মিলন হোসেন, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি-
আগামী ৯ অক্টোবর শুরু হচ্ছে দূর্গাপূজা। সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় এ ধর্মীয় উৎসবকে ঘিরে বগুড়ায় মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। রঙ আর হাতের সুনিপুণ ছোঁয়ায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে প্রতিমা। দম ফেলানোর ফুরসত নেই এসব শিল্পীদের।
গত বুধবার ২ অক্টোবর শুভ মহালয়া চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে মর্ত্যলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। আগামী বুধবার মহাষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। রোববার ১৩ অক্টোবর দশমী তিথি প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাঁচ দিনব্যাপী এ শারদীয় দুর্গোৎসব। দোলায় অর্থাৎ পালকিতে চেপে দেবীদুর্গা মর্ত্যলোকে পদার্পণ করবেন। আবার গজে অর্থাৎ হাতিতে চড়ে কৈলাসে ফিরবেন।
অধিকাংশ পূজা মণ্ডপের প্রতিমা তৈরির মূল কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। চলছে সাজ-সজ্জা ও রঙয়ের কাজ। সীমিত পরিসরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হলেও বর্ণিল সাজে সাজানো হচ্ছে পূজামণ্ডপগুলো। এখন শুধু প্রতিমায় পরিপূর্ণ রূপ দিতে রং তুলির শেষ আঁচড় দেওয়া হচ্ছে।
বগুড়া শহরের উত্তর চেলোপাড়ার নব-বৃন্দাবন হরিবাসর মন্দিরে কাজ করতে আসা মৃৎশিল্পী কাজল প্রামাণিক জানান, তিনি ও তার সঙ্গীরা মিলে এ বছর ২০টি দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছেন। মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ আরও আগেই শেষ হয়েছে। বর্তমানে তারা রং-তুলির কাজ করছেন। বিভিন্ন রং দিয়ে তারা প্রতিমার সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলছেন। এতে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত তারা মহাব্যস্ত সময় পার করছেন। আগামী বুধবার মহাষষ্ঠীর আগেই তারা সব কাজ শেষ করবেন।
বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী জেলার ১২টি উপজেলায় ৬২৮টি মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে সদরে ১১৭টি, শিবগঞ্জে ৫৩টি, আদমদিঘীতে ৬৩টি, দুপচাঁচিয়ায় ৪০টি, কাহালুতে ২৭টি, নন্দীগ্রামে ৪৫টি, শাজাহানপুরে ৪৮টি, গাবতলীতে ৬৩টি, সোনাতলায় ৩৫টি, শেরপুরে ৮৬টি, ধুনটে ২৮টি ও সারিয়াকান্দিতে ২৩টি মন্ডপে দুর্গার্পজা অনুষ্ঠিত হবে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা জানান, দুর্গাপূজা সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং নির্বিঘ্নে উদযাপনের লক্ষ্যে চারধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিমা তৈরী থেকে বিসর্জন পর্যন্ত সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করবে জেলা পুলিশ। ঝুঁকিপূর্ণ মন্দিরের তালিকা করে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং দুর্গাপূজা চলাকালিন মাদক, ইভটিজিং, ছিনতাই, পকেটমার প্রতিরোধে পুলিশের বিশেষ টিম তৎপর থাকবে। যেহেতু দর্শনার্থীদের সমাগম বাড়বে এজন্য সড়কে যানজট নিরসনে ট্রাফিক ব্যবস্থাও জোরদার থাকবে। ইতিমধ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ ও আয়োজক দের সাথে সভা করা হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে কিছু দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।