বিপ্লব সাহা খুলনা ব্যুরো:
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে নিষিদ্ধ পলিথিনের বিরুদ্ধে আমরা খুলনাবাসী কঠোর হাতে দমন করতে শপথ করলাম। এসময় উপস্থিত বক্তারা বলেন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে ভয়াবহ ক্ষতিকারক পলিথিন ক্রমান্বয়ে ক্ষতি করে যাচ্ছে পরিবেশের,
তবে পরিবেশ সুরক্ষার লক্ষ্যে পলিথিন নিষিদ্ধের ব্যাপারে বারবার পদক্ষেপ নিলেও বাস্তবিক পক্ষে কোন সুফল হচ্ছে না।
ব্যবসায়ীরা ঠিকই কখনো গোপনে কখনো প্রকাশ্যে অবৈধ নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবসা অহরহ চালিয়ে গেলেও সরকারের বিভিন্ন প্রশাসনিক সংস্থার পক্ষ থেকে সুষ্ঠু কোন অভিযান না চালিয়ে উপরন্তু সুবিধা দিয়েছে ব্যবসায়ীদের,
ফলে ক্ষতিকারক পলিথিন ক্রমান্বয়ে পরিবেশ দূষণের অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আজ তারই প্রতিবাদে গণতান্ত্রিক অধিকার ,সুরক্ষা মঞ্চ খুলনা এর উদ্যোগে খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে সকাল ১১টায় পলিথিন বর্জনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। খুলনায় এ ধরনের অনুষ্ঠান এই প্রথম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির আহবায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ হোসেন বাচ্চু। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহবায়ক ও আয়কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. খান মনিরুজ্জামান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন খুবির প্রাক্তন প্রধান মেডিকেল অফিসার ডা. এ কে এম কামরুল ইসলাম। বক্তৃতা করেন নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিব কাজী মোতাহার রহমান বাবু, সদস্য এড. মোঃ মমিনুল ইসলাম, সরদার আবু তাহের। অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেন এড. মোঃ জোবায়ের শেখ।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে সভায় বলা হয়, সুন্দরবনের প্রধান তিনটি নদনদীতে ১৭ প্রজাতির মাছ ও তিন প্রজাতির সেলফিশে মাইক্রো প্লাস্টিক পাওয়া গেছে। এমনকি, বনে মাছের পেটে পলিথিনের টুকরা পাওয়া গেছে। পলিথিনের রাসায়নিক বিষক্রিয়ায় ভূপৃষ্ঠ ক্রমাগত উত্তপ্ত হচ্ছে, যা থেকে ভূমিকম্প ও বজ্রপাত হচ্ছে। দেশে প্রতিদিন ২৪ হাজার মেট্রিক টন পলিথিন বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। পলিথিন মাটিতে মিশে মাটির গুনাগুণ ও উর্বরতা শক্তি নষ্ট করছে। সৃষ্টি করছে জলাবদ্ধতা, কমিয়ে দিচ্ছে নদীর নাব্যতা। সভায় বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বিজ্ঞান সাময়িকী ওয়াটার, এয়ার সয়েল পলিউশনের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশে ইলিশের পেটে মাইক্রো প্লাস্টিকের কণা পাওয়া গেছে। যা থেকে ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে। সভায় উল্লেখ করা হয় ২০৬০ সালের প্লাস্টিকের ব্যবহার তিনগুণ হতে পারে। ২০৪০ সালে প্লাস্টিকের বর্জ্যের এর পরিমাণ মাটি ও পানিতে ৫০ শতাংশ বাড়বে। উল্লেখ্য, এ সংগঠনের সদস্যরা পলিথিন বর্জনের শপথ, প্রতিবেশী ও স্বজনদের পলিথিন ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন। উৎপাদন, বিক্রি ও বাজারজাতকরণ বন্ধ করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতি আহ্বান জানান। ১৯৯৫ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইন কার্যকর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তাহলেই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাসযোগ্য খুলনা নগরী পাবে।
অনুষ্ঠানে এ মাসেই পলিথিন বর্জনে শতাধিক আইনজীবী শপথ গ্রহণ করবেন বলে জেলা আইনজীবী সমিতির আহ্বায়ক প্রতিশ্রুতি দেন।