকারি ওই হসপিটালে কর্তৃপক্ষ,পুলিশ ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে তর্ক বিতর্ক চলতে থাকে।পরবর্তীতে ভোররাতে মরিয়মের মৃতদেহ নিয়ে চলে যায় মরিয়মের স্বজনরা।রোগীর স্বজনরা জানান কিছুদিন পূর্বে মরিয়ম নামের নারীর পায়ে ইঁদুর কামড় দিলে,মরিয়ম অসুস্থ হয়ে পড়ে।পরবর্তীতে সংক্রমণ থেকে তার পায়ে ঘা হয়ে গেলে,নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট খানপুর হাসপাতালের আবাসিক সার্জন মাহমুদুল হাসান মিঠুর পরামর্শ নেন।মঙ্গলবার রাতে মেডিস্টার হাসপাতালে মরিয়ম নামের ওই নারীর পায়ে অপারেশন(অস্ত্রোপাচার)করা হয়।অপারেশন শেষে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক জানিয়ে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে এম্বুলেন্সে তুলে রাখেন।তড়িগড়ি করে রোগীর স্বজনরা মরিয়মকে হসপিটাল থেকে এম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে,কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বজনদের অভিযোগ-অপারেশনের পর চিকিৎসক না বুঝেই মরিয়মকে ইনজেকশন দেয়।ইনজেকশন দেওয়ার পরেই মরিয়মের অবস্থা গুরুতর হয়ে ওঠে।ভুল চিকিৎসার কারণেই মরিয়মের মৃত্যু ঘটে।পরে ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরিয়মের লাশ এম্বুলেন্সে তুলে রাখে মেডিস্টার হসপিটালের লোকজন।ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মেডিস্টার হসপিটালের ম্যানেজার রাফেজুল ইসলাম জানায়-৯ই অক্টোবর রাতে পাঁ কেটে যাওয়ায় চিকিৎসা নিতে আসে মরিয়ম নামের ওই নারী।পরে ওই নারীকে ছোট একটি সার্জারি করে কেবিনে রাখা হয়।তাকে কোন ভুল চিকিৎসা করা হয়নি বলে দাবি তার।তিনি আরো জানায়-মরিয়মের পূর্বে থেকেই শরীরে বিভিন্ন কঠিন ও জটিল রোগে আক্রান্ত ছিল।মঙ্গলবার রাত ১০ টার পরে হঠাৎ মরিয়মের জিব্বা বারবার বের হয়ে যাচ্ছিল এবং মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল।এমতা অবস্থায় হসপিটালের কর্তব্যরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাকে অক্সিজেন দিয়ে এম্বুলেন্সে করে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।হসপিটাল থেকে নিয়ে যাওয়ার পর সম্ভবত রাস্তায় তার মৃত্যু ঘটে।হসপিটাল থেকে নিয়ে যাওয়ার ১ ঘন্টা পরে আবারো হসপিটালে মরিয়মের পরিবারের সদস্যগণ ফিরে আসে মরিয়মকে নিয়ে।তিনি বলেন মরিয়মের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ময়না তদন্ত করালেই জানা যাবে।নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)আনিচুর রহমান মোল্লা বলেন-মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আমাদের পুলিশের পেট্রোলিং টীম টহলরত অবস্থায় হসপিটালের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় লোকজনের চিৎকার চেঁচামেচি দেখে হসপিটালে যায় এবং মৃতের ঘটনা জানেন।টহল পুলিশ আইন-শৃঙ্খলার অবনতি যাতে না ঘটে সেজন্য সকলকে লক্ষ্য রাখতে বলেন।তিনি আরো বলেন-মৃত্যুর ঘটনার ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।যদি কেউ অভিযোগ দেয় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।সর্বশেষ মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসক পলাতক রয়েছে বলে জানা যায়।